দুনীির্ত দমন কমিশনের (দুদক) সঁাড়াশি অভিযানে এসএসসি পরীক্ষাথীের্দর কাছ থেকে অতিরিক্ত ফি হিসেবে আদায় করা প্রায় ১০ লাখ টাকা ফেরত দিয়েছে দুই স্কুল। এর একটি নরসিংদীর একদুয়ারিয়া উচ্চবিদ্যালয় এবং অন্যটি খুলনার নৌবাহিনীর বিএন স্কুল অ্যান্ড কলেজ।
জানা গেছে, এসএসসি পরীক্ষায় অতিরিক্ত ফি আদায়ের বিরুদ্ধে আগেই হুশিয়ারি জানিয়েছিল দুদক। পরে এ নিয়ে প্রথম অভিযোগ আসে রাজধানীর ধানমÐির একটি স্কুল থেকে। সেটাতে অভিযানও চালিয়েছিল কমিশন। এরপর দুদকের অভিযান ধারাবাহিকভাবে চলতে থাকে।
একই সঙ্গে দুদকের হটলাইনে (১০৬) আসতে থাকে হাজার হাজার কল। যাতে বেশির ভাগই এই শিক্ষা খাতের দুনীির্তর অভিযোগ। পরে দুদক ও শিক্ষা মন্ত্রণালয় এক হয়ে ঘোষণা দেয় কঠোর ব্যবস্থার। দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ এ ঘটনাকে ‘অগার্নাইজড ক্রাইম’ হিসেবে ঘোষণা দিয়ে শাস্তিমূলক ব্যবস্থার কথা বলেন। আর এখন শুরু হয়েছে ওইসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন।
৫ ডিসেম্বর এই অভিযোগের ভিত্তিতে নরসিংদী ও খুলনার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দুটিতে অভিযান চালায় দুদকের এনফোসের্মন্ট টিম। এই টিমের প্রধান সমন্বয়ক ও মহাপরিচালক (প্রশাসন) মোহাম্মদ মুনীর চৌধুরীর সাবির্ক তত্ত¡াবধানে পরিচালিত এই অভিযানে এই প্রথম দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে অবৈধভাবে নেয়া টাকা ফেরত নেয় দুদুক।
এ বিষয়ে দুদকের উপ-পরিচালক প্রণব কুমার ভট্টাচাযর্্য বলেন, নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলার একদুয়ারিয়া উচ্চবিদ্যালয়ে পরিচালিত অভিযানে দুদকের সহকারী পরিচালক মো. ফজলুল বারী ও উপ-সহকারী পরিচালক আতাউর রহমান সরকারের সমন্বয়ে গঠিত একটি দল এবং খুলনার বিএন স্কুল অ্যান্ড কলেজে পরিচালিত অভিযানে দুদকের খুলনা কাযার্লয়ের উপ-পরিচালক আবুল হোসেনের নেতৃত্বে আট সদস্যবিশিষ্ট একটি দল অংশ নেয়।
একদুয়ারিয়া উচ্চবিদ্যালয়ে অভিযানে বেরিয়ে আসে- ওই বিদ্যালয়ের ৭৫ শিক্ষাথীর্র কাছ থেকে ২০১৯ সালের এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের রেজিস্ট্রেশন ফরম পূরণের সময় নিধাির্রত ফি’র চেয়ে অতিরিক্ত ৮৩ হাজার ৪০০ টাকা নিয়ম-বহিভ‚র্তভাবে আদায় করে কতৃর্পক্ষ। পরে বৃহস্পতিবার বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক আবদুল কাদির মৃধা ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে ওই অবৈধ টাকা ফেরত দেবেন মমের্ দুদক সদর দপ্তরে এসে মহাপরিচালক (প্রশাসন) মোহাম্মদ মুনীর চৌধুরীর কাছে অঙ্গীকার করেন।
এ ছাড়া খুলনার বিএন স্কুল অ্যান্ড কলেজে অভিযান চালিয়ে পাওয়া যায়- তারা ২১৫ এসএসসি পরীক্ষাথীর্র কাছ থেকে রেজিস্ট্রেশন ফরম পূরণের সময় নিধাির্রত ফি দুই হাজার ২০ টাকাতো নিয়েছেই, এর সঙ্গে অতিরিক্ত নিয়েছে আরও আট হাজার ৪৫০ টাকা করে। তবে এটা নিয়েছে শুধু বিজ্ঞানবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষাথীের্দর কাছ থেকে। আর মানবিক এবং বাণিজ্য বিভাগের শিক্ষাথীের্দর কাছ থেকে অতিরিক্ত নেয় চার হাজার ৬০ টাকা করে নিধাির্রত ফি বাদে। পরে অবৈধভাবে অতিরিক্ত ৯ লাখ ১০ হাজার ৩৮০ টাকা নেয়ার কথা স্বীকারও করেন প্রতিষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শেখ নজরুল ইসলাম। যা বৃহস্পতিবার দুদকে ফেরত দেন তিনি।
এ বিষয়ে দুদকের মহাপরিচালক (প্রশাসন) মোহাম্মদ মুনীর চৌধুরী বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কোনোভাবেই বাণিজ্যিক উদ্দেশে পরিচালিত হতে পারে না। সরকার তথা শিক্ষা বোডর্ নিধাির্রত ফি’র অতিরিক্ত টাকা নেয়া অনৈতিক। এসব অপরাধ বন্ধে দুদকের এনফোসের্মন্ট অভিযান অব্যাহত থাকবে।