বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
একাদশ জাতীয় সংসদ নিবার্চন

জোটে পিষ্ট আওয়ামী লীগ নেতাদের স্বপ্ন

চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী-চান্দগঁাও আংশিক)
রাজু দে, বোয়ালখালী
  ১৫ নভেম্বর ২০১৮, ০০:০০

চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী-চান্দগঁাও আংশিক) আসনে আ’লীগের মনোনয়ন চান একাধিক প্রাথীর্। তবে তাদের এ চাওয়ায় অন্তরায় হয়ে দঁাড়িয়েছেন জোটের নেতারা। আওয়ামী লীগ নেতাদের সে স্বপ্ন জোটগত কারণে বিগত দুই নিবার্চনে পূরণ হয়নি। এবার কেন্দ্র থেকে ভিন্ন সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলে ধারণা করছেন দলের তৃণমূলের নেতাকমীর্রা।

আসন্ন জাতীয় সংসদ নিবার্চনে এ আসনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী ৬ জন। ইতোমধ্যে দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি, তার পুত্র মুজিবুর রহমান মুজিব, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমেদ, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আবদুল কাদের সুজন, নগর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কতৃর্পক্ষের চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম ও নগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক রেজাউল করিম চৌধুরী।

অন্যদিকে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের শরিক দল জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ একাংশ)-এর সাংসদ মঈন উদ্দিন খান বাদল ও বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পাটির্ (ন্যাপ)-এর চট্টগ্রাম মহানগর যুগ্ম আহবায়ক লায়ন বাপন দাশগুপ্ত এ আসনে ১৪ দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী। সাংসদ বাদল তৃতীয়বারের মতো নৌকা প্রতীকে নিবার্চনে অংশ নেয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করলেও ন্যাপের লায়ন বাপন কুঁড়েঘর প্রতীকে নিবার্চনে লড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।

বিগত ২০০৮ সালেও আওয়ামী লীগের একাধিক প্রাথীর্ এ আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন। জোটগত কারণে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) কাযর্করী সভাপতি মঈন উদ্দিন খান বাদলকে নৌকা প্রতীকের প্রাথীর্ করা হয়। আওয়ামী লীগের নেতা ও কমীর্রা ঐক্যবদ্ধ হয়ে নৌকার বিজয় সুনিশ্চিত করেন। তবে সেই ঐক্য বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। নিবার্চন-পরবতীর্ সময়ে তারা জড়িয়ে পড়েন অভ্যন্তরীণ কোন্দলে। ফাটল ধরে উপজেলা আওয়ামী লীগে। দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন ও সিনিয়র সহ-সভাপতি এস এম আবুল কালামকে ঘিরে বিভক্ত হয়ে পড়েন উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকমীর্রা। এর মধ্যে ২০১৪ সালের নিবার্চনে বিএনপি অংশ না নেয়ায় বিনাপ্রতিদ্ব›িদ্বতায় আবারও নিবাির্চত হন সাংসদ বাদল।

উপজেলা আওয়ামী লীগ পুনগর্ঠনের মধ্য দিয়ে ছিটকে পড়েন বেশ কয়েকজন প্রবীণ নেতাকমীর্। পরে তারা বাদলের ছায়া সঙ্গী হয়ে ওঠেন। তাদের দাবি পুনগির্ঠত কমিটিতে ত্যাগী নেতাকমীের্দর মূল্যায়ন করা হয়নি। তারা ওই কমিটিকে পকেট কমিটি আখ্যায়িত করে আলাদাভাবে গঠন করেন উপজেলা আওয়ামী লীগ কমিটি ও অঙ্গ সংগঠনসমূহ। এ কমিটির সভাপতি হন মুক্তিযোদ্ধা আহমদ হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক এস এম সেলিম। তবে তাদের সাংসদ বাদলের হয়ে বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের সভা-সমাবেশে অংশ গ্রহণ করতে দেখা গেছে। নিজেদের ১৪ দলের নেতা বলতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন তারা। এবারের নিবার্চনে দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আবদুল কাদের সুজনকে দলীয় প্রাথীর্ হিসেবে চাইছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান।

নবগঠিত উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকমীের্দর নিয়ে এ আসনে সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কমর্কাÐ ও দলীয় কমর্সূচি পালন করে আসছেন দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমদ। উপজেলা আওয়ামী লীগের এ কমিটি মোছলেম উদ্দিন অনুসারী হিসেবে পরিচিত। দলীয় কাযর্ক্রম পরিচালনার জন্য উপজেলা সদরে নিজস্ব অফিস নিয়েছেন। পৌরসভা, ইউনিয়ন, ওয়াডের্ কমিটি গঠন ও ছাত্রলীগ, যুব লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, শ্রমিক লীগ এবং মহিলা লীগ গঠনের মধ্য দিয়ে দলকে সুসংগঠিত করেছেন বলে জানিয়েছেন তারা। উপজেলা এ কমিটির সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন পরিচ্ছন্ন আওয়ামী লীগ নেতা নুরুল আমিন চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক এস এম জহিরুল আলম জাহাঙ্গীর। তারা বলেন, জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিদের্শ পালনে সচেষ্ট রয়েছে বোয়ালখালী উপজেলা আওয়ামী লীগ। তাদের অভিভাবক মুক্তিযোদ্ধা মোছলেম উদ্দিন আহমদের প্রেরণায় অনেক দূর এগিয়ে গেছে আওয়ামী লীগের রাজনীতি। নিবার্চনে যদি মোছলেম উদ্দিনকে দলীয় মনোয়ন দেয়া হয় তবে এ আসনে বিপুল ভোটে বিজয়ী করা সময়ের ব্যাপার। জননেত্রী যে উন্নয়ন করেছেন ও প্রতিটি নাগরিককে যে সুযোগসুবিধা দিচ্ছেন তারা নৌকার বিকল্প কল্পনাও করছেন না।

এ আসনে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের জাতীয় পাটির সম্মিলিত ঐক্যজোটের শরিক দল ইসলামী ফ্রন্টের মোমবাতি প্রতীক নিয়ে নিবার্চন করতে পারেন উত্তর জেলা সভাপতি নাঈমুল ইসলাম। এছাড়া কমিউনিস্ট পাটি (সিপিবি) মো. সেহাব উদ্দীন সাইফু কাস্তে প্রতীকে লড়বেন বলে জানা গেছে।

২০০৮ সালে নিবার্চনে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এম. মোরশেদ খান আইনি জটিলতার কারণে অংশ নিতে পারেননি। তারই শিষ্য নগর বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক এরশাদ উল্লাহ এ আসনে ধানের শীষ প্রতীকে অংশ নিয়েছিলেন। তিনি মহাজোটের প্রাথীর্ মঈন উদ্দীন খান বাদলের কাছে পরাজিত হন। এবারের নিবার্চনে এম মোরশেদ খান আবারও ধানের শীষ প্রতীকে নিবার্চন করতে চান।

তবে তিনি নিবার্চনে প্রাথীর্ না হলে মহানগর বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি আবু সুফিয়ান অথবা সাবেক যুগ্ম সম্পাদক এরশাদ উল্লাহ দলীয় মনোনয়ন নিতে পারেন বলে জানিয়েছেন উপজেলার বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হামিদুল হক মান্নান।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<22541 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1