রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প-কারখানার শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি দ্বিগুণ বাড়িয়ে ৮ হাজার ৩০০ টাকা করার প্রস্তাব অনুমোদন পেয়েছে সংসদে।
জাতীয় মজুরি ও উৎপাদনশীলতা কমিশনের সুপারিশের আলোকে মজুরি বাড়াতে বৃহস্পতিবার শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু ‘পণ্য উৎপাদনশীল রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্পপ্রতিষ্ঠান শ্রমিক (চাকরির শতার্বলী) বিল-২০১৮’ সংসদে পাসের প্রস্তাব করেন। বিলটি কণ্ঠভোটে পাস হয়।
গত জুলাই মাসে বিলটি মন্ত্রিসভার অনুমোদনের পর ১০ সেপ্টেম্বর তা সংসদে তোলা হয়েছিল। তখন বিলটি পরীক্ষা করে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য শ্রম ও কমর্সংস্থান মন্ত্রণালয় সম্পকির্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়েছিল।
নতুন বেতন কাঠামো অনুযায়ী, রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্পপ্রতিষ্ঠানের শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি হবে ৮ হাজার ৩০০ টাকা এবং সবোর্চ্চ মজুরি হবে ১১ হাজার ২০০ টাকা। অথার্ৎ উভয় ক্ষেত্রে মজুরি ১০০ শতাংশ বাড়ল।
আগে এই শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ৪ হাজার ১৫০ টাকা এবং সবোর্চ্চ মজুরি ৫ হাজার ৬০০ টাকা ছিল।
২০১৫ সালের ১ জুলাই থেকে নতুন মজুরি এবং ২০১৬ সালের ১ জুলাই থেকে ভাতা কাযর্কর ধরা হবে বলে বিলে উল্লেখ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প কপোের্রশন, বাংলাদেশ পাটকল কপোের্রশন, বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস কপোের্রশন, বাংলাদেশ ইস্পাত ও প্রকৌশল কপোের্রশন, বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কপোের্রশন এবং বাংলাদেশ বনশিল্প উন্নয়ন কপোের্রশনে কমর্রত শ্রমিকরা এ আইনের আওতায় পড়েন।
কয়েক বছরের মূল্যস্ফীতিতে জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়ায় সরকারি খাতের শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি বাড়িয়ে ১৬ হাজার টাকা করার দাবি জানিয়ে আসছিল শ্রমিক সংগঠনগুলো।
সম্প্রতি তৈরি পোশাক শিল্পের শ্রমিকদের নতুন মজুরি কাঠামোর ঘোষণা দেয় সরকার। তাতে এই শিল্পের শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ৫১ শতাংশ বেড়ে আট হাজার টাকা দঁাড়িয়েছে। তবে অধিকাংশ শ্রমিক নেতা তা প্রত্যাখ্যান করেছেন।
২০১৫ সালে সরকারি চাকুরেদের বেতন বাড়ানোর পর রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকদের মজুরি বাড়াতে সাবেক সচিব নজরুল ইসলাম খানকে চেয়ারম্যান করে ‘জাতীয় মজুরি ও উৎপাদনশীলতা কমিশন-২০১৫’ গঠন করা হয়।
এই কমিশন গত বছরের ৪ জুলাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে সুপারিশসহ প্রতিবেদন জমা দেয়।
কমিশন শ্রমিকদের মজুরি ন্যূনতম ৮ হাজার ৩০০ টাকা এবং সবোর্চ্চ ১১ হাজার ৬০০ টাকা নিধার্রণের সুপারিশ করেছিল।
সবের্শষ ‘জাতীয় মজুরি ও উৎপাদনশীলতা কমিশন ২০১০’-এ রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্পের শ্রমিকদের মজুরি প্রায় ৭০ শতাংশ বাড়িয়ে সবোর্চ্চ মজুরি ৫ হাজার
৬০০ টাকা এবং সবির্নম্ন ৪ হাজার ১৫০ টাকা নিধার্রণ করা হয়।
ক্রীড়া পরিষদ বিল পাস
পুরনো আইন বাতিল করে নতুন করে করতে ‘জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ বিল-২০১৮’ সংসদে পাস হয়েছে।
যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বীরেন শিকদার বিলটি পাসের প্রস্তাব করলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়।
বিলে ১৯৭৪ সালের ‘ন্যাশনাল স্পোটর্স কাউন্সিল অ্যাক্ট’ বাতিল করে বাংলায় নতুন আইন করার জন্য বিলটি পাস করা হয়েছে।
বিলে ৪৮টি ক্রীড়া সংক্রান্ত সংস্থাকে পরিষদের অধীনে রাখা হয়েছে।
বিলে বলা হয়েছে, সরকার গেজেট করে যে কোনো খেলাকে ক্রীড়া হিসেবে ঘোষণা করতে পারবে।
যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী পরিষদের চেয়ারম্যান হবেন। প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রী ভাইস-চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
বিলে বলা হয়েছে, অন্য কোনো আইন, চুক্তি বা আইনি দলিলে যাই থাকুক না কেন পরিষদ জাতীয় ক্রীড়া সংস্থা বা অন্য ক্রীড়া সংস্থার নিবার্হী কমিটি যদি যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন না করে তবে পরিষদ ওই কমিটি ভেঙে এডহক কমিটি দিতে পারবে।