বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
ভোটের হাওয়া মানিকগঞ্জ ২

বিএনপির ঘঁাটিতে ফের লড়তে চান মমতাজ

মো. মোবারক হোসেন সিঙ্গাইর
  ২৯ জুন ২০১৮, ০০:০০

মানিকগঞ্জ-২ আসন জেলার সিঙ্গাইর ও হরিরামপুর এবং সদর উপজেলার তিনটি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। এটি বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের ১৬৯ নম্বর আসন। একাদশ জাতীয় সংসদ নিবার্চনের এখনো প্রায় ছয় মাস বাকি। কিন্তু এ নিবার্চনকে ঘিরে ইতোমধ্যে সম্ভাব্য প্রাথীের্দর ব্যাপক তোড়জোড় শুরু হয়ে গেছে। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট, বিরোধী দল জাতীয় পাটির্ ও সংসদের বাইরে থাকা বিএনপি-জামায়াত জোট থেকে কারা মনোনয়ন পাবেন তা নিয়ে ভোটারদের মধ্যে চলছে ব্যাপক জল্পনা-কল্পনা।

নিবার্চনের সময় যতই ঘনিয়ে আসছে ততই রাজনৈতিক দলগুলোর অভ্যন্তরীণ বিরোধ প্রকাশ্যে রূপ নিচ্ছে। এই বিরোধ আগামী নিবার্চনে প্রাথীের্দর মনোনয়নপ্রাপ্তি ও জয়-পরাজয় নিধার্রণ করবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। এই আসনে বড় দুই দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপিতে রয়েছে দলীয় কোন্দল। অন্যদিকে বতর্মান সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পাটির্র অবস্থা একেবারে নড়বড়ে। এককভাবে পাল্লা দেয়ার মতো জনসমথর্ন না থাকলেও দলটির নেতাকমীর্রা দ্বিধাবিভক্ত। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটে থাকলে এই আসনটি দাবি করছে জাতীয় পাটির্। কিন্তু এবার কোনোভাবেই ছাড় দিতে নারাজ আওয়ামী লীগ। আসনটি এক সময় বিএনপির করছে ঘঁাটি হিসেবে পরিচিত ছিল। ২০০৮ সালের নিবার্চনে আসনটি হাত ছাড়া হয় দলটির। সরকারের কঠোর মনোভাব আর বিরোধীমতের লোকজনের প্রতি দমনপীড়নে এ আসনে আগের থেকে শক্তিশালী আওয়ামী লীগ। কিন্তু ভোটের হিসেব-নিকাশে বিএনপির থেকে এখনো পিছিয়ে রয়েছে ক্ষমতাসীন এই দলটি। সুষ্ঠু নিবার্চন হলে আসনটি হাত ছাড়া হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটের। রাজনৈতিক দলগুলোর স্থানীয় দায়িত্বশীল নেতাকমীর্, সমথর্ক ও একাধিক রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের সঙ্গে কথা বলে ভোটের মাঠের এমন চিত্র উঠে এসেছে।

২০০৮ সালে সংসদীয় আসন পুনবির্ন্যাসের ফলে সিঙ্গাইর উপজেলার একটি পৌরসভা, ১১টি ইউনিয়ন, হরিরামপুর উপজেলার ১৩টি ইউনিয়ন ও মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার তিনটি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত হয় মানিকগঞ্জ-২ আসন। এর আগে সিঙ্গাইর ও মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার তিনটি ইউনিয়ন নিয়ে আসনটি ছিল মানিকগঞ্জ-৪। ২০০৮ সালে সেনা সমথির্ত সরকার মানিকগঞ্জ চারটি আসন পুনবির্ন্যাস করে তিনটি আসন করে। তখন হরিরামপুর উপজেলাকে বতর্মান মানিকগঞ্জ-২ আসনের সঙ্গে যুক্ত করে দেয়া হয়। এর আগে হরিরামপুর ও শিবালয় উপজেলা নিয়ে ছিল সাবেক মানিকগঞ্জ-২ আসন।

১৯৯১ থেকে ২০০১ সাল পযর্ন্ত তিনটি নিবার্চনে বতর্মান মানিকগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন বিএনপির সাবেক শিল্পমন্ত্রী শামসুল ইসলাম খান নয়া মিয়া। ২০০৬ সালে নয়া মিয়া মারা যাওয়ার পর উপনিবার্চনে তার ছেলে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাঈনুল ইসলাম খান শান্ত এই আসনে এমপি নিবাির্চত হন। ২০০৮ সালের নিবার্চনে মনোনয়ন পান প্রয়াত সাবেক দপ্তরবিহীনমন্ত্রী হারুনার রশিদ খান মুন্নুর মেয়ে জেলা বিএনপির সভাপতি আফরোজা খানম রিতা। নিবার্চনে রিতা মহাজোটের শরিক জাতীয় পাটির্র প্রাথীর্ সৈয়দ আব্দুল মান্নানের কাছে পরাজিত হন। আব্দুল মান্নান মহাজোটের মনোনয়ন পাওয়ার আগপযর্ন্ত বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। বিএনপি থেকে মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে জাতীয় পাটিের্ত যোগ দিয়ে মহাজোটের ব্যানারে এমপি হন তিনি। ওই সংসদে সেলিব্রেটি হিসেবে পরিচিত কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগমকে সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য বানায় আওয়ামী লীগ। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির বিএনপি-জামায়াত জোট বজির্ত নিবার্চনে ভাগ্যক্রমে দলীয় মনোনয়ন পান কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগম। ওই নিবার্চনে দলীয় মনোনয়ন পেয়েও জাতীয় পাটির্র প্রাথীর্ সৈয়দ আব্দুল মান্নান রহস্যজনক কারণে নিবার্চনে অংশগ্রহণ না করায় বিনাভোটে এমপি হন কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগম।

আওয়ামী লীগ

কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগম ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নিবার্চনে সংসদ সদস্য হওয়ার পর স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতৃত্বের পরিবতর্ন আসতে শুরু করে। ২০১৫ সালে সিঙ্গাইর উপজেলা আওয়ামী লীগের কাউন্সিল হয়। কাউন্সিলে সংসদ সদস্যের মতো বিনা প্রতিদ্ব›িদ্বতায় সভাপতি হন মমতাজ বেগম। সংসদ সদস্য ও সভাপতি হওয়ার সুবাধে তিনি দলের মধ্যে একক কতৃর্ত্ব প্রতিষ্ঠা করেন। একক আধিপত্যের কারণে তার সময়ে করা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোতে ঠঁায় পায়নি দলের দুঃসময়ের অনেক ত্যাগী নেতারা। সুবিধাবাদীদের ভিড়ে তারা হয়ে পড়ে কোণঠাসা। একাধারে দুই মেয়াদে ক্ষমতায় থাকা দলটির অনেক নেতার বিরুদ্ধে জমি দখল ও মাদকব্যবসাসহ বিভিন্ন অনৈতিক কমর্কাÐের অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া টেন্ডার বাণিজ্য, হাট-ঘাট ইজারার টাকা ভাগাভাগি ও ক্ষমতাকেন্দ্রিক ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ে এমপি মমতাজ গ্রæপের ওপর ক্ষুব্ধ দলের বড় একটি অংশ। এই অংশের নেতাকমীর্রা কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাবেক যুব ও ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক দেওয়ান সফিউল আরেফিন টুটুলের সমথর্ক। ব্যক্তি বিরোধ ও গ্রæপিং রাজনীতির কারণে দলের অনেক নেতাকমীর্ মামলা-হামলা ও জেল জুলুমের শিকার হয়েছে। এমনকি ক্ষমতাসীনদের নেতিবাচক কমর্কাÐ নিয়ে সংবাদ পরিবেশন করায় মিথ্যা মামলা-হামলা থেকে রেহাই পায়নি স্থানীয় অনেক সাংবাদিকও। নাম প্রকাশ না করার শতের্ স্থানীয় আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন প্রবীণ নেতা আক্ষেপ করে বলেন, রাজনীতির অন্তরালে নেতাকমীর্রা এখন ব্যবসা-বাণিজ্য, লুটপাট ও ভাগ-বাটোয়ারা নিয়েই বেশি ব্যস্ত। দলের স্বাথর্ জলাঞ্জলী দিয়ে তারা জুলুম অত্যাচার করে টাকা কামাচ্ছেন। অপরদিকে দলটির এক সময়ের অনেক ত্যাগী নেতাদের দিন কাটছে অভাব অনাটনে। নেতাকমীের্দর অতিরিক্ত অথির্লপ্সার কারণে দলের ভাবমূতির্ চরমভাবে নষ্ট হচ্ছে। সুশাসন প্রতিষ্ঠা, সাবেক ত্যাগী নেতাদের মূল্যায়ন, দলীয় বিরোধ মীমাংসা ও অসাধু নেতাদের লাগাম এখনই টেনে ধরতে না পারলে আসন্ন নিবার্চনে স্বাধীনতার নেতৃত্বদানকারী এই দলটিকে চড়া মূল্য দিতে হবে বলে জানান দলের জন্য নিবেদিত প্রাণ এই প্রবীণ নেতারা।

একাদশ সংসদ নিবার্চনে বতর্মান সংসদ সদস্য কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগম ছাড়াও নৌকা প্রতীকের জন্য জোর তৎপরতা চালাচ্ছেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাবেক যুব ও ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক দেওয়ান সফিউল আরেফিন টুটুল, জেলা পরিষদের সদস্য ইঞ্জিনিয়ার সালাম চৌধূরী ও ধনাঢ্য ব্যবসায়ী ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম মনির হোসেন।

সংসদ সদস্য মমতাজ বেগম বলেন, তার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ এখন ঐক্যবদ্ধ ও শক্তিশালী। দলের অধিকাংশ নেতাকমীর্ তার সঙ্গে আছেন। ২০০৮ সালে জননেত্রী শেখ হাসিনা তাকে ভালোবেসে সংরক্ষিত মহিলা আসনে এমপি বানান। প্রথমবারের মতো এমপি হয়ে দলের ভেতর দীঘির্দনের পুঞ্জীভূত বিবেধ দূর করে সংগঠনকে সুসংগঠিত করেছেন। নিরলসভাবে কাজ করেছেন এলাকার উন্নয়নে। সেই কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নিবার্চনে তাকে দলীয় মনোনয়ন দেয়া হয়। সরাসরি ভোটে এমপি হয়ে এলাকায় প্রায় ২০০ কোটি টাকা ব্যয়ে হরিরামপুর উপজেলার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বঁাধ নিমার্ণ, আড়াইশ কোটি টাকা ব্যয়ে হেমায়েতপুর-সিঙ্গাইর মানিকগঞ্জ সড়ককে আঞ্চলিক মহাসড়কে উন্নীতকরণসহ কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে অসংখ্য ব্রিজ-কালভাটর্ ও পাকা-কাচা সড়ক নিমার্ণ করা হয়েছে। অধিকাংশ এলাকা বিদ্যুতায়ন করা হয়েছে। সিঙ্গাইর ডিগ্রি কলেজ, সিঙ্গাইর পাইলট উচ্চবিদ্যালয় সরকারীকরণ, অধিকাংশ স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসার নতুন ভবন নিমার্ণসহ শতশত কোটি টাকা উন্নয়নকাজ সম্পন্ন করা হয়েছে, যা গত ৪০ বছরেও হয়নি। তার বিশ্বাস এবারও জননেত্রী শেখ হাসিনা তাকে মনোনয়ন দিবেন। আবার সুযোগ পেলে অবশিষ্ট কাজ সম্পন্ন ও গ্যাস সংযোগ স্থাপন করে এলাকাটিকে শিল্পনগরী হিসেবে গড়ে তোলা হবে।

মমতাজ বেগমের প্রধান প্রতিদ্ব›িদ্ব সাবেক ফুটবল তারকা দেওয়ান সফিউল আরেফিন টুটুল। তিনি একাধারে তিনবার কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক ছিলেন। খেলোয়াড় জীবন থেকেই বঙ্গবন্ধু পরিবারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পকর্ তার। তিনি সব সময় আওয়ামী লীগের নিবেদিত প্রাণ। ২০০১ সালে নৌকা প্রতীকে নিবার্চনে অংশ নিয়ে পরাজিত হলেও কখনো মাঠ ছাড়েননি। এলাকায় তিনি সৎ ও দক্ষ সংগঠক হিসেবে পরিচিত। টাকা-পয়সা ছাড়া বহু বেকার যুবকদের চাকরি দিয়ে তাদের জীবিকা নিবাের্হর ব্যবস্থা করেছেন টুটুল। এ ছাড়া বিপদগ্রস্ত দলীয় নেতাকমীের্দর সব সময় আগলে রাখেন তিনি। শুধু তাই নয়, মাদকাসক্ত ও পথভ্রষ্ট অনেক নেতাকমীের্দর স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে অবদান রয়েছে তার। একাদশ সংসদ নিবার্চনে নিশ্চিত মনোনয়ন পাবেন এমন আশা নিয়ে ভোটের মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন সাবেক এই ফুটবল তারকা। আথির্ক সাহায্য-সহযোগিতা করছেন ধমীর্য়, সামাজিক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ অবহেলিত জনগোষ্ঠীকে।

দেওয়ান সফিউল আরেফিন টুটুল বলেন, ব্যক্তিগত টাকা ও শ্রম-ঘাম খরচ করে বিএনপির দুগের্ আওয়ামী লীগকে শক্ত ভিতের ওপর দঁাড় করিয়েছেন। ২০০৮ সালে মনোনয়ন পেয়েও জননেত্রী শেখ হাসিনার নিদেের্শ জাতীয় পাটিের্ক আসনটি ছেড়ে দিতে হয় তাকে। ওই নিবার্চনে তার হাতে গড়া আওয়ামী লীগের ওপর ভর করে এমপি হন জাতীয় পাটির্র প্রাথীর্ সৈয়দ আব্দুল মান্নান। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নিবার্চনে ভাগ্যক্রমে নৌকা প্রতীক নিয়ে এমপি হন কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগম। দলের দুঃসময়ে যারা জীবনবাজি রেখে আন্দোলন-সংগ্রাম করেছেন, দল ক্ষমতায় থাকলেও তাদের অধিকাংশ নেতাকমীর্ অথর্ সংকটে ভুগছেন। তারা দলীয় সুযোগ-সুবিধা পাওয়া তো দূরের কথা, উল্টো তারা হামলা-মামলা ও জেল-জুলুমের শিকার হচ্ছেন। তিনি জানান, এই অঞ্চলটি এখনো অবহেলিত। পশ্চাদপদ এই জনপথটির উন্নয়ন ও ঘুষ দুনীির্তমুক্ত সমাজ গড়ার জন্য এবার আটঘাট বেঁধে মাঠে নেমেছেন। জনগণের ব্যাপক সাড়াও পাচ্ছেন। আশা করছেন এবার পাবেন। মনোনয়ন পেলে বিজয়ী হবেন বলে জানান জাতীয় পুরুস্কারপ্রাপ্ত এই ক্রীড়াবিদ।

আরেক মনোনয়নপ্রত্যাশী জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও শিল্পপতি গোলাম মনির হোসেন। তিনি ছাত্রজীবন থেকেই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। ঢাকার সরকারি কবি নজরুল ইসলাম কলেজ ছাত্রলীগ শাখার যুগ্ম আহŸায়ক ছিলেন। বতর্মান গোলাম মনির মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার হাটিপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের দুইবারের চেয়ারম্যান ও শীষর্স্থানীয় শিল্পপ্রতিষ্ঠান মমো গ্রæপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। তিনি দীঘির্দন ধরে মসজিদ, মাদ্রাসা, স্কুল-কলেজসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানে আথির্ক সহযোগিতা ও আতর্মানবতার সেবা করে এলাকায় ব্যাপক পরিচিত হয়েছেন। মানবসেবার জন্য তিনি নিজ এলাকায় গড়ে তুলেছেন বেশ কয়েকটি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান।

গোলাম মনির হোসেন বলেন, দীঘির্দন ধরে মানবসেবার পাশাপাশি দলের জন্য কাজ করছেন। আসন্ন নিবার্চনে দলীয় মনোনয়ন চেয়ে নৌকার পক্ষে জনমত গঠনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তার আশা আসন্ন নিবার্চনে দল তাকেই মনোনয়ন দিবে।

এ ছাড়াও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চাচ্ছেন মানিকগঞ্জ জেলা পরিষদের সদস্য ইঞ্জিনিয়ার সালাম চৌধুরী। তিনি জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামÐলী ও ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের কাযির্নবার্হী কমিটির সদস্য এবং হরিরামপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি দায়িত্ব পালন করছেন। ব্যক্তি ভাবমূতির্র কারণে ইতোমধ্যে এলাকাবাসীর আপনজন হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠেছেন তিনি। এলাকার ধমীর্য় ও সামাজিক প্রতিষ্ঠানসহ দরিদ্র মানুষকে আথির্ক সাহায্য-সহযোগিতা করে ইতোমধ্যে জনসাধারণের কাছে প্রশংসিত হয়েছেন এই আওয়ামী লীগ নেতা।

ইঞ্জিনিয়ার সালাম চৌধুরী বলেন, দলীয় কমর্কাÐের পাশাপাশি সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে এলাকার উন্নয়নে ভূমিকা রাখছেন। বিশেষ করে তিন যুগেরও বেশি সময় ধরে বতর্মান সংসদীয় আসনের পশ্চিম এলাকা হিসেবে পরিচিত হরিরামপুর ও সদর উপজেলার তিনটি ইউনিয়ন থেকে কেউ সংসদে প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ পায়নি। এই দীঘর্ সময় এমপি হয়েছেন সিঙ্গাইর উপজেলা থেকে। এ কারণে এই এলাকাটি উন্নয়ন বৈষম্যের শিকার হয়েছে। সংসদীয় আসনের অন্যান্য জায়গায় ব্যাপক উন্নয়ন হলেও হরিরামপুর উপজেলা ও সদর উপজেলার তিনটি ইউনিয়ন এখনো অবহেলিত। এই এলাকার বাসিন্দা হিসেবে জনপথটির উন্নয়ন ও বিশাল জনগোষ্ঠীর ভাগ্য পরিবতের্নর প্রয়াসে আসন্ন নিবার্চনে অংশ নেয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করছেন। সংসদ সদস্য হতে পারলে সমবণ্টনের মাধ্যমে হরিরামপুরসহ দক্ষিণ মানিকগঞ্জকে উন্নয়নের মডেল হিসেবে গড়ে তোলার পাশাপাশি দুনীির্তমুক্ত সমাজ গঠনের দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।

বিএনপি: ১৯৯০ সাল থেকে ২০০৬ সাল পযর্ন্ত এই আসনটি বিএনপির ঘঁাটি হিসেবে পরিচিত ছিল। মাঠপযাের্য় ব্যাপক জনসমথর্ন থাকলেও বলিষ্ঠ নেতৃত্বের অভাব আর অভ্যন্তরীণ কোন্দলে দলটিতে হ-য-ব-র-ল অবস্থা বিরাজ করছে। তাছাড়া দলের জন্য যারা নিবেদিত প্রাণ তারা সরকারি দল ও প্রশাসনের দমনপীড়ন ও মিথ্যা মামলা-হামলায় বিপযর্স্ত। জনপ্রিয় এই দলটির নেতাকমীর্রা মূলত দুই গ্রæপে বিভক্ত। এ ছাড়া রয়েছে ব্যক্তিকেন্দ্রিক উপগ্রæপও। এক গ্রæপের নেতৃত্ব আছেন জেলা বিএনপির সভাপতি আফরোজা খানম রিতা আর অপর গ্রæপের নেতৃত্বে রয়েছে সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মাঈনুল ইসলাম খান শান্ত। সরকারি দল ও প্রশাসনের কঠোর বাধা নিষেধের কারণে জাতীয় দিবসগুলোতে শহীদ মিনারে ফুল দেয়া ছাড়া কেন্দ্র ঘোষিত কোনো কমর্সূচি পালন হয় না এখানে। কালেভদ্রে কোনো কমর্সূচি পালন হলেও ফটোসেশনের মধ্যেই তা সীমাবদ্ধ থাকে।

আসন্ন নিবার্চনে আসনটিতে মনোনয়নপ্রত্যাশীরা হলেন জেলা বিএনপির সভাপতি আফরোজা খানম রিতা, সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মাঈনুল ইসলাম খান শান্ত, সিঙ্গাইর উপজেলা চেয়ারম্যান আবিদুর রহমান খান রোমান, হরিরামপুর উপজেলা চেয়ারম্যান সাইফুল হুদা চৌদুরী শাতিল ও লন্ডন প্রবাসী ব্যারিস্টার আলিমুল হক লিটন। মনোনয়নের জন্য তারা কেন্দ্রে জোর তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে এবার আফরোজা খানম রিতা তার প্রয়াত পিতা সাবেক মন্ত্রী হারুন অর রশিদ খান মুন্নুর মানিকগঞ্জ সদর আসন থেকে নিবার্চন করতে বেশি আগ্রহী বলে জানিয়েছেন তার ঘনিষ্ঠজনরা। এক্ষেত্রে মনোনয়ন দৌড়ে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক এমপি ইঞ্জিনিয়ার মাঈনুল ইসলাম খান শান্ত অনেকটা এগিয়ে রয়েছেন। তার প্রয়াত পিতা সাবেক শিল্পমন্ত্রী শামসুল ইসলাম খান নয়া মিয়া এই আসনে ১৯৯১ থেকে ২০০১ সাল পযর্ন্ত তিনবার সংসদ সদস্য ছিলেন। তার সময় দক্ষিণ মানিকগঞ্জের উন্নয়নের দ্বার উন্মোচন হয়। নিমির্ত হয় এলাকাবাসীর দীঘির্দনের স্বপ্ন ধলেশ্বরী নদীর ওপর ভাষা শহিদ রফিক সেতু, সিরাজপুর সেতু, ইসলামনগর সেতু ও কালিগঙ্গা নদীর ওপর জামশা সেতু। এ ছাড়াও প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিদ্যুৎ সংযোগ স্থাপন ও নিমার্ণ করা হয় অসংখ্য ব্রিজ-কালভাটর্।

এ বিষয়ে কথা বলতে চেষ্টা করেও আফরোজা খানম রিতার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তার ব্যবহৃত মুঠোফোনে ফোন দিলেও তিনি সাড়া দেননি।

ইঞ্জিনিয়ার মাঈনুল ইসলাম খান শান্ত বলেন, বিএনপি দেশের সবচেয়ে বড় দল। এত বড় দলের মধ্যে বিরোধ ও গ্রæপিং থাকাটাই স্বাভাবিক। দলীয় কোনো মিটিং-মিছিল কিংবা জনসভা করতে দেয় না প্রশাসন। মামলা-হামলার ভয়ে নেতাকমীর্রা এখন কাবু। প্রতিনিয়ত পুলিশ নানা অজুহাতে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে দলীয় নেতাকমীের্দর হয়রানি করছে। পুলিশের বাধা-নিষেধ ও ক্ষমতাসীনদের মামলা-হামলার কারণে দলীয় কমর্সূচি পালন করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নিবার্চনের পরিবেশ তৈরি হলে বিএনপির নেতাকমীর্রা সব মান অভিমান ভুলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আওয়ামী লীগের দুঃশাসনের বিরুদ্ধে রুখে দঁাড়াবে। ২০০৬ সালে বাবা সামসুল ইসলাম খান নয়া মিয়ার মৃত্যুর পর ছয় মাসের জন্য এমপি হয়েছিলেন। এই অল্প সময়ে তার অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করতে পারেননি। ২০০৮ সালের নিবার্চনে তাকে মনোনয়ন না দেয়ায় দীঘির্দন বিএনপির দখলে থাকা আসনটি হাত ছাড়া হয়। এবার মনোনয়ন পেলে আওয়ামী লীগের দখলে থাকা আসনটি পুনরুদ্ধার করে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে উপহার দেয়া হবে।

আরেক মনোনয়নপ্রত্যাশী আবিদুর রহমান খান রোমান। তিনি সিঙ্গাইর বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের ভিপি, উপজেলা ছাত্রদল ও যুবদলের সভাপতি ছিলেন। বতর্মান তিনি উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। ২০১৪ সালে অনুষ্ঠেয় উপজেলা পরিষদ নিবার্চনে তিনি আওয়ামী লীগের হেবিওয়েট প্রাথীের্ক পরাজিত করে চেয়ারম্যান নিবাির্চত হন।

রোমান নিজেকে যোগ্য প্রাথীর্ দাবি করে বলেন, মনোনয়ন যারা চাচ্ছেন তাদের অনেকেরই জনগণের সাথে কোনো সম্পকর্ নাই। বিপদ-আপদে কোনো সময় তারা নেতাকমীের্দর সাহায্য-সহযোগিতা ও খেঁাজ-খবর নেন না। নিবার্চনের সময় আসলে নেতাকমীের্দর কথা মনে পড়ে। তিনি ছাত্রজীবন থেকে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। কখনো দলের আদশর্ থেকে বিচ্যুত হননি। উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে সামাজিক কমর্কাÐের পাশাপাশি এলাকার উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছেন। বিপদ-আপদ ও দলের দুঃসময়ে নেতাকমীের্দর সাহায্য-সহযোগিতা করে দলকে সুসংগঠিত রাখতে ভূমিকা রেখে চলেছেন। দল নিশ্চয় এর মূল্যায়ন করবে। মনোনয়ন পেলে তার বিজয় কেউ ঠেকিয়ে রাখতে পারবে না বলে জানান তিনি।

অপর মনোনয়নপ্রত্যাশী হরিরামপুর উপজেলা চেয়ারম্যান তরুণ শিল্পপতি সাইফুল হুদা চৌধুরী শাতিল। তিনি ২০১৪ সালে বিএনপির মনোনয়নে উপজেলা চেয়ারম্যান নিবাির্চত হন। চেয়ারম্যান হয়ে এলাকার উন্নয়ন, অসহায় দরিদ্র জনগোষ্ঠী, ধমীর্য় ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দান-অনুদান করে এলাকার সাধারণ মানুষের কাছে দানশীল ব্যক্তি হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন। সাইফুল হুদা চৌধুরী শাতিল বলেন, দীঘির্দন ধরে সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে সমাজের অবহেলিত জনগোষ্ঠীর সেবা করে আসছেন। সব সময় এলাকাবাসীর সুখ-দুঃখে পাশে আছেন। আশা করছেন, সব দিক বিবেচনা করে দলীয় হাইকমান্ড এবার তাকে মনোনয়ন দিবেন। এমপি হয়ে দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করবেন বলে জানান তিনি।

এ ছাড়াও আসনটিতে বিএনপির মনোনয়ন চাচ্ছেন যুক্তরাজ্য প্রবাসী ব্যারিস্টার আলীমুল হক লিটন। তিনি জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম যুক্তরাজ্য শাখার সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও জাতীয়তাবাদী লিগ্যাল এইড যুক্তরাজ্য শাখার যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক। এ ছাড়া তিনি জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক দলের সিঙ্গাইর উপজেলা শাখার আহŸায়ক ও ঢাকার সাভার বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। প্রবাসে অবস্থান করলেও সামাজিক কমর্কাÐ ও বিভিন্ন উপায়ে দলীয় নেতাকমীর্ এবং সাধারণ মানুষের সঙ্গে নিবিড় সম্পকর্ রয়েছে তার। ব্যারিস্টার আলিমুল হক লিটন জেলার সিঙ্গাইর উপজেলার ধল্লা ইউনিয়নের আঠালিয়া গ্রামের মরহুম ডা. আজিজুল হকের (কটন ডাক্তার) ছেলে। তিনি দীঘির্দন ধরে পরিবার নিয়ে যুক্তরাজ্যে বসবাস করছেন। সেখানে দলের সাংগঠনিক কমর্কাÐে সক্রিয় ভূমিকা পালনের পাশাপাশি টিভি টোকশো ও গোলটেবিলে অংশ নিয়ে আন্তজাির্তক পরিমÐলে বতর্মান সরকারের গুম-খুন ও দুঃশাসনের চিত্র তুলে ধরে লন্ডনে অবস্থানরত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার ঘনিষ্টজনদের নজর কাড়তে সক্ষম হয়েছেন। সময় পেলেই দল ও এলাকার মানুষের টানে ছুটে আসেন দেশে। সম্প্রতি আলীমুল হক লিটন দেশে এসে সাক্ষাৎ করেন দলটির শীষর্ নেতাদের সঙ্গে। এলাকার সামাজিক ও ধমীর্য় অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে আথির্ক সাহায্য-সহযোগিতা দেন।

ব্যারিস্টার আলীমুল হক লিটন বলেন, বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদশের্ অনুপ্রাণিত হয়ে ছাত্রজীবন থেকে বিএনপিকে ভালোবাসেন। যখনই সুযোগ পেয়েছেন দল ও দেশের জন্য কাজ করার চেষ্টা করেছেন। এলাকার লোকজন ও দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ঘনিষ্ঠজনরা চাচ্ছেন তিনি নিবার্চন করেন। তাদের ইচ্ছার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে দেশ ও জাতীর কল্যাণে কাজ করার প্রত্যাশা নিয়ে দলীয় মনোনয়নে নিবার্চন করার ইচ্ছা পোষণ করছেন। তবে দল যাকে মনোনয়ন দিবেন, তার পক্ষেই কাজ করবেন বলে জানান তিনি।

জাতীয় পাটির্ : সাংগঠনিক দুবর্লতা ও দূরদশীর্ নেতৃত্বের অভাবে এই আসনে বতর্মান সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পাটির্র অবস্থা একেবারেই নড়বড়ে। নিবার্চনে এককভাবে পাল্লা দেয়ার মতো জনসমথর্ন না থাকলেও নেতাকমীের্দর মধ্যে রয়েছে মতবিরোধ। ২০০৮ সালের নিবার্চনে বিএনপি থেকে মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে মহাজোটের ব্যানারে এমপি হন বতর্মান জাতীয় পাটির্র প্রেসিডিয়াম সদস্য ও জেলা জাতীয় পাটির্র সভাপতি সৈয়দ আব্দুল মান্নান। মহাজোটে থাকলে এবারও আসনটির দাবি করবে দলটি। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নিবার্চনে দলীয় মনোনয়ন পেয়েও আব্দুল মান্নান রহস্যজনক কারণে সেই নিবার্চনে অংশ নেননি। অন্য কোনো প্রাথীর্ না থাকায় বিনা ভোটে এমপি হন আওয়ামী লীগের কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগম। এবারের নিবার্চনে সৈয়দ আব্দুল মান্নান ও কেন্দ্রীয় ছাত্র সমাজের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মিরু মনোনয়নের জন্য জোর তৎপরতা চালাচ্ছেন। তারা নিজের মতো করে প্রচার-প্রচারণা ও দলীয় নেতাকমীের্দর খেঁাজ-খবর নিচ্ছেন।

সৈয়দ আব্দুল মান্নান বলেন, রাজনৈতিক দলে মতবিরোধ নতুন কিছু নয়। মান-অভিমান থাকবেই। দলের সিংহভাগ নেতাকমীর্ তার নেতৃত্বকে পছন্দ করেন। কারও মধ্যে মান-অভিমান থাকলেও নিবার্চন আসলে সব ঠিক হয়ে যাবে। তিনি আরও বলেন, তিনি ২০০৮ সালে এমপি হওয়ার পর এলাকার অভূতপূবর্ উন্নয়ন সাধিত হয়। ২০১৪ সালের নিবার্চনে দলের সিদ্ধান্তেই সরে দঁাড়িয়ে ছিলেন। এবার পাটির্র চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের নিদেের্শ নিবার্চনী প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। নিবার্চন এককভাবে হোক আর মহাজোটের ব্যানারে হোক, এই আসনের মনোনয়ন তিনিই পাবেন।

এ ছাড়াও দলটি থেকে মনোনয়ন চাচ্ছেন কেন্দ্রীয় জাতীয় ছাত্র সমাজের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মিরু। দক্ষ সংগঠক হিসেবে কেন্দ্রে রয়েছে তার শক্ত অবস্থান। স্থানীয় জাতীয় পাটির্র একটি অংশ তাকে আগামী নিবার্চনে দলের প্রাথীর্ হিসেবে দেখতে চায়।

মিজানুর রহমান মিরু বলেন, সব দলেই এখন তরুণদের জয়জয়কার। দেশ ও জাতির উন্নয়নে তরুণদের বিকল্প নেই। মনোনয়ন প্রসঙ্গে মিরু বলেন, দীঘির্দন দলের জন্য কাজ করছেন। শুধু সুদিনেই নয়, দুদিের্নও জীবনবাজি রেখে দলের সাংগঠনিক কমর্কাÐে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছেন। আশা করেন, দল তার কাজের যথাযথ মূল্যায়ন করবে। তবে দলের চেয়ারম্যান হুসেইন মোহম্মদ এরশাদের যেকোনো সিদ্ধান্ত তিনি মেনে নিবেন।

এদিকে ১৯৮৬ থেকে ’৯০ পযর্ন্ত এরশাদ সরকারের আমলে এই আসনে সংসদ সদস্য ছিলেন সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী গোলাম সারোয়ার মিলন। বতর্মান সরাসরি কোনো দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত নন তিনি। একাদশ সংসদ নিবার্চনকে সামনে রেখে এলাকায় যোগাযোগ বাড়িয়ে দিয়েছেন। খেঁাজ-খবর নিচ্ছেন গণ্যমান্য ব্যক্তিবগর্ ও সমাজের নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের। সাবেক সংসদ সদস্য, মানিকগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সাবেক ছাত্রনেতা হিসেবে এলাকায় রয়েছে তার ব্যাপক পরিচিতি। দীঘর্ সময় ক্ষমতার বাইরে থাকলেও এখনো এলাকায় রয়েছে তার অনেক ভক্ত।

গোলাম সারোয়ার মিলন বলেন, তার আমলে অবহেলিত জনপথটির উন্নয়নের সূচনা হয়। এলাকার শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি ও যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ সব উন্নয়নে তার ভূমিকা রয়েছে। এলাকার প্রতিটি রাস্তাঘাট তার চেনাজানা। দীঘির্দন ক্ষমতার বাইরে থাকলেও সব সময় এলাকাবাসীর খেঁাজ-খবর নিয়েছেন। আথির্ক সহযোগিতাসহ নানাভাবে চেষ্টা করেছেন গরিব-দুঃখী মানুষের দুঃখ-কষ্ট মোচনের। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট থেকে নিবার্চন করার কথা বললেও কোনো দলের হয়ে নিবার্চন করবেন তা এই মুহ‚তের্ জানাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন জাতীয় পাটির্র সাবেক এই নেতা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে