শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
১৪৬ জনই পানিতে ডুবে

বন্যায় ৪০ দিনে ১৭৪ মৃত্যু

বাড়িঘর পানিতে ডুবে যাওয়ায় ছোট শিশুদের নিয়ে মানুষ আতঙ্কে থাকে। পানিতে ডুবে যাদের মৃতু্য হয় তাদের অধিকাংশই শিশু
যাযাদি ডেস্ক
  ১০ আগস্ট ২০২০, ০০:০০
সারাদেশে কমতে শুরু করেছে বন্যার পানি। তবে রাজধানীর আশপাশের নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ঢাকার নিম্নাঞ্চল এখনো পস্নাবিত। ফলে দুর্ভোগ কমেনি মানুষের। ছবিটি কেরানীগঞ্জ তারানগর ইউনিয়ন থেকে তোলা -যাযাদি

দেশের ৩৩টি বন্যা উপদ্রম্নত এলাকায় ৪০ দিনে ডায়রিয়া, পানিতে ডুবে, বজ্রপাতে, সাপের কামড়ে ও অন্যান্য কারণে ১৭৪ জনের মৃতু্য হয়েছে। গত ৩০ জুন থেকে ৯ আগস্ট পর্যন্ত এসব মৃতু্যর ৮৪ শতাংশই অর্থাৎ ১৪৬ জনের মৃতু্য হয়েছে পানিতে ডুবে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার অ্যান্ড কন্ট্রোল রুম সূত্রে জানা গেছে, বন্যাকালীন মৃত ১৭৪ জনের মধ্যে পানিতে ডুবে ১৪৬ জন, বজ্রপাতে ১৩ জন এবং সাপের কামড়ে ১৫ জনের মৃতু্য হয়। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় পানিতে ডুবে পাঁচজনের মৃতু্য হয়েছে। তাদের মধ্যে লালমনিরহাটে একজন, কুড়িগ্রামে একজন, জামালপুরে একজন, কিশোরগঞ্জে একজন ও গাজীপুরে একজনের মৃতু্য হয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, বন্যায় পানিতে ডুবে এবং সাপের কামড়ে মৃতু্যর ঝুঁকি বেশি থাকে। বাড়িঘরে পানিতে ডুবে যাওয়ায় ছোট শিশুদের নিয়ে মানুষ আতঙ্কে থাকে। পানিতে ডুবে যাদের মৃতু্য হয় তাদের অধিকাংশই শিশু। এদিকে বন্যাকালীন মৃত ১৭৪ জনের মধ্যে লালমনিরহাটে ১৬ জন, কুড়িগ্রামে ২৩ জন, গাইবান্ধায় ১৫ জন, নীলফামারীতে দুজন, রংপুরে তিনজন, সুনামগঞ্জে তিনজন, সিরাজগঞ্জে ১৪ জন, জামালপুরে ২৯ জন, টাঙ্গাইলে ২৮ জন, রাজবাড়ীতে একজন, মানিকগঞ্জে ১৭ জন, নেত্রকোনায় পাঁচজন, নওগাঁয় দুজন, কিশোরগঞ্জে চারজন, ঢাকায় পাঁচজন, শরীয়তপুরে একজন, মুন্সীগঞ্জে তিনজন, গাজীপুরে একজন ও গোপালগঞ্জে দুজনের মৃতু্য হয়। চার নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে : কিছু অঞ্চলে অবনতির পূর্বাভাস থাকলেও এখন দেশে বন্যা পরিস্থিতির প্রতিনিয়ত উন্নতি হচ্ছে। শুক্রবার দেশে বন্যাকবলিত জেলা ছিল ১২টি, রোববারও তাই রয়েছে। তবে শুক্রবার ১২টি নদীর পানি বিপৎসীমার উপরে থাকলেও রোববার আটটি নদীর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পাশাপাশি ওইদিন ১৬টি স্টেশনে পানি বিপৎসীমার উপরে থাকলেও এখন ১১টি স্টেশনের পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অর্থাৎ দুই দিনের ব্যবধানে চারটি নদী ও পাঁচটি স্টেশনের পানি বিপৎসীমার নিচে নেমেছে। স্বাভাবিকভাবে সেসব অঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতিরও উন্নতি হয়েছে। বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের ৭ ও ৯ আগস্টের তথ্য বিশ্লেষণ করে এ তথ্য পাওয়া যায়। রোববারের পূর্বাভাসে আরও বলা হয়, ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদীর পানি কমছে, যা আগামী ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানি কমছে, যা আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। উত্তর-পূর্বাঞ্চলের উজান মেঘনা অববাহিকার প্রধান নদীগুলোর পানি কমছে, যা আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। ঢাকার আশপাশের নদীগুলোর পানি কমছে, যা আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। এর প্রভাবে আগামী ২৪ ঘণ্টায় সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, নাটোর, মানিকগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, ফরিদপুর, মাদারীপুর, চাঁদপুর, রাজবাড়ী, শরীয়তপুর, ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ জেলার বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে। এ সময়ে ঢাকা সিটি করপোরেশন-সংলগ্ন নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে। শনিবার সকাল ৯টা থেকে রোববার সকাল ৯টা পর্যন্ত সময়ে উলেস্নখযোগ্য বৃষ্টিপাত হয়েছে মহেশখোলায় ৭৯ ও সুনামগঞ্জে ৪২ মিলিমিটার। একই সময়ে বাংলাদেশের উজানে অর্থাৎ ভারতের জলপাইগুড়িতে ৯৬ ও দার্জিলিংয়ে ৪৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে