শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

করোনা উপসর্গে ৬ জেলায় আরও ১০ জনের মৃত্যু

যাযাদি ডেস্ক
  ০৮ জুলাই ২০২০, ০০:০০
আপডেট  : ০৮ জুলাই ২০২০, ১০:১৩

করোনা উপসর্গ নিয়ে দেশের ৫ জেলায় ১১ জনের মৃতু্য হয়েছে। সোম ও মঙ্গলবার নড়াইলে ১ জন, ঝিনাইদহে ১ জন, পিরোজপুরে ১ জন, বরিশালে ৩ জন, কুমিলস্নায় ৩ জন এবং বগুড়ায় ১ জন মারা গেছেন। আমাদের আঞ্চলিক অফিস ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর : লোহাগড়া (নড়াইল) :নড়াইলের লোহাগড়ায় করোনা উপসর্গ নিয়ে একজন পুলিশ কর্মকর্তার মৃতু্য হয়েছে। মৃতু্যর পর তার শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছে স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগ। এলাকাবাসী ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার শালনগর ইউনিয়নের পার শালনগর গ্রামের মৃত আমির হোসেনের ছেলে মোশারফ হোসেন (৫২) খুলনা পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারে পুলিশ পরিদর্শক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। গত ১ জুলাই সেখানে তিনি করোনা উপসর্গ- জ্বর, কাশি, গলাব্যথা, শ্বাসকষ্ট নিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নমুনা পরীক্ষা করতে দিয়ে ছুটিতে বাড়ি আসেন। ওই পুলিশ কর্মকর্তার ছেলে আব্দুলস্নাহ আল মামুন বলেন, গত ১ জুলাই খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নমুনা পরীক্ষা করার জন্য দেওয়া হলেও আজও সেই নমুনার ফলাফল পাওয়া যায়নি। আমার বাবা বাড়িতে হোমকোয়ারেন্টিনে থেকে চিকিৎসারত অবস্থায় গত সোমবার রাতে উপসর্গ বেড়ে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। এ সময় পরিবারের লোকজন রাত ১১টার দিকে তাকে লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সে নিয়ে এলে কর্তব্যরত ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন। লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সৈয়দ আশিকুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, মৃত ৪ মোশারফ হোসেন খুলনা পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারে পুলিশ পরিদর্শক ছিলেন। মঙ্গলবার সকালে ওই কর্মকর্তার শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছে স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগ। এদিকে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে নিহতের জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়েছে। ঝিনাইদহ :জেলার ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে করোনা উপসর্গ নিয়ে আব্দুর রকিব জোয়ার্দ্দার (৩৫) নামে একজন মারা গেছেন। মঙ্গলবার সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। তার বাড়ি শৈলকুপা উপজেলার মিনগ্রামে। সিভিল সার্জন ডা. সেলিনা বেগম জানান, সোমবার জ্বর, সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে সদর হাসপাতালে ভর্তি হন আব্দুর রকিব জোয়ার্দ্দার। মঙ্গলবার সকালে তিনি মারা যান। ভর্তির পর তার নমুনা সংগ্রহ করা হয় কিন্তু এখনো ফলাফল আসেনি। এদিকে ঝিনাইদহ জেলায় নতুন করে আরও ২৪ জন করোনায় আক্রান্ত হওয়ার খবর এসেছে। এ নিয়ে জেলায় করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৩১৯ জন। আর মারা গেছে সাতজন। মঠবাড়িয়া (পিরোজপুর) :পিরাজপুরের মঠবাড়িয়ায় করোনা উপসর্গ নিয়ে এক বৃদ্ধের (৬৫) মৃতু্য হয়েছে। সোমবার রাত ১১টার দিকে নিজ বাড়িতে মারা যান তিনি। পারিবারিক ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত তিন-চার দিন আগে ওই বৃদ্ধের হালকা জ্বর ও সর্দিকাশি দেখা দেয়। পরে তাকে স্থানীয় বাজার থেকে ওষুধ কিনে খাওয়ানো হয়। এর মধ্যে গত রোববার তার শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। পরে স্থানীয় দধিভাঙ্গা বাজার থেকে ওষুধ কিনে খাওয়ালে জ্বর না কমায় সোমবার বিকালে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসক প্রাথমিক পরীক্ষার পর তাকে বরিশাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। কিন্তু ওই ব্যক্তি বরিশাল যেতে রাজি না হওয়ায় স্বজনরা তাকে বাড়িতে নিয়ে গেলে রাত ১১টার দিকে তার মৃতু্য হয়। বরিশাল :বরিশালে ৯ ঘণ্টার ব্যবধানে করোনার উপসর্গ নিয়ে ৩ জনের মৃতু্য হয়েছে। এর মধ্যে ২ জন বরিশাল শের ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে ও একজন নিজ বাড়িতে মারা যান। সোমবার দিনগত রাত ১টা থেকে মঙ্গলবার (৭ জুলাই) সকাল ১০টার মধ্যে এ তিনজনের মৃতু্য হয়। শেবাচিম হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার চরফাকাকাটা এলাকার ওয়াহউলস্নাহ খান (৬২) শেবাচিমে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। গত ৩ জুন দুপুর আড়াইটার দিকে উপসর্গ নিয়ে তিনি হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে ভর্তি হন। তবে নমুনা পরীক্ষার রিপোর্টে তার করোনা নেগেটিভ আসে। অন্যদিকে সোমবার দিনগত রাত ১টার দিকে এ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান পটুয়াখালী জেলার গলাচিপা উপজেলার চরদিরাস এলাকার আলতাফ হোসেন (৬০)। তিনি সোমবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে উপসর্গ নিয়ে করোনা ওয়ার্ডে ভর্তি হন। তিনি করোনা আক্রান্ত ছিলেন কি না জানতে তার নমুনা সংগ্রহ করে পিসিআর ল্যাবে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের পরিচালক ডা. বাকির হোসেন। এছাড়া করোনার উপসর্গ নিয়ে জেলার গৌরনদী উপজেলার বেজহার গ্রামে আইয়ুব আলী সরদার (৫৫) নামের আরও এক ব্যক্তির মৃতু্য হয়েছে। মাহিলাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সৈকত গুহ পিকলু ওই পরিবারের সদস্যদের বরাত দিয়ে জানান, বেজহার গ্রামের বাসিন্দা আইয়ুব আলী সরদার গত পাঁচ দিন থেকে জ্বর ও শ্বাসকষ্টজনিত রোগে ভুগছিলেন। তাকে বাড়িতে রেখেই চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল। মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে তার মৃতু্য হয়। কুমিলস্না :করোনাভাইরাসে সংক্রমিত রোগীদের চিকিৎসার জন্য স্থাপিত কুমিলস্না কোভিড-১৯ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) মঙ্গলবার ভোর পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় তিনজন মারা গেছেন। তাদের সবার বাড়ি কুমিলস্না সিটি করপোরেশন ও আদর্শ সদর উপজেলায়। হাসপাতালের পরিচালক চিকিৎসক মো. মুজিবুর রহমান সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, সোমবার রাত আটটায় মারা যান কুমিলস্না নগরের উনাইসার এলাকার ৩৬ বছরের এক নারী। কোভিডের উপসর্গ জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে সোমবার বেলা ১১টা ৩৫ মিনিটে মারা যান আদর্শ সদর উপজেলার ৭৩ বছরের এক বৃদ্ধ, সোমবার রাত ১১টা ৩৫ মিনিটে মারা যান কুমিলস্না শহরের ৬৫ বছরের এক পুরুষ এবং আদর্শ সদর উপজেলার নোয়াপাড়া এলাকার ৫৭ বছরের এক নারী রাত সাড়ে আটটায় মারা গেছেন। বগুড়া :বগুড়ায় হাসপাতালে কোভিডের উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালের করোনা ইউনিটে মারা গেছেন দুজন। বগুড়ার কোভিড রোগীদের জন্য নির্ধারিত শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সোমবার রাত আটটা থেকে মঙ্গলবার সকাল নয়টা পর্যন্ত ওই দুই রোগী মারা যান। বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কোভিড ইউনিটে মঙ্গলবার ভোর পাঁচটার দিকে উপসর্গে মারা গেছেন এক বৃদ্ধ (৬৬)। তার বাড়ি গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায়। তিনি পেশায় ইটভাটার মালিক। সোমবার কোভিডের উপসর্গ নিয়ে তিনি হাসপাতালে ভর্তি হন। এছাড়া হাসপাতালের করোনা ইউনিটে সোমবার সন্ধ্যায় মারা গেছেন এক নারী (৫২)। তিনি শাজাহানপুর উপজেলার বাসিন্দা। কোভিডের উপসর্গ নিয়ে সোমবার দুপুর দেড়টার দিকে তিনি হাসপাতালে ভর্তি হন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে