শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

রাজনৈতিক দলের কাছে নতজানু ইসি :সুজন

যাযাদি রিপোর্ট
  ০৩ জুলাই ২০২০, ০০:০০

রাজনৈতিক দলের সব কমিটিতে নারীর ৩৩ শতাংশ অংশগ্রহণের বাধ্যবাধকতা তুলে দিচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) বলছে, এই সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক দলের কাছে নির্বাচন কমিশনের যেমন নতজানু মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ; তেমনি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় নারীর অংশগ্রহণ তথা নারীর ক্ষমতায়নের পরিপন্থী। একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের জন্য এটি আত্মঘাতী।

'রাজনৈতিক দলে নারীর অংশগ্রহণ : নির্বাচন কমিশনের অবস্থান ও সুজন-এর বক্তব্য' শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এমনটাই জানায় সুজন। বৃহস্পতিবার অনলাইনে আয়োজিত সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আরও জানানো হয়, ইসি এই ধরনের সিদ্ধান্ত গ্রহণের মাধ্যমে নিজেদের দুর্বল করছে- খেলো করছে। নারীর ৩৩ শতাংশ অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে দুই বছর সময় বাড়িয়ে দেওয়ার প্রস্তাব করেছে সুজন।

বক্তারা বলেন, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে জনগণের স্বার্থ সংরক্ষণ করাই ইসির মূল কাজ; কোনো রাজনৈতিক দল বা সরকারের স্বার্থ রক্ষা কমিশনের কাজ নয়। ইসির নতুন প্রস্তাব গৃহীত হলে, তা নারীর ক্ষমতায়ন বিরোধী রাজনৈতিক দল ও ধর্মান্ধ মৌলবাদী গোষ্ঠীকে উৎসাহিত করবে।

অনুষ্ঠানে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শাহদীন মালিক বলেন, জাতীয় জীবনে সবচেয়ে বড় দুর্যোগ হচ্ছে বর্তমান ইসি। জাতির অগ্রগতির পথে অনেক বড় অন্তরায় হয়ে আবির্ভূত হয়েছে। নিবন্ধিত দলগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে আইন বাতিলের অবাস্তব প্রস্তাব দিয়েছে। এটি অযোগ্যতা, অদক্ষতা, মেরুদন্ডহীনতার পরিচয় দেয়।

বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, এই উদ্যোগ চরম আপত্তিকর, অগণতান্ত্রিক, অগ্রহণযোগ্য এবং সংবিধানবিরোধী। এ প্রক্রিয়ায় আইন তৈরি হতে থাকলে আমাদের নূ্যনতম গণতন্ত্র চর্চার সুযোগও থাকবে না।

সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান হিসেবে ইসি জনগণের কাছে দায়বদ্ধ, কোনো দলের কাছে নয়। এই আইন প্রণয়নের উদ্দেশ্য কি জনস্বার্থ না রাজনৈতিক দলের স্বার্থ এটাই আমার কাছে বড় প্রশ্ন। বর্তমান নির্বাচন কমিশন দীর্ঘদিন ধরেই জনস্বার্থবিরোধী কাজ করে আসছে, নানা অপকর্ম করে আসছে। এই আইনটা অপকর্মের ধারাবাহিকতার অংশ।

সুজন জানায়, জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরিচালনা সংক্রান্ত দি রিপ্রেজেন্টেশন অব দি পিপলস অর্ডার ১৯৭২-এর ৬-ক অধ্যায়ে উলেস্নখিত 'কমিশনের সাথে রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন' শিরোনামের অধীনে ন্যস্ত ধারাসমূহ রহিত করে 'কমিশনে রাজনৈতিক দলসমূহের নিবন্ধন আইন, ২০২০' শিরোনামে একটি স্বতন্ত্র আইন প্রণয়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে ইসি। ইতোমধ্যেই আইনটির খসড়া ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।

সুজন কেন্দ্রীয় কমিটির কোষাধ্যক্ষ সৈয়দ আবু নাসের বখতিয়ার আহমেদের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সুজন-এর কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার সরকার। তিনি বলেন, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ এবং প্রস্তাবিত আইনের খসড়ার বর্ণনায় পার্থক্য হলো, 'এই লক্ষ্যমাত্রা পর্যায়ক্রমে আগামী ২০২০ সালের মধ্যে অর্জন করিতে হইবে'-এর স্থলে 'কমিশনে প্রদেয় বার্ষিক প্রতিবেদনে এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের বিবরণী অন্তর্ভুক্ত করিতে হইবে।' এই পার্থক্যের অর্থ দাঁড়াচ্ছে, যে লক্ষ্যমাত্রা নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলসমূহকে ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে অর্জন করার বাধ্যবাধকতা ছিল, তা না করলেও চলবে।

সুজন বলছে, আইনের খসড়ায় এমনভাবে প্রস্তাব করা হয়েছে যে, পূর্ববর্তী যে কোনো দুটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করলে, কোনো নতুন দলের জন্য নিবন্ধন পাওয়া সম্ভব হবে না। এটি গ্রহণযোগ্য নয়। নিবন্ধনের পূর্বশর্তগুলো খুব বেশি কড়াকড়ি না করে বরং কিছুটা শিথিল রাখা উচিত।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<104634 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1