শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ঈদযাত্রায় ১৪৯ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১৬৮

যাযাদি রিপোর্ট
  ০৬ জুন ২০২০, ০০:০০
বিগত ঈদুল ফিতরে ঈদযাত্রায় দুর্ঘটনাকবলিত যানবাহনের পাই চিত্র

গণপরিবহণ বন্ধ থাকা অবস্থায় পবিত্র ঈদুলফিতরের যাতায়াতে দেশের সড়ক-মহাসড়কে ১৪৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১৬৮ জন নিহত হয়েছেন। একই সঙ্গে ২৮৩ জন আহত হয়েছেন। সড়ক, রেল ও নৌপথে সম্মিলিতভাবে ১৫৬টি দুর্ঘটনায় ১৮৫ জন নিহত ও ২৮৩ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।

শুক্রবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী এসব তথ্য জানান।

তিনি জানান, সংগঠনটির সড়ক দুর্ঘটনা মনিটরিং সেল প্রতিবেদনটি তৈরি করে। বহুল প্রচারিত ও বিশ্বাসযোগ্য জাতীয় দৈনিক, আঞ্চলিক দৈনিক ও অনলাইন দৈনিক-এ প্রকাশিত সংবাদ মনিটরিং করে এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।

মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, সাধারণ ছুটি চলাকালীন দেশে গণপরিবহণ বন্ধ ছিল। ৯০ শতাংশ যাত্রীর যাতায়াত বন্ধ থাকলেও সেই তুলনায় এবারের ঈদে সড়ক দুর্ঘটনা বেড়েছে। এখন ব্যক্তিগত যানবাহনের চালকদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া জরুরি হয়ে পড়েছে। ছোট যানবাহন নিয়ন্ত্রণ ও গণপরিবহণকে বিকশিত করা এখন সময়ের দাবিতে পরিণত হয়েছে। সড়ক দুর্ঘটনাকেও মহামারির মতো গুরুত্ব দিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে এ বছর গণপরিহণ বন্ধ থাকায় ঈদযাত্রা ব্যক্তিগত পরিবহণে সীমিত থাকলেও ঈদের আগে-পরে সড়ক দুর্ঘটনা ছিল অতীতের তুলনায় বেশি। বিগত ১৯ মে থেকে ৩১ মে পর্যন্ত ১৩ দিনে ১৪৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১৬৮ জন নিহত ও ২৮৩ জন আহত হয়েছেন। উলেস্নখিত সময়ে রেলপথে ট্রেন-যানবাহন সংঘর্ষে একটি ঘটনায় কোনো হতাহত হয়নি। একই সময়ে নৌপথে ছয়টি ছোট-বড় বিচ্ছিন্ন দুর্ঘটনায় ১৭ জন নিহত ও ৪৫ জন নিখোঁজের খবর পাওয়া গেছে।

মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, এ সময় সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনা সংঘটিত হয় ২৫ মে। এ দিন ২০টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২১ জন নিহত ও ৪৮ জন আহত হন। সবচেয়ে কম সড়ক দুর্ঘটনা সংঘটিত হয় ২৪ মে। এ দিন ছয়টি সড়ক দুর্ঘটনায় ছয়জন নিহত ও দুইজন আহত হন। এ সময় একদিনে সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ও আহত হয় গত ১৯ মে। এদিন ১৭টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২১ জন নিহত ৫৪ জন আহত হন।

এ সময় একদিনে সর্বোচ্চ মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা ঘটে ঈদের দিন ২৫ মে। এ দিন ১৬টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১৬ জন নিহত ও ২৪ জন আহত হন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ঈদযাত্রায় সড়কে দুর্ঘটনায় আক্রান্ত ৪৫ জন চালক, ৩৩ জন নারী, ২৮ জন পথচারী, ২৭ জন পরিবহণ শ্রমিক, ২৪ জন শিশু, ১৯ জন শিক্ষার্থী, পাঁচজন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, তিনজন শিক্ষক, তিনজন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, তিনজন সাংবাদিক ও একজন প্রকৌশলীর পরিচয় মিলেছে।

এর মধ্যে নিহত হয়েছেন তিনজন পুলিশ সদস্য, ১৮ জন নারী, ১২ জন শিশু, ১৪ জন শিক্ষার্থী, তিনজন শিক্ষক, ৩২ জন চালক, সাতজন পরিবহণ শ্রমিক, একজন প্রকৌশলী ও তিনজন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী।

সংঘটিত দুর্ঘটনা বিশ্লেষণ করে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, মোট যানবাহনের ৩৫ দশমিক ৭৪ শতাংশ মোটরসাইকেল, ২৮ দশমিক ৯৮ শতাংশ ট্রাক-পিকআপ-কাভার্ড ভ্যান-লরি, ১২ দশমিক ০৭ শতাংশ কার-মাইক্রো-জিপ, ৮ দশমিক ২১ শতাংশ অটোরিকশা, ৭ দশমিক ৭২ শতাংশ ব্যাটারি রিকশা-ইজিবাইক-ভ্যান-সাইকেল, ৬ দশমিক ২৮ শতাংশ নছিমন-করিমন-ট্রাক্টর-লেগুনা-মাহিন্দ্রা ও ০ দশমিক ৯৭ শতাংশ বাস এসব দুর্ঘটনায় জড়িত ছিল।

সংঘটিত দুর্ঘটনার ২৪ দশমিক ১৬ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ৩৮ দশমিক ২৫ শতাংশ পথচারীকে গাড়িচাপা দেওয়ার ঘটনা, ২৭ দশমিক ৫১ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ার ঘটনায়, ৯ দশমিক ৪০ শতাংশ অন্যান্য অজ্ঞাত কারণে ও ০ দশমিক ৬৮ শতাংশ রেল-যানবাহন সংঘর্ষ দুর্ঘটনা সংগঠিত হয়েছে।

এ সময় দুর্ঘটনার ধরন বিশ্লেষণে দেখা গেছে, মোট সংঘটিত দুর্ঘটনার ৩০ দশমিক ২০ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে, ৪৭ দশমিক ৬৫ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে, ১৮ দশমিক ১২ শতাংশ ফিডার রোডে সংঘটিত হয়। এছাড়া সারাদেশে সংঘটিত মোট দুর্ঘটনার ২ দশমিক ৬৮ শতাংশ ঢাকা মহানগরীতে, ০ দশমিক ৬৭ শতাংশ চট্টগ্রাম মহানগরীতে ও ০ দশমিক ৬৭ শতাংশ রেলক্রসিংয়ে সংঘটিত হয়।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বুয়েটের সহকারী অধ্যাপক কাজী সাইফুন নেওয়াজ, ড্রাইভার্স ট্রেনিং সেন্টারের চেয়ারম্যান নুর নবী শিমু, যাত্রী কল্যাণ সমিতির সহ-সভাপতি তাওহীদুল হক লিটন, যাত্রী কল্যাণ সমিতির যুগ্ম মহাসচিব এম মনিরুল হক প্রমুখ।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<101455 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1