বরগুনার বেতাগীতে কৃষি শুমারির তথ্যসংগ্রহকারী নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জানা গেছে, কুষি (শস্য, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ) শুমারি প্রকল্পের আওতায় উপজেলার ১টি পৌরসভা ও ৭টি ইউনিয়নে ২ জন জোনাল অফিসার, ১১ জন সুপারভাইজার ও ১২০ জন তথ্যসংগ্রহকারী নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তথ্য সংগ্রকারীদের কাছ থেকে জনপ্রতি ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা করে পাঁচ লক্ষাধিক টাকা আদায় করছেন পরিসংখ্যান সহকারী মো. শাহ আলম তালুকদার। পরিসংখ্যান সহকারী শাহ আলম নিজেকে ভারপ্রাপ্ত পরিসংখ্যান কর্মকর্তা হিসেবে বিভিন্ন সময়ে পরিচয় দিয়ে থাকেন। নিয়োগকৃত তথ্যসংগ্রহকারীদের তিন দিনের প্রশিক্ষণ দেয়ার নিয়ম থাকলেও এক দিনের নামমাত্র প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়েছে। প্রশিক্ষণ ভাতা হিসেবে দৈনিক ১২৫ টাকা করে দেয়ার কথা থাকলেও তথ্যসংগ্রহকারীদের এখন পর্যন্ত কোনো টাকা দেয়া হয়নি। পরিসংখ্যান কর্মকর্তা পরিচয়দানকারী মো. শাহ আলম তালুকদার নিজেও জোনাল অফিসার হিসেবে নিয়োগ নিয়েছেন, যা প্রকল্পের বিধিসম্মত না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক তথ্য সংগ্রহকারী অভিযোগ করেন, টাকা না দেয়ায় প্রশিক্ষণ নিয়েও তারা নিয়োগ পায়নি। এমনই একজন বেতাগী পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের মো. সুমন জানান, প্রশিক্ষণ জন্য টাকা না দিতে পারায় তাকে নিয়োগ দেয়া হয়নি। এদিকে কাঙ্ক্ষিত শিক্ষাগত যোগ্যতা না থাকলেও জোসনা বেগম নামে একজন অশিক্ষিত এক নারীকে তথ্যসংগ্রহকারী হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তার পক্ষে তার ছোট বোন কাজ করছেন। ৯ জুন থেকে ২০ জুন পর্যন্ত এ শুমারির দায়িত্বে থাকা একজন তথ্যসংগ্রকারী ১২ হাজার টাকা, ১ জন সুপারভাইজার ১৩ হাজার টাকা পাবেন।
এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত পরিসংখ্যান কর্মকর্তা পরিচয়দানকারী পরিসংখ্যান সহকারী মো. শাহআলম তালুকদার অভিযোগের কথা অস্বীকার করে বলেন, সরকারি দলের নেতাদের সুপারিশের ভিত্তিতেই তথ্যসংগ্রকারী নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এছাড়া ডিসি এমপি ছাড়া সবার সুপারিশ রয়েছে। এ নিয়োগে অর্থ আদায়ের কোনো প্রশ্নই আসে না।
উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মো. আমিরুল ইসলাম পিন্টু জানান, এ ব্যাপারে সুপারিশ তো দূরের কথা কোনো তথ্যই জানানো হয়নি তাকে। এমনকি উপজেলার ৮টি জায়গায় প্রশিক্ষণ হয়েছে তাও তিনি জানে না বলে দাবি করেন। তিনি আরও বলেন, 'শাহ আলম সাহেব নিজে স্বজনপ্রীতি করে এ নিয়োগ দিয়েছেন।'
জেলা পরিসংখ্যান কর্মকর্তা মো. নুরুল ইসলাম বলেন, বেতাগীতে পরিসংখ্যান কর্মকর্তার পদ দীর্ঘদিন শূন্য রয়েছে। যিনি রয়েছেন তিনি পরিসংখ্যান সহকারী, তার ভারপ্রাপ্ত পরিসংখ্যান কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকার কোনো এখতিয়ার নেই। তবে তিনি এ প্রকল্পের জোনাল অফিসারের দায়িত্বে আছেন। তথ্যসংগ্রকারীদের কাছ থেকে অর্থ আদায়ের বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।