শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ক্রেতা সংকটে রাজধানীর বেশিরভাগ বিপণিবিতান

যাযাদি রিপোর্ট
  ১২ মে ২০২০, ০০:০০
সোমবার ক্রেতাশূন্য ধানমন্ডির একটি শোরুম -যাযাদি

সরকারি নির্দেশনা মেনে রাজধানীতে সীমিত পরিসরে বিপণি বিতানগুলো খুললেও ক্রেতা সংকটে পড়েছেন বেশিরভাগ ব্যবসায়ী। সকাল থেকে দোকান খুলে বসে থাকলেও দিনশেষে অনেকে বোহনিও করতে পারছেন না।

সোমবার রাজধানীর মিরপুর-২, ১০, ১১, শেওড়াপাড়া, কাজীপাড়া, তালতলা ও কারওয়ান বাজার এলাকা ঘুরে দেখা যায় এমন চিত্র।

ব্যবসায়ীরা জানান, সরকারের স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্বল্প পরিসরে রোববার থেকে মার্কেট খুলেছি। তবে আজ দুদিন চললেও মার্কেটে ক্রেতা নেই বললেই চলে। অনেক দোকানদার এখন পর্যন্ত বোহনিও করতে পারেননি। যা-ও দু-চারজন ক্রেতা মার্কেটে এসেছেন তারাও দেখে-শুনে চলে যাচ্ছেন, কিনছেন না। জানি না শেষদিন পর্যন্ত দোকান খোলা রাখব কি না সেটিই চিন্তার বিষয় বলেও জানিয়েছেন তারা।

এ ব্যাপারে মিরপুর-৬ নম্বর সেকশনের সুইমিং পুলের অন্য প্রান্তে অবস্থিত চন্দ্রবিন্দু মিরপুর ব্রাঞ্চের ম্যানেজার মাহফুজ আহমেদ বলেন, সরকারের স্বাস্থ্যবিধি মেনে সকাল থেকে শোরুম খুলে বসে আছি অথচ ক্রেতার দেখা নেই। আমরা কীভাবে কর্মচারীদের বেতন দেব সে হিসাব মেলাতে পারছি না। প্রতি বছর ১০-১২ জন কর্মচারী কাজ করলেও এ বছর পাঁচজন কাজ করছেন। তাতেও তাদের বেতন ও দোকান ভাড়া শেষ পর্যন্ত উঠবে কি না তা নিয়ে চিন্তায় আছি।

তিনি আরও বলেন, আমাদের দোকান খোলার সম্ভাবনাই ছিল না কিন্তু মার্কেটে সবাই দোকান খুলেছে। এজন্য আমাদেরও খোলা রাখতে হয়েছে। তবে শেষদিন পর্যন্ত দোকান খোলা রাখতে পারব কি না বলতে পারছি না। বেচাকেনা যদি এ অবস্থায় থাকে তাহলে দোকান খোলা রাখা সম্ভব হবে না।

আগের বছরের ৩০ শতাংশও যদি বেচাকেনা হয় সে ক্ষেত্রে কিছুটা হলেও খরচ উঠবে বলে জানালেন কালারস মিরপুর ব্রাঞ্চের ম্যানেজার হিমেল।

তিনি বলেন, মিরপুরে আমাদের আরও তিনটি আউটলেট রয়েছে। প্রতিটি আউটলেটের বেচাকেনার অবস্থায় একই রকম ক্রেতা নেই। ক্রেতা সংকটে ভুগছি আমরা। যা দু-চারজন আসছেন তাও শিশুদের আইটেমের জন্য। বড়দের আইটেমের কোনো বিক্রি নেই।

তিনি আরও জানান, প্রতি বছর ৮-১০ জন কর্মচারী নিয়ে এ সময়ে হিমশিম খেতে হয় বেচাকেনায়। কিন্তু এ বছর মাত্র তিনজন কর্মচারী নিয়ে কাজ করছি। এতেও তাদের বেতন শেষ পর্যন্ত উঠবে কি না এ নিয়েও চিন্তিত আমরা। তবে আশা করছি, শেষ পাঁচদিন বেচাকেনা যদি হয় তাহলে অন্তত কিছুটা হলেও ক্ষতি কম হবে বলেও তিনি জানান।

তবে রাজধানীর প্রতিটি মার্কেটের প্রবেশ মুখেই হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবস্থা দেখা গেছে। শুধু তাই নয়, প্রত্যেক দোকানিই হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা রেখেছেন। কাস্টমার যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাকে হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিতে উৎসাহিত করছেন বিক্রেতারা। এছাড়া ক্রেতারা মার্কেটের প্রবেশমুখ থেকে হাত পরিষ্কার করেই মার্কেটে প্রবেশ করছেন। এছাড়া দোকানগুলোর ভেতরেও শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে বারবার বলে সতর্ক করছেন তারা।

ব্যবসায়ীরা জানান, সরকার যে ঘোষণা দিয়েছে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আমরা সেটি মেনে চলব এবং ক্রেতা সাধারণকেও সেটি মেনে চলার অনুরোধ জানাব।

এদিকে সরকার অনুমতি দিলেও শপিংমল থেকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকায় বসুন্ধরা সিটি শপিংমলসহ সারাদেশে প্রায় ৯৫ শতাংশ শপিংমলও বন্ধ রয়েছে।

অন্যদিকে বিশেষজ্ঞরা বলেন, ঈদের বাজার করার জন্য শপিংমলে ভিড় বাড়বে। আর এ ভিড় থেকেই বিপুল সংখ্যক মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারে।

গত ৪ মে সরকারের এক নির্দেশনায় বলা হয়, সারাদেশের দোকানপাট, শপিংমলগুলো আগামী ১০ মে থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত খোলা রাখা যাবে। এর আগে বিকাল ৫টা পর্যন্ত খোলা রাখার নির্দেশনা ছিল। পরের নির্দেশনায় একঘণ্টা কমানো হয়েছে।

সেক্ষেত্রে প্রতিটি শপিংমলে প্রবেশের ক্ষেত্রে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহারসহ স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় ঘোষিত সতর্কতা প্রয়োগ করতে হবে।

এতে আরও বলা হয়, রমজান ও ঈদুল ফিতর সামনে রেখে সীমিত পরিসরে ব্যবসা-বাণিজ্য চালু রাখার স্বার্থে দোকানপাট খোলা রাখা যাবে। তবে ক্রয়-বিক্রয়কালে পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রাখাসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন করতে হবে।

বড় শপিংমলের প্রবেশমুখে হাত ধোয়ার ব্যবস্থাসহ স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা রাখতে হবে। শপিংমলে আসা যানবাহন অবশ্যই জীবাণুমুক্ত করার ব্যবস্থা রাখতে হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<99230 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1