করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্ব অর্থনীতিতে যে বিরূপ প্রভাব পড়েছে, এতে ৩৩০ কোটি কর্মক্ষম মানুষের আংশিক বা পুরোপুরি বেকার হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও)। জাতিসংঘের এই সহযোগী সংগঠন বলছে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এমন সংকট আর আসেনি। তবে বছরের শেষ ছয় মাসে অর্থনীতির চাকা ঘুরে দাঁড়ালে এবং কার্যকর নীতিকৌশল অবলম্বন করা গেলে পরিস্থিতি মোকাবিলা সম্ভব হবে।
সংস্থাটি বলেছে, যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, এতে বৈশ্বিক কর্মক্ষম মানুষের ৮১ শতাংশ (৩৩০ কোটি) আংশিক বা পুরোপুরিভাবে বেকার হয়ে যেতে পারেন। অর্থাৎ বিশ্বব্যাপী সাড়ে ৩৩০ কোটি মানুষের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। গত বছর ডিসেম্বরে আড়াই কোটি মানুষের নতুন করে বেকার হয়ে যাওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছিল আইএলও। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার কারণে সেই পূর্বাভাস আর টিকছে না।
ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে বহু দেশে লকডাউন চলছে। মানুষের স্বাভাবিক চলাফেরার সঙ্গে সঙ্গে বন্ধ রয়েছে অর্থনৈতিক কর্মকান্ডও। প্রায় সব ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। উৎপাদনে যাচ্ছে না বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান। এই পরিস্থিতিতে অনেক প্রতিষ্ঠান কর্মীদের আংশিক অথবা সম্পূর্ণভাবে চাকরি থেকে অব্যাহতি দিচ্ছে। আইএলওর মহাপরিচালক গাই রাইডার বলেছেন, শ্রমিক ও ব্যবসায়ীরা বিপর্যয়ের মুখোমুখি হয়েছেন। উন্নত ও উন্নয়নশীল, দুই ধরনের দেশেই এই সংকট দেখা দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে আমাদের সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। জরুরিভিত্তিতে কিছু পদক্ষেপ নিলে হয়ত এই পতন থেকে রক্ষা পাওয়া যেতে পারে।
২০২০ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকে বিশ্বব্যাপী প্রতিষ্ঠানগুলো ৬ দশমিক ৭ শতাংশ কর্মঘণ্টা কমিয়ে দিতে পারে বলে মনে করছে আইএলও। এটি প্রায় ২০ কোটি পূর্ণকালীন কর্মজীবী মানুষের চাকরি হারানোর বাস্তবতা সৃষ্টি করবে। সবচেয়ে হুমকির মুখে পড়বে আরব অঞ্চলের দেশগুলো। এই অঞ্চলের ৫০ লাখ পূর্ণকালীন কর্মজীবী মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়তে পারেন। ফলে দেখা দিতে পারে অস্থিরতা।