শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
বিশ্ব ইজতেমা শেষ

তুরাগতীরে লাখো মুসল্লির ‘আমিন আমিন’ ধ্বনি

আখেরি মোনাজাতে আত্মশুদ্ধি ও নিজ নিজ গুনাহ মাফের জন্য দুই হাত তুলে মহান আলস্নাহ রাব্বুল আলামিনের দরবারে রহমত প্রার্থনা করা হয়
নতুনধারা
  ২০ জানুয়ারি ২০২০, ০০:০০
আপডেট  : ২০ জানুয়ারি ২০২০, ০০:০১
টঙ্গীর তুরাগতীরে রোববার লাখো মুসলিস্নর অংশগ্রহণে আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব -যাযাদি

আবুল হোসেন, গাজীপুর আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে রোববার শেষ হলো তাবলিগ জামাত আয়োজিত ৫৫তম বিশ্ব ইজতেমা। বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ এ আখেরি মোনাজাতে আত্মশুদ্ধি ও নিজ নিজ গুনাহ মাফের পাশাপাশি দুনিয়ার সব বালামুসিবত থেকে হেফাজত করার জন্য দুই হাত তুলে মহান আলস্নাহ রাব্বুল আলামিনের দরবারে রহমত প্রার্থনা করা হয়। এ সময় 'আমিন, আলস্নাহুম্মা আমিন' ধ্বনিতে মধ্যাহ্নের আকাশ-বাতাস মুখরিত করে মহামহিম ও দয়াময় আলস্নাহ রাব্বুল আলামিনের সন্তুষ্টি লাভের আশায় লাখ লাখ মুসলিস্ন আকুতি জানান। মোনাজাত পরিচালনা করেন বিশ্ব তাবলিগ জামাতের শীর্ষস্থানীয় মুরুব্বি ভারতের হযরত মাওলানা জমশেদ। গতকাল ভোর থেকে দিকনির্দেশনামূলক বয়ানের পর লাখ লাখ মানুষের প্রতীক্ষার অবসান ঘটে বেলা ১১টা ৪৯ মিনিটে। জনসমুদ্রে হঠাৎ নেমে আসে পিনপতন নীরবতা। যে যেখানে ছিলেন সেখানে দাঁড়িয়ে কিংবা বসে হাত তোলেন মহান আলস্নাহর দরবারে। কান্নায় বুক ভাসান তারা। ১৭ মিনিটব্যাপী মোনাজাতে মাওলানা জমশেদ পবিত্র কোরআনে বর্ণিত দোয়ার আয়াত এবং উর্দু ভাষায় এ মোনাজাত পরিচালনা করেন। মুঠোফোন ও স্যাটেলাইট টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচারের সুবাদে দেশ-বিদেশের আরও লাখ লাখ মানুষ একসঙ্গে হাত তোলেন আলস্নাহর দরবারে। আখেরি মোনাজাত উপলক্ষে টঙ্গী, গাজীপুর, উত্তরাসহ চারপাশের এলাকার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, কলকারখানা, মার্কেট, বিপণিবিতান, অফিসসহ সবকিছুু ছিল বন্ধ। রোববার সকালে চার দিক থেকে লাখ লাখ মুসলিস্ন পায়ে হেঁটেই টঙ্গী বিশ্ব ইজতেমাস্থলে পৌঁছেন। সকাল ৯টার আগেই ইজতেমা মাঠ কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে মুসলিস্নরা মাঠের আশপাশের রাস্তা, অলিগলি, বিভিন্ন ভবনের ছাদে অবস্থান নেন। ইজতেমাস্থলে পৌঁছতে না পেরে কয়েক লাখ মানুষ কামারপাড়া সড়ক ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে অবস্থান নেন। রোববার ভোর থেকেই ফজরের নামাজ ও আখেরি মোনাজাতের জন্য পুরানো খবরের কাগজ, পাটি, সিমেন্টের বস্তা ও পলিথিন সিট বিছিয়ে বসে পড়েন। এ ছাড়া পার্শ্ববর্তী বাসাবাড়ি-কলকারখানা-অফিস- দোকানের ছাদে, যানবাহনের ছাদে ও তুরাগ নদীতে নৌকায় মুসলিস্নরা অবস্থান নেন। যে দিকেই চোখ যায় সে দিকেই দেখা যায় শুধু টুপি-পাঞ্জাবি পরা মানুষ। সবাই অপেক্ষায় আছেন কখন শুরু হবে সেই কাঙ্ক্ষিত আখেরি মোনাজাত। আখেরি মোনাজাতের জন্য রোববার আশপাশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, কলকারখানাসহ বিভিন্ন অফিস-আদালতে ছিল ছুটি। কোনো কোনো প্রতিষ্ঠানে ছুটি ঘোষণা না করলেও কর্মকর্তাদের মোনাজাতে অংশ নিতে বাধা ছিল না। নানা বয়সি ও পেশার মানুষ এমনকি মহিলারাও ভিড় ঠেলে মোনাজাতে অংশ নিতে রোববার সকালেই টঙ্গী এলাকায় পৌঁছেন। বিদেশিদের অংশগ্রহণ- বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বের (নিজামউদ্দিন মারকাজের) মিডিয়া সমন্বয়কারী মো. সায়েম জানান, ৫৯টি দেশের সাড়ে তিন হাজার মুসলিস্ন যোগ দিয়েছেন। এর মধ্যে ভারত, পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া, সৌদি আরব, তুরস্ক, ইরাক, ইরান, লিবিয়া, জর্ডান, আরব আমিরাত, ইথুয়িপিয়া, আফ্রিকা, শ্রীলংকা, মালদ্বীপ ইত্যাদি দেশ থেকে ওই মুসলিস্নরা অংশ নেন। ভিআইপিদের আখেরি মোনাজাতে অংশগ্রহণ : এবারের বিশ্বইজতেমার সর্বশেষ আখেরি মোনাজাতে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, গাজীপুর মহানগরের পুলিশ কমিশনার মো. আনোয়ার হোসেন, গাজীপুরের জেলা প্রশাসক এস এম তরিকুল ইসলাম প্রমুখ বিশ্বইজতেমায় অংশ নেন বলে জানিয়েছেন গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. শাহিনুর ইসলাম। এ ছাড়া ইজতেমার বিদেশি নিবাসে ক্রিকেটার শাকিব আল হাসান, জোনায়েদ সিদ্দিকী, সোহরাওয়ার্দী শুভ, রাকিবুল হাসান, শাহরিয়ার নাফিজ প্রমুখ ক্রিকেটার বিশ্বইজতেমার শেষের আখেরি মোনাজাতে অংশ নেন। বিশ্বইজতেমা ময়দানে দুই পর্বে ২৪ মুসলিস্নর মৃতু্য: বিশ্বইজতেমার কন্ট্রোল রুমে মিডিয়ার দায়িত্বপ্রাপ্ত মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার মো. মনজুর রহমান জানান, গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগ তীরে ৫৫তম বিশ্ব ইজতেমার দুই পর্বে ২৪ মুসলিস্ন ইন্তেকাল করেছেন। সড়ক দুর্ঘটনা, বার্ধক্য ও অসুস্থজনিত কারণে এ ২৪ জন মুসলিস্নর মৃতু্য হয়েছে। তিনি জানান, গত ৯ জানুয়ারি মারা যান সিরাজগঞ্জের খোকা মিয়া। পরের দিন ১০ জানুয়ারি রাত ১টার দিকে বার্ধক্যজনিত কারণে মারা যান চট্টগ্রামের মোহাম্মদ আলী, একই দিন রাজশাহীর চারঘাটের তমিজউদ্দিনের ছেলে আব্দুর রাজ্জাক মারা যান। ১১ জানুয়ারি রাত পৌনে ২টার দিকে মারা যান কুমিলস্নার বিংলাবাড়ি গ্রামের মৃত আব্দুস সোবহানের ছেলে তমিজউদ্দিন, একই দিন ভোর ৪টার দিকে মারা গেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার শাহজাহান। ভোর ৬টার দিকে মারা যান নারায়ণগঞ্জের ইউসুফ মেম্বার, হাতেম আলীর ছেলে মো. আলী আজগর বয়াতী, চট্টগ্রামের ইয়াকুব আলী, নওগাঁর শহীদুল ইসলাম। এ ছাড়া একই দিন সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান নেত্রকোনার মো. মাজহারুল ইসলাম। ১২ জানুয়ারি রাত ৩টার দিকে জয়পুরহাটের হাতখোলা গ্রামের আব্দুল মমিন, সাড়ে ৬টার দিকে কিশোরগঞ্জের ধলিয়া বাজার গ্রামের পীরবক্সের ছেলে নূর ইসলাম, কক্সবাজার জেলার করাচিপাড়া গ্রামের মসন আলীর ছেলে ওলি আহমেদ ও শেরপুর জেলার চরশেরপুর গ্রামের ময়েজ আলীর ছেলে আব্দুল কাইয়ুম মারা গেছেন। ১৫ জানুয়ারি রাত সাড়ে ১১টার দিকে কাভার্ডভ্যান চাপায় মারা যান নরসিংদীর বিরবাগ মধ্যপাড়া গ্রামের আব্দুর রহমানের ছেলে সুরুজ মিয়া। ১৬ জানুয়ারি রাত আড়াইটার দিকে গাইবান্ধা জেলার টেংরাকান্দি গ্রামের রমজান আলীর ছেলে গোলজার হোসেন ট্রেন দুর্ঘটনায় মারা যান। একই দিন সুনামগঞ্জের চাঁনপুর গ্রামের হযরত আলীর ছেলে আলাউদ্দিন বার্ধক্যজনিত কারণে মারা যান। একই দিন মারা যান ঢাকার নলকোগ এলাকার ফজলু মিয়ার ছেলে ইলিয়াস মিয়া। ১৮ জানুয়ারি রাত দেড়টার দিকে শ্বাসকষ্টজনিত রোগে মারা গেছেন রংপুরের ওসমানপুর গ্রামের হাজী জয়নাল আবেদীনের ছেলে হুমায়ুন কবীর, রাত দুইটার দিকে স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে মারা যান ঝিনাইদহের কালাহাট গোপালপুর গ্রামের লুৎফর রহমানের ছেলে আ ফ ম জহুরুল আলম। এ ছাড়া বার্ধক্যজনিত কারণে ভোর সাড়ে ৬টার দিকে গাইবান্ধা জেলার কামালের হাট গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে আব্দুস সোবহান, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মারা যান নোয়াখালীর আজিমনগর গ্রামের মফিজুল ইসলামের ছেলে মনির উদ্দিন, রাত ১০টার দিকে হার্ট অ্যাটাকে মারা যান চুয়াডাঙ্গার খাদিমপুর গ্রামের মোয়াজ্জেম হোসেনের ছেলে ফজলুল হক। ১৯ জানুয়ারি হার্ট অ্যাটাকে মারা যান গাইবান্ধা জেলার চাঁদপাড়া দুর্গাদাহ গ্রামের মজিবুর রহমানের ছেলে মো. শাহ আলম। আগামী বছর মাওলানা সা'দ কান্দলভিকে নিয়েই ইজতেমা করতে চান তার অনুসারীরা: আগামী বছর থেকেই মাওলানা সা'দ কান্দলভিকে নিয়ে টঙ্গীর ময়দানে ৫৬তম বিশ্ব ইজতেমা করতে চান তার অনুসারীরা। এর আগেই উভয়পক্ষের বিরোধ মিটে যাবে বলেও আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। শনিবার রাতে স্থানীয় সংসদ সদস্য যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল এবং গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র অ্যাডভোকেট মো. জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে ইজতেমা ময়দানে আলাপকালে চট্টগ্রামের লালখান জমিয়াতুল উলুম আল-ইসলামিয়া মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল ও হেফাজতে ইসলামের প্রতিষ্ঠাতা নায়েবে আমির মুফতি ইজাহারুল ইসলাম চৌধুরী এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন। মাওলানা সা'দ কান্ধলভির কিছু বক্তব্য নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হলে তিনি সেসব বক্তব্যের ব্যাপারে একটি সমাধানে পৌঁছানের পর আগামীতে টঙ্গী ইজতেমায় তার যোগদানের পথ সুগম হবে বলে মনে করছেন তাবলিগ সাথীরা। এদিকে প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল ও গাজীপুর সিটি মেয়র মো. জাহাঙ্গীর আলম প্রথম পর্বের মতো ইজতেমার এ পর্বেও তাবলিগ জামাতের মুরুব্বিদের সঙ্গে ময়দানে নিবিড়ভাবে সময় দিয়েছেন। রাত-দিন তারা ময়দানে মুরুব্বিদের সঙ্গেই অবস্থান করেছেন। প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল ও সিটি মেয়র জাহাঙ্গীর আলম শনিবারও ইজতেমা ময়দানে মুরুব্বিদের সঙ্গে রাত কাটান। ইজতেমার মুরুব্বিদের বরাত দিয়ে তাবলিগ জামাতের নিজামউদ্দিন মারকাজের মিডিয়া সমন্বয়কারী মো. সায়েম জানান, আমাদের মতানৈকের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ইজতেমা। ধীরে ধীরে ইজতেমায় বিদেশি মুসলিস্ন আসা কমে যাচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে এটি আর বিশ্ব ইজতেমা থাকবে না। তখন এটি বাংলাদেশের ইজতেমায় পরিণত হবে। আগে যেখানে শতাধিক দেশ থেকে ২৫ থেকে ৩০ হাজার বিদেশি মুসলিস্ন আসত, এখন দুই পর্বে মাত্র আসছেন পাঁচ হাজারের মতো মুসলিস্ন। তাই ঐক্যবদ্ধ ইজতেমা খুব জরুরি। সা'দ অনুসারীদের দুই পর্বের ইজতেমার তারিখ ঘোষণা : বিশ্ব ইজতেমার মাওলানা জুবায়ের অনুসারীদের দুই পর্বের ইজতেমার তারিখ ঘোষণার পর রোববার সা'দ অনুসারী পক্ষও আগামী ৫৬তম বিশ্ব ইজতেমার পৃথক সময়ে দুই পর্বের তারিখ ঘোষণা করেছেন। রোববার দ্বিতীয় পর্বের আখেরি মোনাজাতের আগে ইজতেমার বয়ান মঞ্চ থেকে এ তারিখ ঘোষণা করা হয়। সা'দ অনুসারীদের ইজতেমা আয়োজক কমিটির শূরার বৈঠকের সিদ্ধান্ত মোতাবেক এ তারিখ ঘোষণা করা হয় বলে জানান ইজতেমার মিডিয়া সমন্বয়কারী মো. সায়েম। ঘোষাণা অনুযায়ী আগামী ২৫, ২৬ ও ২৭ ডিসেম্বর ২০২০ প্রথম পর্ব এবং ১, ২ ও ৩ জানুয়ারি ২০২১ দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমা অনুষ্ঠিত হবে। আগামী ১৩ থেকে ১৭ নভেম্বর পর্যন্ত ইজতেমা ময়দানে সা'দ অনসুসারীদের পাঁচ দিনের জোড় ইজতেমা অনুষ্ঠিত হবে। জোবায়ের পন্থিদের আগামী বিশ্বইজতেমার তারিখ : গত ১২ জানুয়ারি ইজতেমার প্রথম পর্বের আখেরি মোনাজাত শেষে মাওলানা জোবায়ের অনুসারীরা তাদের ইজতেমার দুই দফার তারিখ ঘোষণা করেন। সেই ঘোষণা অনুসারে তাদের ইজতেমার প্রথম ধাপ হবে ৮, ৯ ও ১০ জানুয়ারি এবং দ্বিতীয় ধাপ অনুষ্ঠিত হবে ১৫, ১৬ ও ১৭ জানুয়ারি। মোনাজাত শেষে যানজট ও যানজট : আখেরি মোনাজাত শেষ হওয়ার পরপরই বিভিন্ন স্থান থেকে আশা মানুষ নিজ গন্তব্যে পৌঁছার চেষ্টা করে। আগে যাওয়ার জন্য মুসলিস্নরা তাড়াহুড়া করতে শুরু করে। এতে টঙ্গীর কামারপাড়া সড়ক, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক, টঙ্গী-কালীগঞ্জ সড়কের আহসান উলস্নাহ মাস্টার উড়াল সেতু ও আশপাশের সড়ক-মহাসড়ক এবং সংযোগ সড়কগুলোতে সৃষ্টি হয় দীর্ঘ জনজট ও যানজট। গাজীপুর ও টঙ্গীর সকল কারখানায় ছুটি: বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের আখেরি মোনাজাত উপলক্ষে গাজীপুর ও টঙ্গীর সকল কারখানায় ছুটি ছিল। ফলে এবার এসব কারখানার শ্রমিকদের ইজতেমায় আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে সমস্যা হয়নি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে