বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
ঢাবির সাত কলেজ

সমন্বয় না থাকায় ইচ্ছা মাফিক ফি আদায়

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত রাজধানীর গুরুত্বপূণর্ সাতটি কলেজের শিক্ষাথীর্রা আবারও স্বেচ্ছাচারিতার মুখে পড়েছেন এবার অভিযোগ সমন্বয়হীনতার
যাযাদি রিপোটর্
  ১৭ আগস্ট ২০১৮, ০০:০০

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত রাজধানীর গুরুত্বপূণর্ সাতটি কলেজের শিক্ষাথীর্রা আবারও স্বেচ্ছাচারিতার মুখে পড়েছেন। এবার অভিযোগ সমন্বয়হীনতার। পরীক্ষা ফি গ্রহণ, ভতির্ বা অন্যান্য বিষয়ে কলেজগুলোর জন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কোনো নিদের্শনা না থাকায় বিভিন্ন কলেজ তাদের সুবিধামতো ফি আদায় করছে। আর এ সব সমন্বয়হীনতা ও স্বেচ্ছাচারিতার কারণে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে আবারও ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছেন শিক্ষাথীর্রা।

সাম্প্রতি অধিভুক্ত কলেজগুলোর তৃতীয় বষের্র শিক্ষাথীের্দর চ‚ড়ান্ত পরীক্ষার ফরম পূরণের টাকা জমা দেয়ার আদেশ প্রদান করা হয়েছে। এতে দেখা যাচ্ছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ থাকাকালে ফরম পূরণ করতে ও ভতির্ হতে যে টাকা জমা দিতে হতো এখন তার চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ অথর্ জমা দিতে হচ্ছে। তার চেয়ে বড় বিষয় হলো, একই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ হলেও সাত কলেজের কোনোটিরই ভতির্ ও ফরম পূরণের ফি-এর মধ্যে কোনো সমন্বয় নেই। ফলে প্রত্যেক কলেজ তাদের ইচ্ছাধীন ফরম পূরণ ও ভতির্ ফি আদায় করছে। বাড়তি ফি-এর বিষয়ে শিক্ষাথীর্রা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করলেও তাকে যথাথর্ গুরুত্ব দেয়ার প্রয়োজন মনে করছে না বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলোর প্রশাসন।

বিষয়টি নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কতৃর্পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা জানিয়েছেন, বিষয়টিতে কোনো ধরনের নিয়মের ব্যত্যয় হয়ে থাকলে তারা তা দেখবেন। তবে একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের কতৃর্পক্ষ জানিয়েছেন, সাত কলেজ ইস্যুতে তাদের নিজেদের মধ্যেও মতানৈক্য রয়েছে। আর কারণ হিসেবে তারা বাস্তবতা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামথের্্যর মধ্যকার সমন্বয়হীনতাকে উল্লেখ করেছেন। আর কলেজগুলোর কতৃর্পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা জানিয়েছেন, এ বিষয়ে ঢাবি কতৃর্পক্ষের তরফ থেকে কোনো নিদের্শনা নেই। ফলে তারা নিজেদের মতো করে ফি-এর বিষয়টি নিধার্রণ করেছেন।

১২ থেকে ১৮ আগস্টের মধ্যে কলেজগুলোর তৃতীয় বষের্র শিক্ষাথীের্দর চ‚ড়ান্ত পরীক্ষার ফরম পূরণ এবং ভতির্ বাবদ যে টাকা জমা দিতে বলা হয়েছে তা একেক কলেজে একেক রকম। এ সব কলেজের ভতির্র টাকার পরিমাণ সংশ্লিষ্ট নোটিশ বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ফরম পূরণ ও ভতির্ বাবদ কোনো কলেজে টাকা জমা দিতে হবে পঁাচ হাজার টাকা আবার কোনো কলেজে আট হাজার টাকা। বড় ধরনের ব্যবধান থাকলেও সংশ্লিষ্টরা বলছে, বিষয়টি তাদের কাছে স্পষ্ট নয়। আবার এ সব কলেজের একেকটির কতৃর্পক্ষের সঙ্গে কথা বলেও পাওয়া গেছে একেক রকমের বক্তব্য। কেউ বলছেন, তারা নীতিমালা মেনে এ ফি নিধার্রণ করেছেন। আবার কেউ বলছেন, তারা নিজেদের মতো করেই এটি দিয়েছেন। তবে এ সব কলেজের অভিভাবক প্রতিষ্ঠান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কতৃর্পক্ষ বলছে তারা এ বিষয়ে কোনো নীতিমালা বা নিদের্শনা দেয়নি।

ফরম পূরণ ও ভতির্র যে নোটিশ দেয়া হয়েছে তার মধ্যে ঢাকা কলেজের নোটিশ ঘেঁটে দেখা গেছে, প্রতিষ্ঠানটি এর শিক্ষাথীের্দর জন্য ভতির্ ফি ও বেতন ২৮০৬ টাকা নিধার্রণ করেছে। আর পরীক্ষার ফরম পূরণের জন্য ২২০০ টাকা নিধার্রণ করেছে। সবমিলে খরচ পড়ছে ৫ হাজার ছয় টাকা।

তবে একই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ অন্য একটি কলেজ সরকারি বাংলা কলেজের নোটিশ ঘেঁটে দেখা গেছে, এখানে ভতির্ ও বেতন মিলে ধরা হয়েছে ৪ হাজার ৩৫ টাকা। আর ফরম পূরণ বাবদ সবোর্চ্চ ৩ হাজার ২৫ টাকা নিধার্রণ করা হয়েছে। ফলে মোট খরচ পড়ছে, ৭ হাজার ৬০ টাকা। আবার তিতুমির কলেজে ভতির্ ও বেতম মিলে ৩২১৬ টাকা এবং পরীক্ষার ফরম পূরণ বাবদ ২৪০০ টাকা নেয়া হচ্ছে। সবমিলে এ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষাথীের্দর খরচ দঁাড়াচ্ছে ৫ হাজার ৬১৬ টাকা। বাকি কলেজগুলোরও ফরম পূরণ ও অন্যান্য ফি’তে এমন বৈষম্য লক্ষ্য করা গেছে।

এদিকে দেশের কোনো সরকারি কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইনকোসর্ পরীক্ষার জন্য ফি গ্রহণ করা না হলেও এবার সাত কলেজের কয়েকটি ইনকোসর্ বাবদও ফি আদায় করেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কতৃর্পক্ষ জানিয়েছে তারা নিজেরা ইনকোসের্ কোনো ধরনের ফি গ্রহণ করে না। এবং সাত কলেজকেও এ ধরনের কোন নিদের্শনা দেয়া হয়নি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচাযর্ অধ্যাপক ড. নাসরিন আহমেদ যায়যায়দিনকে বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমি কিছু বলতে পারছি না। এ বিষয়ে আমার কাছে সঠিক তথ্য নেই। তবে আমাদের এখানে ফরম পূরণের ফি অনেক কম। বিষয়গুলো ওই সব কলেজের কতৃর্পক্ষই নিধার্রণ করেছেন। আমরা এ বিষয়ে কোনো নিদের্শনা দেইনি।’

তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে যায়যায়দিনের কাছে বলেন, ‘আমাদের ৩৫ হাজার শিক্ষাথীর্র সঙ্গে একবারে প্রায় দুই লাখ শিক্ষাথীর্, আমি বলবো উপর থেকে চাপিয়ে দিয়ে আমাদের উপর তীব্র চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে। এটা নিয়ে নানা ধরনের রাজনীতি হচ্ছে। ৩৫ হাজার শিক্ষাথীর্র প্রশাসনকে যদি হঠাৎ করে আড়াই লাখ শিক্ষাথীর্র দায়িত্ব দিয়ে দেয়া হয় তবে ওই প্রশাসন আর সঠিকভাবে কাজ করতে পারে না। কলেজগুলোকে আমাদের মতো করে গুছিয়ে নিতে আমাদের আরও সময় প্রয়োজন। এটা সবাইকে বুঝতে হবে। আমরা কলেজগুলোর শিক্ষাথীের্দর সমস্যা বুঝি। কিন্তু আমরাতো আমাদের সামথের্্যর বাইরে যেতে পারছি না। এটা কেউ বুঝতে চায় না।’

এ বিষয়ে ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ মোয়াজ্জেম হোসেন মোল্লাহ যায়যায়দিনকে বলেন, ‘এগুলো আমরা সরকারি নীতিমালা অনুসারে করেছি। অন্য কোনো কলেজের বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারবো না। তবে আমার কলেজ নিয়ম মেনেই এটা করেছে।’

বিষয়টি নিয়ে সরকারি বাংলা কলেজে যোগাযোগ করলে এখানকার কতৃর্পক্ষ কথা বলতে অনাগ্রহ প্রকাশ করেন। তিতুমির কলেজের কতৃর্পক্ষের সঙ্গেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<8271 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1