শনিবার, ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১

আজ হানাদারমুক্ত হয় মির্জাপুর

যাযাদি রিপোর্ট
  ১৩ ডিসেম্বর ২০১৯, ০০:০০
আজ হানাদারমুক্ত হয় মির্জাপুর

১৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১। মুক্তিযুদ্ধে পুরো বাংলাদেশের চূড়ান্ত বিজয়ের মাত্র দুটি দিন বাকি। চারদিক থেকে আসতে থাকে মুক্তিসেনাদের বিজয়ের খবর। একই সঙ্গে বিভিন্ন স্থান থেকে আসতে থাকে বাংলাদেশের মানচিত্রখচিত লাল-সবুজ পতাকা ওড়ানোর খবর। মুক্তিযোদ্ধারা যতই ঢাকার দিকে অগ্রসর হচ্ছিলেন, পাকিস্তানি হায়েনাদের মনোবলেও ততই ধস নামছিল। ডিসেম্বরের প্রথম দিন থেকে ১২ তারিখ পর্যন্ত শত্রুমুক্ত হয় দেশের বিভিন্ন এলাকা। এর ধারিবাহিকতায় ১৩ ডিসেম্বর টাঙ্গাইলের মির্জাপুর হানাদার মুক্ত হয়।

টাঙ্গাইল জেলার ইতিহাস অনুযায়ী, ১৯৭১ সালে দীর্ঘ ৮ মাস ১০ দিন যুদ্ধের পর মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে পাকহানাদারদের আত্মসমর্পণের মাধ্যমে মির্জাপুরে উড়ে সবুজ জমিনের ওপর লাল সূর্যখচিত স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা। এর আগে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের 'যার যা কিছু আছে, তাই নিয়ে শত্রম্নর মোকাবিলা' করার আহ্বানে সাড়া দিয়ে টাঙ্গাইলে গঠিত হয় সংগ্রাম পরিষদ। এর নেতৃত্বে ছিলেন সাবেক সাংসদ ফজলুর রহমান ফারুক এবং বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম।

একাত্তরের ৩ এপ্রিল ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কসংলগ্ন গোড়ান সাটিয়াচড়ায় পাকসেনারা আসামাত্র সংগ্রাম পরিষদের সদস্যরা নরঘাতকদের ওপর গুলি চালান। দীর্ঘ সম্মুখ যুদ্ধে ১০৭ জন মুক্তিপাগল বাঙালিসহ শহিদ হন ২৩ জন ইপিআর সদস্য। ৩৫০ জন পাকবাহিনী হতাহতের পর গোড়ান সাটিয়াচড়া মুক্ত হলেও পাকসেনার ঘাঁটি করে বসে উপজেলা সদর এবং ভড়রা ও নরদানা গ্রামে। পাকসেনারা আশপাশের গ্রামে

লুটপাট আর অগ্নিসংযোগ করে নিরীহ ২৮ জন বাঙালিকে হত্যা করে।

৭ মে দানবীর রনদা প্রসাদ সাহা, তার একমাত্র ছেলে ভবানী প্রসাদ সাহা এবং ৮ মে থানা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক আবুল হোসেনের বৃদ্ধ পিতা জয়নাল সরকারকে পুড়িয়ে হত্যা করে। একই দিন মির্জাপুর ও আন্ধরা গ্রামের রাখাল চন্দ্র সাহা, সুদাম চন্দ্র সাহা, নিতাই মেম্বার, পান্না লাল, জগবন্ধু রায়সহ ৩৮ জনকে হানাদার এবং এদেশীয় দোসররা হত্যা করে লাশ লৌহজং নদীতে ফেলে দেয়। সেদিনের সেই ভয়াবহ স্মৃতি মনে করে মির্জাপুরবাসী আজও কাঁদে।

মির্জাপুরকে হানাদারমুক্ত করার জন্য ১৮ নভেম্বর রাতে মুক্তিযোদ্ধারা চারদিক থেকে ঘিরে ফেলেন। আজাদ কামাল বীরপ্রতীক, এমএ সবুর বীরপ্রতীক ও রবিউল কমান্ডারের নেতৃত্বে ১৩ ডিসেম্বর হানাদারমুক্ত হয় মির্জাপুর। ১২ ডিসেম্বর রাতে দেশমাতৃকার সূর্যসন্তান, বীরযোদ্ধারা মির্জাপুরের বংশাই, লৌহজং এবং চতুর্দিকে পাকসেনাদের ঘিরে ফেলেন। শুরু হয় তুমুল সম্মুখ যুদ্ধ। প্রায় ৫শত মুক্তিযোদ্ধা সম্মুখ যুদ্ধে অংশ নিয়ে পাকসেনাদের পরাজিত করেন এবং পাকিস্তানি পতাকা নামিয়ে সেখানে মুক্তিযোদ্ধারা উড়িয়ে দেন স্বাধীন বাংলার পতাকা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<79693 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1