শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

বড় পরিবর্তন আসছে আ'লীগের শীর্ষ পদে

প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় এবং কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুল আ'লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে আসার সম্ভাবনা রয়েছে
নতুনধারা
  ১১ ডিসেম্বর ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সম্মেলনকে সামনে রেখে সাধারণ সম্পাদক, সম্পাদকমন্ডলী ও সভাপতিমন্ডলীর সদস্যসহ শীর্ষ পদে ব্যাপক পরিবর্তন আসছে। বাদ পড়তে পারেন বর্তমান কমিটির অনেকেই। তবে ভালো কাজ করা নেতাদের পদোন্নিত ছাড়াও তৃণমূল এবং সহযোগী সংগঠনের ত্যাগী নেতাদের থেকে কয়েকজনকে কেন্দ্রে দায়িত্ব দেয়া হতে পারে। এক্ষেত্রে সভাপতি পদে পরিবর্তনের কোনো সম্ভাবনা নেই। বর্তমান সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই পুনরায় আওয়ামী লীগের সভাপতি হচ্ছেন এটা নিশ্চিত।

আওয়ামী লীগের দলীয় সূত্রগুলো বলছে, বর্তমান সময়ে দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় ও দক্ষ নেতা শেখ হাসিনা। তার নেতৃত্বের কারণেই পর পর তিনবার ক্ষমতায় এসেছে দল। বর্তমানে সভাপতি পদে শেখ হাসিনার কোনো বিকল্প নেই। তাই তিনিই আগামীতে দলের সভাপতি হিসেবে থাকছেন। তাছাড়া সম্মেলনে আকর্ষণ তৈরি হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর দুই সন্তানকে নিয়ে।

দলের একাধিক সিনিয়র নেতা জানান, এবারের সম্মেলনে সভাপতি পদে পরিবর্তন না হলেও অন্যান্য পদে পরিবর্তন ও ব্যাপক রদবদল হতে পারে। বিতর্কিতদের বাদ দিয়ে নতুন নেতৃত্ব নিয়ে আসার চিন্তা-ভাবনা চলছে। কেন্দ্রীয় কমিটিতে আসার সম্ভাবনা রয়েছে এমন নেতাদের সব তথ্য উপাত্ত প্রধানমন্ত্রীর কাছে রয়েছে, তা যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। তাছাড়া প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় এবং কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুল আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে আসার সম্ভাবনা রয়েছে।

পরিবর্তন আসতে পারে দলের সাধারণ সম্পাদক পদে। তাই বরাবরের মতো এবারও আলোচনার মূল কেন্দ্রবিন্দুতে চলে এসেছে সাধারণ সম্পাদক পদটি। কে হচ্ছেন আওয়মী লীগের পরবর্তী সাধারণ সম্পাদক এ নিয়ে দলের ভেতর ও বাইরে চলছে নানা আলোচনা।

দলের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের আবারও সাধারণ সম্পাদক থাকতে আগ্রহী। এরপরও এ পদে পরিবর্তন আসলে দলের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর মধ্যে যে কেউ সাধারণ সম্পাদক হতে পারেন।

এদিকে, কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে কে কে বাদ যাচ্ছেন, আর কারা নতুন করে আসছেন, তা নিয়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও ধানমন্ডির দলীয় সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে পদপ্রত্যাশী নেতাকর্মীদের আনাগোনা চলছে। সেখানেও নেতাকর্মীদের মধ্যে একই আলোচনা। নতুন কারা আসছেন, আর কারা বাদ যাচ্ছেন।

দলীয় সূত্রমতে, বর্তমান কমিটির অনেক সিনিয়র নেতাই দল থেকে ছিটকে পড়তে পারেন। বিতর্কিত নেতাদের দলীয় পদ থেকে সরিয়ে দেয়া হবে। মন্ত্রীদের দলের শীর্ষ পদে না রাখার সম্ভাবনাই বেশি। কারণ কয়েক বছর ধরে দল ও সরকার পরিচালনায় আলাদা নেতৃত্ব তৈরি করতে চাচ্ছে আওয়ামী লীগ।

এবার সভাপতিমন্ডলীতে বেশ বড় পরিবর্তন আসতে পারে। অনেকেরই স্থান হবে উপদেষ্টা পরিষদে। উপদেষ্টা পরিষদ থেকে তোফায়েল আহমেদ ও আমির হোসেন আমুকে সভাপতিমন্ডলীতে দেখা যেতে পারে। যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, ডা. দীপু মণি, আব্দুর রহমান এই চারজনের দুইজন সভাপতিমন্ডলীতে জায়গা পেতে পারেন। সাংগঠনিক সম্পাদকদের মধ্যে বিএম মোজাম্মেল হক, আফম বাহাউদ্দিন নাছিম ও খালিদ মাহমুদ চৌধুরী পদোন্নতি পেতে পারেন।

সম্পাদকমন্ডলী থেকে পদোন্নতি পেতে পারেন, প্রচার সম্পাদক হাছান মাহমুদ, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক ইঞ্জি. আবদুস সবুর, বন ও পরিবেশ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন ও উপ-দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপস্নব বড়ুয়া।

নতুনদের মধ্যে আলোচনায় আছেন, বাগেরহাট-২ আসনের এমপি শেখ সারহান নাসের তন্ময়, বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক ও নড়াইল-২ আসনের সাংসদ মাশরাফি বিন মর্তুজা, সংসদের হুইপ ও দিনাজপুর-৩ আসনের এমপি ইকবালুর রহিম প্রমুখ। তাছাড়া প্রবীণ নেতা ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ.ক.ম মোজাম্মেল হক, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক এপিএস সাইফুজ্জামান শিখর, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সদ্যবিদায়ী কমিটির সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খানসহ তৃণমূল থেকে বেশ কয়েকজন নেতাকে কেন্দ্রীয় সংগঠনের বিভিন্ন পদে দেখা যেতে পারে।

গত সম্মেলনে সাবেক ছাত্র নেতাদের মধ্যে ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এনামুল হক শামীম সাংগঠনিক সম্পাদক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি দেলোয়ার হোসেন বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক হয়েছিলেন। এবারও সাবেক ছাত্রনেতাদের মধ্যে আলোচনায় আছেন, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি লিয়াকত সিকদার, সাবেক সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম বাবু, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইসহাক আলী খান পান্না, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাহমুদ হাসান রিপন, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা নুরুল আলম পাঠান মিলন। নারী নেত্রীদের মধ্যে সাবেক ছাত্রলীগ নেত্রী ও সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি রুবিনা আক্তার মিরা, সাবেক সাংসদ ফজিলাতুন নেছা বাপ্পি, সাবেক সংরক্ষিত আসনের সাংসদ সানজিদা খানমকে কেন্দ্রে দেখা যেতে পারে। পেশাজীবীদের মধ্যে শিক্ষাবিদ ড. সেলিম মাহমুদ, ডা. নুজহাত চৌধুরী শম্পা আলোচনায় আছেন।

এদিকে, বেশ আগেই সভাপতির পদ ছাড়া দলীয় নেতৃত্বে বড় পরিবর্তনের আভাস দিয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তাছাড়া ক্যাসিনোসহ বিতর্কিত কর্মকান্ডে জড়িত নেতাদের বাদ দেয়ার প্রক্রিয়া চলছে। প্রায় সব নেতাদের নিয়ে সরকারি-বেসরকারি গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্ট প্রধানমন্ত্রীর হাতে রয়েছে। ওই রিপোর্টের ভিত্তিতে একটি তালিকা করেছেন তিনি। অর্থাৎ যারা ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকান্ডের সঙ্গে জড়িত তারা আগামী কমিটিতে থাকছেন না।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর অন্যতম সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক যায়যায়দিনকে বলেন, স্বচ্ছ ও সুন্দর কমিটি গঠনের কাজ এগিয়ে চলছে। প্রধানমন্ত্রী একটি পরিচ্ছন্ন ও শক্তিশালী দল গঠন করতে চান। সে হিসেবে অনেক নতুন নেতৃত্ব আসতে পারে। আবার পুরনোদের মধ্যেও কেউ কেউ বাদ পড়তে পারে। এটা দলের স্বাভাবিক প্রক্রিয়ার অংশ বলে জানান তিনি।

সভাপতিমন্ডলীর আরেক সদস্য লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) ফারুক খান বলেন, আওয়ামী লীগের বিগত কমিটিগুলোর দিকে তাকালেই বোঝা যায়, দলে নতুন মুখ কিভাবে এসেছে। এবারও নবীন-প্রবীণের সমন্বয়ে কমিটি হবে। দলের সঙ্গে যারা সম্পৃক্ত রয়েছে, তাদেরকেই কমিটিতে স্থান দেয়া হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<79385 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1