শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ইলিয়াস কাঞ্চন কেন বাস-ট্রাক শ্রমিকদের টার্গেট হলেন?

যাযাদি ডেস্ক
  ২২ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০০
ইলিয়াস কাঞ্চন

নতুন সড়ক পরিবহণ আইন সংশোধনের দাবিতে গত কয়েকদিন বাংলাদেশের বাস-ট্রাক শ্রমিকরা যে 'কর্মবিরতি' পালন করেছেন, সেখানে চলচ্চিত্র নায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনের ছবিকে হেয়প্রতিপন্ন করার অভিযোগ উঠেছে।

ইন্টারনেটভিত্তিক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া বিভিন্ন ছবিতে দেখা যাচ্ছে, ইলিয়াস কাঞ্চনের ছবি সংবলিত ব্যানার টাঙিয়ে কিংবা কুশপুত্তলিকা তৈরি করে সেখানে জুতার মালা দেওয়া হয়েছে।

এ ব্যাপারে তিনি বিবিসি বাংলাকে বলেন, 'শ্রমিকদের কর্মকান্ড তাকে ভীষণ কষ্ট দিয়েছে। কখনো কখনো খারাপ লাগে। এতটাই খারাপ লাগে যে, যাদের জন্য আমি এত কিছু জলাঞ্জলি দিয়েছি কোনো কিছু পাওয়ার আশায় নয়। আমি আমার সিনেমার ক্যারিয়ার শেষ করেছি নিরাপদ সড়কের জন্য। আমার সঞ্চিত অর্থ ব্যয় করেছি।'

এসব ছবির মাধ্যমে কাঞ্চনের বিরুদ্ধে বাস-ট্রাক শ্রমিকদের পুঞ্জিভূত ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে।

প্রশ্ন হচ্ছে, ইলিয়াস কাঞ্চনের প্রতি শ্রমিকদের এত ক্ষোভের কারণ কী?

ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনা রোধের জন্য যে আন্দোলন সেটি তার মাধ্যমেই শুরু হয়েছিল। তার প্রতি শ্রমিকদের ক্ষিপ্ত হওয়ার এটিই কারণ বলে মনে করেন তিনি। শ্রমিকরা মনে করেন, সড়ক দুর্ঘটনায় কারও হাত নেই। এটা আলস্নাহর ইচ্ছায় হয়। তিনি কেন

বিষয়টা নিয়ে বলবেন? তারা এটাই মনে করে।'

তবে ট্রাক মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সদস্য সচিব তাজুল ইসলাম স্বীকার করেন যে সড়ক পরিবহণ আইন নিয়ে ইলিয়াস কাঞ্চন বিভিন্ন সময় টেলিভিশনে নানা মন্তব্য এবং দাবি তোলার কারণে শ্রমিকদের কেউ কেউ তার ওপর ক্ষুব্ধ হতে পারে।

তিনি বলেন, 'আইন পাস করবে সরকার। উনি (ইলিয়াস কাঞ্চন) যেখানে বলে আইন পাস করল না কেন, আরও আইন হওয়া উচিত- এগুলো অনেক সময় শ্রমিকরা মনে হয় শোনে, সে জন্য আমার মনে হয় একটা উত্তেজনা আইসা পড়ে।'

তবে ইলিয়াস কাঞ্চন মনে করেন, 'তাকে হেয়প্রতিপন্ন করার পেছনে মালিক-শ্রমিক নেতাদের উসকানি রয়েছে। এ শ্রমিকরা নেতাদের কথা দ্বারা প্রভাবিত। নেতারা যা বলে শ্রমিকরা তা-ই শোনে। তাদের বলা হয়, সড়কে যা কিছু হোক না কেন আমরা আছি। সেটা ন্যায় হোক, অন্যায় হোক, যা কিছু হোক। এটা শ্রমিকরা ঠিক এককভাবে করেনি। শ্রমিক-মালিক সংগঠনের নেতৃত্ব যারা দিচ্ছেন তারাই এ বিষয়টি করেছেন।'

তবে শ্রমিক নেতা তাজুল ইসলাম দাবি করেন, ইলিয়াস কাঞ্চন তাদের প্রতিপক্ষ নয়। লাখ লাখ শ্রমিকের ভেতরে উত্তেজনা হতেই পারে। শ্রমিকের ব্যাপারটা কন্ট্রোল করা অনেক কষ্ট।

ইলিয়াস কাঞ্চন প্রশ্ন তোলেন, 'মালিক সমিতির নামে শ্রমিক সমিতির নামে যে কোটি কোটি টাকা চাঁদাবাজি করে, সে চাঁদা কোনো উন্নয়নের কাজে লাগে?'

তিনি অভিযোগ করেন, মালিক এবং শ্রমিক সংগঠনগুলো শ্রমিকদের উন্নয়ন চায় না। কারণ শ্রমিকরা যদি যথাযথ ড্রাইভিং লাইসেন্স নিয়ে কাজ করে তাহলে তার কাছ থেকে সংগঠনগুলো কোন চাঁদা নিতে পারবে না।

মালিক এবং শ্রমিক সংগঠনগুলো দাবি করেছে গত কয়েকদিনের 'কর্মবিরতি'র সঙ্গে সংগঠনের কোনো সম্পর্ক নেই। শ্রমিকরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে এ কর্মবিরতি পালন করেছে বলে তাদের দাবি।

ইলিয়াস কাঞ্চন প্রশ্ন তোলেন, মালিক এবং শ্রমিক সংগঠনগুলোর নির্দেশে যদি আন্দোলন না হয়ে থাকে, তাহলে তাদের নির্দেশে আন্দোলন প্রত্যাহার হয় কীভাবে?

বুধবার রাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে বাস-ট্রাক মালিক-শ্রমিক সংগঠনগুলোর বৈঠকের পর কর্মবিরতি প্রত্যাহার করেছেন শ্রমিকরা।

সে বৈঠকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন, শ্রমিকদের দাবি অনুযায়ী নতুন সড়ক পরিবহণ আইন খতিয়ে দেখার জন্য সড়ক পরিবহণ মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করা হবে।

ইলিয়াস কাঞ্চন মনে করেন, আইনের কোন বিষয় নিয়ে ছাড় দেওয়া ঠিক হবে না। তিনি বলেন, 'এবার যদি আমরা হেরে যাই, তাহলে হেরে যাবে পুরো বাংলাদেশ।' বিবিসি বাংলা

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<76587 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1