শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

৫৮ বছরে এবার সর্বোচ্চ লবণ উৎপাদন

নতুনধারা
  ২০ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক

দেশে লবণের বাজার স্বাভাবিক রয়েছে, কোনো ধরনের ঘাটতি নেই। এছাড়া নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহ থেকে শুরু হয়েছে লবণের মৌসুম। কক্সবাজারের উপকূলীয় এলাকাগুলোতে লবণ উৎপাদন হচ্ছে। গত মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৮ লাখ মেট্রিক টন। বিপরীতে উৎপাদন হয়েছে ১৮ লাখ ২৪ হাজার মেট্রিক টন। যা বিগত ৫৮ বছরের লবণ উৎপাদনের রেকর্ড ছাড়িয়েছে। গেল মৌসুমের উদ্বৃত্ত প্রায় ৬ লাখ মেট্রিক টন লবণ দিয়ে আরও অন্তত দুই মাস চলবে।

মঙ্গলবার দুপুরে কক্সবাজারের একটি হোটেলে বাংলাদেশ লবণ মিল মালিক সমিতির সাধারণ সভায় মিল মালিকরা এসব কথা জানান।

লবণ মিল মালিকরা আরও বলেন, অসাধু ব্যবসায়ীরা লবণের কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে দাম বৃদ্ধির অপচেষ্টায় লিপ্ত। লবণের কেজি ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে অপপ্রচার চালিয়ে স্বয়ংসম্পূর্ণ লবণ শিল্পকে ধ্বংসের অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে। অপপ্রচারকারীদের চিহ্নিত করে দ্রম্নত আইনের আওতায় আনারও দাবি জানান তারা।

সভায় মিল মালিক সমিতির সভাপতি নুরুল কবির বলেন, 'বর্তমানে কক্সবাজারে তিন লাখ মেট্রিক টনের ওপরে লবণ উদ্বৃত্ত রয়েছে। সারা দেশের মোকামগুলোতে রয়েছে আরও প্রায় তিন লাখ মেট্রিক টন লবণ। এরপরও অসাধু কিছু মিল মালিক মানব স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর সোডিয়াম সালফেট বাজারে সয়লাব করছে। বন্ড লাইসেন্স, কাস্টিং সল্ট ইত্যাদি নামে লবণ আমদানি করছিল একটা শ্রেণি। আমাদের কঠোরতায় ওই রকম লবণ আমদানি বন্ধ করতে সক্ষম হয়েছি।'

লবণের জাতীয় চাহিদা নিরূপণে সবাইকে এক টেবিলে বসতে হবে উলেস্নখ করে তিনি বলেন, 'আমরা লবণ ব্যবসায়ী ঐক্যবদ্ধ হলে এই শিল্পকে বাঁচানো সম্ভব। ঘরের সমস্যা ঘরেই সমাধান করা দরকার'।

সভায় আরও বক্তব্য রাখেন সমিতির সহ-সভাপতি মোতাহেরুল ইসলাম, আফতাব হোসেন, মাস্টার আব্দুল কাদের, এম কায়সার ইদ্রিস, মো. ফজলুল হক, ওমর ফারুক মিঠু, সাজ্জাদ হোসেন চৌধুরী প্রমুখ।

সভায় সমিতির কার্যনির্বাহী সদস্য মো. আবু হানিফ ভুঁইয়া, মো. শহিদুজ্জামান শরিফ, মো. কামাল দেওয়ান, মো. আবুল কালাম আজাদ, হাজি এস এম ইজ্জত আলী, মীর আহম্মদ, সাদেক মোহাম্মদ, এম এ তাহের, গাজী সাব্বির আহমদ, অহিদুস সামাদ হেলাল, মো. কুতুব উদ্দিন, ফরিদুল ইসলাম, শেখ ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী, অছিয়র রহমান চেয়ারম্যান, জাফর আহম্মদ, মো. কামাল শরীফসহ ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রাম, পটিয়াসহ সারা দেশের মোকাম থেকে আসা দেড় শতাধিক মিল মালিক উপস্থিত ছিলেন।

মিল মালিকরা বলেন, আয়োডিনের সর্বোচ্চ দাম এক হাজার থেকে ১২০০ টাকা হওয়া দরকার। কিন্তু আমাদের কিনতে হচ্ছে ৩০০০ টাকা পর্যন্ত দামে। আয়োডিনের দাম কমানো প্রয়োজন।

মিল মালিকদের দাবি, কালোবাজারি, উৎপাদিত লবণের ন্যায্যমূল্য না পাওয়া ও বিষাক্ত সোডিয়াম সালফেটের কারণে ধ্বংস হচ্ছে দেশীয় লবণশিল্প। মাঠে ও মিলে পড়ে রয়েছে অন্তত ৬ লাখ মেট্রিক টন অবিক্রীত লবণ। কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে কালোবাজারিদের লবণ আমদানির কারণে দেশীয় লবণ খাত মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারছে না। পিছিয়ে যাচ্ছে দেশের এই গুরুত্বপূর্ণ খাত। দরপতন অব্যাহত থাকলে সামনের মৌসুমে লবণ চাষিরা মাঠে যাবে কি-না সন্দেহ রয়েছে।

সূত্র জানায়, অপরিশোধিত লবণ পরিশোধনের পর খাবার উপযুক্ত ও বাজারজাত করতে কেজিতে সর্বোচ্চ ১ থেকে দেড় টাকা খরচ পড়বে। সে হিসেবে এক কেজি লবণের দাম হওয়ার কথা সাড়ে ৫ টাকার নিচে। কিন্তু বাজারে ভোক্তারা কিনছে প্রায় ৪০ টাকায়। লবণ চাষিদের অবহেলা, রাঘববোয়াল ও শিল্প কারখানার মালিকদের প্রতি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের 'দরদি মনোভাব'-এর কারণে এমনটি হচ্ছে বলে ধারণা সংশ্লিষ্টদের।

বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশন (বিসিক) কক্সবাজারের লবণ শিল্প উন্নয়ন প্রকল্প কার্যালয় সূত্র জানায়, ২০১৯-২০ মৌসুমে বিসিকের চাহিদা ১৮ লাখ ৪৯ হাজার মেট্রিক টন। লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৮ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন। ২০১৮-১৯ মৌসুমে কক্সবাজার জেলায় উৎপাদনযোগ্য লবণ জমির পরিমাণ ছিল ৬০ হাজার ৫৯৬ একর। চাষির সংখ্যা ২৯ হাজার ২৮৭ জন। এই মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৮ লাখ মেট্রিক টন। বিপরীতে উৎপাদন হয়েছে ১৮ লাখ ২৪ হাজার মেট্রিক টন। যা বিগত ৫৮ বছরের লবণ উৎপাদনের রেকর্ড ছাড়িয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<76332 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1