মঙ্গলবার, ০১ জুলাই ২০২৫, ১৬ আষাঢ় ১৪৩২

পিতৃত্ব নিয়ে সন্দেহের জেরে সন্তানকে খুন

যাযাদি ডেস্ক
  ২০ অক্টোবর ২০১৯, ০০:০০
পিতৃত্ব নিয়ে সন্দেহের জেরে সন্তানকে খুন
পিতৃত্ব নিয়ে সন্দেহের জেরে সন্তানকে খুন

ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলায় হানিফ প্রামাণিক নামে এক বাবার বিরুদ্ধে দুই বছর চার মাস বয়সি সন্তান রহমত প্রামাণিককে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার রাতে উপজেলার ভাষানচর ইউনিয়নের চাঁদপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। রাতেই বাড়ির পাশের ধানখেত থেকে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় শনিবার সদরপুর থানায় হত্যা মামলা করা হয়।

শিশুটির মা স্বপ্না আক্তার বলেন, 'কিছুদিন সন্তান নিয়ে কথাকাটাকাটি চলছিল। সন্তানকে আমার স্বামী স্বীকার করছিল না। শুক্রবার আমি আমার বাবার বাড়ি থেকে স্বামীর বাড়ি আসি। এরপর থেকে সে আমার সঙ্গে কথাকাটাকাটি শুরু করে। রাত ৯টার দিকে আমি ঘুম থেকে জেগে দেখি আমার ছেলে নেই। এরপর অনেক খোঁজাখুঁজি করে বাড়ির পাশের ধানখেতে আমার সন্তানের মরদেহ পাই। পরে থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায়। এ ঘটনার পর থেকে আমার স্বামী পলাতক।'

তিনি বলেন, 'আমার স্বামীকে বলেছিলাম প্রয়োজন হলে ডিএনএ টেস্ট করতে। কিন্তু সে কোনো কথা না শুনেই আমার শিশুসন্তানকে মেরে ফেলল।'

শিশুর মামা লোকমান শেখ বলেন, 'বিয়ের পর থেকেই আমার বোন এবং ভগ্নিপতির মধ্যে বিবাদ লেগেই থাকত। আমার ভাগ্নেকে হত্যা করেছে আমার ভগ্নিপতি। ভগ্নিপতির সঙ্গে তার চাচাতো বোনের পরকীয়ার সম্পর্ক রয়েছে।'

স্থানীয়রা জানান, 'স্বপ্না আক্তার ও হানিফ প্রামাণিক দম্পতির মধ্যে বিবাদ চলছিল। হানিফ বিভিন্ন সময় বলত ওই ছেলে তার নয়, স্বপ্নার পরকীয়ার ফসল। এ কারণেই শিশুটিকে হত্যা করেছে হানিফ।

তারা আরও জানান, হানিফ ও স্বপ্নার বিয়ে হয় তিন বছর আগে। ছেলের বয়স দুই বছর চার মাস। এ কারণে হানিফ ওই শিশুসন্তানটিকে মেনে নিতে পারছিল না।

এদিকে শিশুটির দাদা শুকুর প্রামাণিক বলেন, হানিফেরই সন্তান রহমত। শিশুটিকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে হানিফ। ছেলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন তিনি।

সদরপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. লুৎফর রহমান জানান, খবর পেয়ে রাতেই মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। নিহতের মা শনিবার সকালে তার স্বামীকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। তাকে আটকের জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ।

এদিকে শনিবার সকালে শিশুটির পরিবারের সদস্যদের সমবেদনা জানাতে তাদের বাড়ি ছুটে যান সদরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পূরবী গোলদার। তিনি জানান, শিশুটির ঘাতক বাবাকে আটকের চেষ্টা চলছে। এ ধরনের নির্মম হত্যাকান্ড মেনে নেয়া যায় না।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে