বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

এক বছরে শিশুর প্রতি সহিংসতা বেড়েছে ২০ শতাংশ

নির্যাতন বন্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণের পরামর্শ
যাযাদি রিপোর্ট
  ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০০:০০

শিশুর প্রতি সহিংসতার মাত্রা প্রতিনিয়ত ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। এক বছরের ব্যবধানে শিশুর প্রতি সহিংসতা বেড়েছে ২০ শতাংশ। ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত ৩ হাজার ৬৫৩ জন শিশু বিভিন্ন ধরনের নির্যাতন ও সহিংসতার শিকার হয়েছে। প্রতি মাসে গড়ে নির্যাতনের শিকার হয়েছে ৪৫৭ জন শিশু। আগের বছরের প্রতি মাসে শিশু নির্যাতনের সংখ্যা ছিল ৩৮১ জন।

শিশু নির্যাতন, ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনাকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়ে দ্রম্নত সময়ে বিচার কার্যক্রম সম্পন্ন করার পাশাপাশি শিশু নির্যাতন বন্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণের পরামর্শ দিয়েছেন সংসদ সদস্যসহ বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিরা। তারা শিশু আইন-২০১৩ বাস্তবায়ন, ২০২৫ সালের মধ্যে শিশু শ্রমমুক্ত দেশ গড়ার নতুন কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন এবং বাল্যবিবাহ রোধে প্রণীত আইন, নীতিমালা ও জাতীয় পরিকল্পনার সঠিক বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন। এ ছাড়া জলবায়ু পরিবর্তনে অনিরাপদ অভিবাসন, সুবিধাবঞ্চিত ও বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের সুরক্ষা ও উন্নয়নে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি প্রণয়ন এবং বাজেটে শিশুদের জন্য বরাদ্দ বৃদ্ধির দাবি জানানো হয়।

বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদ ভবনের আইপিডি সম্মেলন কক্ষে 'বর্তমান শিশু অধিকার পরিস্থিতি ও করণীয়' নিয়ে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় এ দাবি জানানো হয়। চাইল্ড রাইটস অ্যাডভোকেসি কোয়ালিশন ইন বাংলাদেশ আয়োজিত সভায় গবেষণা প্রতিবেদন উত্থাপন করেন সেভ দ্য চিলড্রেনের ম্যানেজার রাশেদা আক্তার। শিশু অধিকারবিষয়ক সংসদীয় ককাসের সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. শামসুল হক টুকুর সভাপতিত্বে সভায় বক্তৃতা করেন ডেপুটি স্পিকার মো. ফজলে রাব্বী মিয়া, ককাসের সহসভাপতি অ্যারোমা দত্ত, সংসদ সদস্য মনোরঞ্জন শীল গোপাল, ওয়াশিকা আয়শা খান ও আব্দুল মজিদ এবং বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিরা।

সভায় উপস্থাপিত প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত ধর্ষণের শিকার হয়েছে ৬৯৭ জন শিশু। ধর্ষণ চেষ্টা করা হয়েছে ১০৪ জনকে। ১৬১ জনকে যৌন হয়রানি ও ২৮৫ জনকে হত্যা করা হয়েছে। আত্মহত্যা করেছে ১৩৩ জন। অপহরণ করা হয়েছে ১৪৫ জন শিশুকে। নিখোঁজ হয়েছে ১০৪ জন। সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছে ৩৯০ জন। পানিতে ডুবে মারা গেছে ৩৯৫ জন শিশু।

শিশু অধিকার বিষয়ে আইন ও সালিশ কেন্দ্রের ৫ বছরের পরিসংখ্যান উলেস্নখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, ধর্ষণের শিকার ৯০ শতাংশই শিশু ও কিশোরী। আর ৭ থেকে ১৮ বছর বয়সী শিশুরাই বেশি নির্যাতনের শিকার। ঢাকা জেলার ৫টি নারী নির্যাতন দমন ট্রাইবু্যনালে ১৫ বছরে (২০০২-১৬) ধর্ষণ সংক্রান্ত ৫ হাজার মামলার বিচারে সাজা হয়েছে মাত্র ৩ শতাংশের। এই অবস্থায় শিশু হত্যা-নির্যাতন বন্ধে শিশু অধিকার বিষয়ক সংসদীয় ককাসের কাছে বিদ্যমান পরিস্থিতি উন্নয়নের জন্য একটি সুপারিশমালা তুলে ধরা হয়।

সভায় ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া বলেন, শিশু অধিকারের বিষয়টি তৃণমূলে পৌঁছাতে না পারলে কোনো সফলতা আসবে না। বছরজুড়ে উপজেলা পর্যায়ে অ্যাডভোকেসি করতে হবে। গ্রামের কর্মজীবী মায়ের সন্তানের জন্য ডে-কেয়ার সেন্টার চালু করতে হবে। শিশু আইন সংশোধনের জন্য অংশীজনদের সঙ্গে বসে সুপারিশগুলো সংশ্লিষ্টদের কাছে তুলে ধরতে হবে।

সভাপতি শামসুল হক টুকু বলেন, শিশু নির্যাতন রোধে পারিবারিক, সামাজিক ও ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলতে হবে। সবাই নিজেদের নিয়ে যেভাবে ভাবে, দেশ নিয়ে ভাবলেই এসব নির্যাতন বন্ধ হবে। এ জন্য ককাস থেকে সবধরনের সহায়তা করা হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<66539 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1