মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

পিছিয়ে যাচ্ছে আ'লীগের সম্মেলন

কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের আসন্ন সভায় সিদ্ধান্ত
সোহেল হায়দার চৌধুরী
  ০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০০:০০

তিন থেকে ছয় মাস পিছিয়ে যেতে পারে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন। এ হিসাবে পূর্বনির্ধারিত অক্টোবরের পরিবর্তে ডিসেম্বরে বিজয় দিবসের পর অথবা ২০২০ সালের জানুয়ারি বা মার্চে জাতীয় সম্মেলন হতে পারে। প্রাক প্রস্তুতি পর্যালোচনাপূর্বক দলের একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা এমন সম্ভাবনার কথা জানান। সূত্রমতে, আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় এ বিষয়ে নতুন সিদ্ধান্ত আসতে পারে।

আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র জানায়, দলীয় সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যথাসময়ে কাউন্সিল অনুষ্ঠানের বিষয়ে কয়েক দফা ঘোষণা দিলেও এখনো প্রাক কর্মকান্ডই শুরু করা সম্ভব হয়নি। ডেঙ্গু সংকটের কারণে থমকে গেছে সাংগঠনিক অনেক কাজ। সেগুলো এখন আবার শুরু করে দ্রম্নত শেষ করার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। দলের নীতিনির্ধারক নেতারাও সম্মেলন বিষয়ে এখন কোনো কথা বলছেন না। সংশ্লিষ্ট কর্মকান্ডের জন্য কোনো জোর নির্দেশনাও পাওয়া যায়নি হাইকমান্ড থেকে। ফলে অক্টোবরে জাতীয় সম্মেলন নিয়ে ধূম্রজাল তৈরি হয়েছে। রীতি অনুযায়ী আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সম্মেলনের আগে জেলা সম্মেলন, কাউন্সিলর ও ডেলিগেট নির্বাচন, চাঁদা সংগ্রহ এবং সংশ্লিষ্ট উপকমিটি গঠন করা হয়। থমকে আছে নতুন সদস্যপদ প্রদান কর্মসূচিও। সাংগঠনিক ৭৮টি জেলার মধ্যে শুধুমাত্র সিলেট বিভাগের মৌলভীবাজার জেলার সম্মেলন করা সম্ভব হয়েছে।

এছাড়া বিভিন্ন নির্বাচনে অংশ নেয়া আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীদের বিরুদ্ধে অ্যাকশন প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে আজ থেকে 'কারণ দর্শানো নোটিশ' বা 'সতর্কপত্র' পাঠানো হচ্ছে প্রায় দেড় শ তৃণমূল নেতার কাছে। তাদের বিষয়টি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত জাতীয় সম্মেলনের কর্মকান্ড শুরু হচ্ছে না এমনটি জানিয়েছে দলের একাধিক সূত্র। এদিকে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভায় যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০ অথবা ২২ সেপ্টেম্বর প্রায় ১০ দিনের সফরে যুক্তরাষ্ট্র যাচ্ছেন। তার অনুপস্থিতিতে সম্মেলন বিষয়ক কর্মকান্ড কিছুটা হলেও গতিহীন হবে।

কেন্দ্রীয় নেতারা অনেকেই উপলব্ধি করেন বা বুঝতে পারেন ঘোষিত সময় অক্টোবরে জাতীয় সম্মেলন করা সম্ভব হবে না। তবুও তারা এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে নারাজ। তারা দলপ্রধানের কথা অনুযায়ী শুধু বলছেন প্রস্তুতি না থাকলেও প্রস্তুত তারা। তবে সম্মেলন নিয়ে সক্রিয় নেতা এবং নেতৃত্বে আসার জন্য উৎসাহীদের নিষ্ক্রিয়ভাব জানান দিচ্ছে, পিছিয়ে যাচ্ছে আওয়ামী লীগের সবচেয়ে উৎসাহব্যঞ্জক এই পর্বটি। মাসখানেক আগেও দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের অনেকের বাসভবনে এবং দলপ্রধানের ধানমন্ডির কার্যালয়ে পদে আসতে উৎসাহী নেতাদের সার্বক্ষণিক দেখা যেত। এখন এ ধরনের উৎসাহীদের পদচারণ আগের মতো নেই।

জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন, দলের কেন্দ্রীয় সম্মেলন যথাসময়ে (অক্টোবর) হবে কি হবে না সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠেয় কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভায়। তিনি বলেন, অক্টোবরের মধ্যে সম্মেলন হওয়ার কথা রয়েছে। সেটি নভেম্বর বা ডিসেম্বরে হলেও অসুবিধা নেই।

এখন পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকান্ড শুরু না হলেও সম্মেলন অনুষ্ঠানে কোনো সংকট তৈরি হবে না দাবি করে মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন, আওয়ামী লীগে সবসময় সব ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলার প্রস্তুতি থাকে। সেটা সাংগঠনিক বা রাজনৈতিক যাই হোক না কেন। তিনি বলেন, সংশ্লিষ্ট উপকমিটি বা অন্যান্য কর্মকান্ড সম্মেলনের ১৫ থেকে ২০ দিন আগে হলেও সমস্যা নেই। তবে তিনি স্বীকার করেন জাতীয় সম্মেলনের আগে ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, থানা, পৌরসভা, উপজেলা ও জেলা কমিটির সম্মেলন শেষ করার একটি রীতি রয়েছে।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান বলেন, এখন পর্যন্ত জাতীয় সম্মেলন নির্ধারিত সময়ের মধ্যে হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তারপরও বিশেষ কোনো কারণে দু-চার-দশ দিন যদি পেছায় সেটা দলপ্রধানের বিষয়। এ নিয়ে কোনো সংকট তৈরি হবে না।

এখন পর্যন্ত চাঁদা সংগ্রহ ও সংশ্লিষ্ট উপকমিটি গঠন না হলেও এটা সম্ভব কি না জানতে চাইলে আবদুর রহমান বলেন, আওয়ামী লীগের মতো একটি সংগঠিত দলের সম্মেলন এ জন্য আটকে থাকবে না। সময়মতো সবকিছু নিয়ম মেনেই হবে।

উলেস্নখ্য, ২০১৬ সালের ২২ ও ২৩ অক্টোবর আওয়ামী লীগের ২০তম জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এই কমিটির মেয়াদ ৩ বছর। সে অনুযায়ী ২০১৯ সালের ২১ অক্টোবর মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা।

\হ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<65950 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1