শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

রাজাকারদের তালিকা সংগ্রহ শুরু

যাযাদি রিপোর্ট
  ২৬ আগস্ট ২০১৯, ০০:০০

একাত্তরে খুন, ধর্ষণ, নির্যাতন, লুণ্ঠনে যেসব বাঙালি বেতন নিয়ে পাকিস্তানি বাহিনীকে সহযোগিতা করেছিল, তাদের তালিকা সংগ্রহ করছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের চিঠির পরিপ্রক্ষিতে এ কাজ শুরু করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। রোববার মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে বিষয়টি জানায় তারা।

গত ২৬ মে সংসদীয় কমিটির বৈঠকে মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল, রাজাকার, আল বদর, আল শামস, শান্তি কমিটির সদস্যদের তালিকা সংগ্রহ করে তা রক্ষণাবেক্ষণে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে আধাসরকারি (ডিও) চিঠি পাঠানো হচ্ছে।

\হবৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি শাজাহান খান বলেন, 'আজকে মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বেতনভোগী রাজাকারদের তালিকা সংগ্রহের কাজ শুরু করেছে।'

তিনি জানান, জেলা পর্যায়ে রাজাকারদের তালিকা সংগ্রহের জন্য জেলা প্রশাসকদের কাছে চিঠি দেয়া হয়েছে।

শাজাহান বলেন, 'জেলায় জেলায় রেকর্ড রুমে রাজাকারদের তালিকা আছে। সেখান থেকে সংগ্রহ করে তালিকা গেজেট আকারে প্রকাশ করতে বলা হয়েছে।'

কবে নাগাদ এ তালিকা প্রণয়ন হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'এটা ডিসিদের ওপর নির্ভর করছে। তারা কাজ যত তাড়াতাড়ি শেষ করতে পারে।'

একাত্তরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় কয়েকটি রাজনৈতিক দল পাকিস্তানি বাহিনীর পক্ষ নিয়েছিল। এর মধ্যে রয়েছে জামায়াতে ইসলামী, মুসলিম লীগ, নেজামে ইসলামী।

তখন যুদ্ধরত পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীকে সহযোগিতা করতে রাজাকার বাহিনী গঠিত হয়েছিল। আনসার বাহিনীকে এ বাহিনীতে একীভূত করা হয়েছিল।

প্রথমে এটি বাংলাদেশের স্বাধীনতাবিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাদের নিয়ে গঠিত শান্তি কমিটির অধীনে থাকলেও পরে একে আধাসামরিক বাহিনীর স্বীকৃতি দিয়েছিল পাকিস্তান সরকার।

একই রকম আধাসামরিক বাহিনী ছিল আল বদর বাহিনী ও আল শামস বাহিনী। তবে স্বাধীনতাবিরোধী এ বাহিনীগুলোকে সাধারণ অর্থে রাজাকার বাহিনী হিসেবেই পরিচিত বাংলাদেশে।

প্রায় এক দশক আগে একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের বিচার শুরুর পর রাজাকারের তালিকা তৈরির দাবি উঠলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি।

২০১২ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের মুক্তিযুদ্ধবিষয়কমন্ত্রী এ বি তাজুল ইসলাম সংসদে এক প্রশ্নের উত্তরে জানিয়েছিলেন, রাজাকারের কোনো তালিকা সরকারের কাছে নেই।

তবে তিনি বলেছিলেন, ১৯৭১ সালে খুলনায় আনসার হেডকোয়ার্টার্সে পাওয়া তালিকায় ৩০ হাজারের বেশি রাজাকারের তথ্য মিলেছিল। ওই তালিকাটি মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে রয়েছে।

মে মাসে সংসদীয় কমিটির বৈঠকের কার্যপত্রে দেখা যায়, কমিটির আগের বৈঠকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রাজনৈতিক অনুবিভাগে সংরক্ষিত রাজাকার, আল বদর, আল শামস ও স্বাধীনতাবিরোধীদের তালিকা ও মুক্তিযুদ্ধের সময় জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে বেতন-ভাতা উত্তোলনকারী রাজাকারদের তালিকা সংরক্ষণের সুপারিশ করা হয়।

রাজাকার, আল বদর, আল শামস ও স্বাধীনতাবিরোধী ব্যক্তি ও সংগঠন এবং ১৯৭০ সালের নির্বাচনে বিজয়ী পাকিস্তান জাতীয় পরিষদ ও পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদে আওয়ামী লীগের নির্বাচিত সদস্যদের দেশদ্রোহী আখ্যায়িত করে তাদের আসনগুলো অবৈধভাগে শূন্য ঘোষণা করে তাদের স্থলে যাদের সদস্য করা হয়েছিল, তাদের নামগুলো স্বাধীনতাবিরোধীদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে তালিকা প্রস্তুত ও সংরক্ষণে আইন সংশোধনসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে ৫ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে ওই কার্যপত্রে দেখা যায়।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<64049 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1