আজকের যায়যায়দিন

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির মেয়াদ প্রায় ফুরিয়ে আসায় নতুন কাউন্সিলের তোড়জোড় শুরু হলেও এখনো সাংগঠনিক জেলাগুলোতে সম্মেলন করতে পারেনি দলটি। ২০১৬ সালের ২৩ অক্টোবর জাতীয় সম্মেলনের পর ৭৮টি সাংগঠনিক জেলার মধ্যে শুধু একটিতে সম্মেলন হয়েছে।

জেলাগুলোতে সম্মেলন করতে না পারাটি সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের ব্যর্থতা নির্দেশ করলেও তিনি বলছেন, জাতীয় কাউন্সিলের আগেই জেলাগুলোর সম্মেলন হয়ে যাবে। বর্তমান কমিটির মেয়াদ শেষে আগামী অক্টোবরে ক্ষমতাসীন দলটির জাতীয় সম্মেলন ও কাউন্সিলের তোড়জোড় চলছে; ফলে ৭৭টি জেলায় সম্মেলনের জন্য সময় আছে আর দুই মাস।

রাজনীতির মাঠ-ময়দানে সক্রিয় কাদেরের আগে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালনকারী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম তার দ্বিতীয় মেয়াদে ২০১২ থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে ৫৮টি সাংগঠনিক জেলার সম্মেলন করেছিলেন।

ওবায়দুল কাদের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব নেয়ার এক বছর পর ২০১৭ সালে ২৮ অক্টোবর মৌলভীবাজার জেলার সম্মেলন হয়। আর সব জেলা কমিটিই এখন মেয়াদোত্তীর্ণ। জেলার কমিটিগুলোর মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও তা সাংগঠনিক কর্মকান্ডে কোনো প্রভাব ফেলছে না বলে দাবি করেন সাধারণ সম্পাদক কাদের।

কৃষক লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী / আমরা ক্ষমতায়, তাই কথা বলতে পারছে বিএনপি

তিনি বলেন, 'আমাদের জাতীয় কাউন্সিল অক্টোবরে হবে। আমাদের সংগঠনের নিয়ম অনুযায়ী সম্মেলনের আগে বিভিন্ন ইউনিটে কাউন্সিলের মাধ্যমে কমিটি গঠন করেই জাতীয় কাউন্সিল করা হয়। এবারও সেভাবে করা হবে।' জেলাগুলোতে সম্মেলনের প্রস্তুতি চলছে বলে জানান কাদের।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান বলেন, 'কমিটির মেয়াদোত্তীর্ণ বলে কোনো কথা নেই। পরবর্তী সম্মেলন না হওয়া পর্যন্ত এ কমিটিই কাজ করবে। দীর্ঘদিন যেখানে সম্মেলন হয়নি, সেই জায়গাটি চিহ্নিত করে আমরা সম্মেলনের ব্যবস্থা করছি।'

কবে কোন জেলার সম্মেলন হয়েছে

ঢাকা বিভাগ : টাঙ্গাইলে ২০১৫ সালের ১৮ অক্টোবর, কিশোরগঞ্জে ২০১৬ সালের ১৯ ফেব্রম্নয়ারি, মানিকগঞ্জে ২০১৬ সালের ১৬ জানুয়ারি, মুন্সীগঞ্জে ২০১৪ সালের ২১ জুন, নরসিংদীতে ২০১৫ সালের ১৪ জানুয়ারি, রাজবাড়ীতে ২০১৫ সালের ১২ নভেম্বর, শরীয়তপুরে ২০১৬ সালের ২৭ ফেব্রম্নয়ারি, ফরিদপুরে ২০১৬ সালের ২২ মার্চ, গাজীপুরে ২০১৮ সালের ৮ অক্টোবর, গোপালগঞ্জে ২০১৫ সালের ১১ নভেম্বর।

২০১২ সালের ২৭ ডিসেম্বর ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের সম্মেলনের তিন বছর পর ২০১৬ সালের ১০ এপ্রিল সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করা হয়। সম্মেলন আর হয়নি।

দীর্ঘদিনের চেষ্টার পরও নারায়ণগঞ্জ জেলা সম্মেলন করতে না পারায় ২০০২ সালের ২৭ মার্চ ৬৩ সদস্যের একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। ওই আহ্বায়ক কমিটির তিন মাসের মধ্যে সম্মেলন করে একটি পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের কথা থাকলেও সাড়ে ১৪ বছরেও তা হয়নি। মাদারীপুর জেলা কমিটি ২০১৩ সালে করা হলেও সম্মেলন আরও কয়েক বছর আগে হয়েছিল।

চট্টগ্রাম বিভাগ : ২০০৬ সালের ২৭ জুন চট্টগ্রাম মহানগরে সম্মেলন হলেও ২০১৩ সালের ১৪ নভেম্বর চট্টগ্রাম মহানগরের কমিটি কেন্দ্র থেকে ঘোষণা করা হয়। চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার সর্বশেষ সম্মেলন হয় ২০০৬ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর। ২০১৫ সালের ১৬ জুলাই কেন্দ্র থেকে যে কমিটি করে দেয়া হয়েছিল, তারও মেয়াদ শেষ।

চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার সম্মেলন হয়েছিল ২০১৫ সালের ১৬ জুলাই, চট্টগ্রাম উত্তর জেলায় ২০১২ সালের ২৫ ডিসেম্বর, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর, চাঁদপুরে ২০১৬ সালের ২৬ জানুয়ারি, কুমিলস্না দক্ষিণে ২০১৭ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর, কুমিলস্না উত্তরে ২০১৬ সালে ১৩ ফেব্রম্নয়ারি, ফেনীতে ২০১২ সালের ২৫ ডিসেম্বর, লক্ষ্ণীপুরে ২০১৬ সালের ৩ মার্চ, নোয়াখালীতে ২০১৪ সালে ১৫ সেপ্টেম্বর, কক্সবাজারে ২০১৬ সালের ২৮ জানুয়ারি, ২০১২ সালের ১১ অক্টোবর বান্দরবানে, ২০১২ সালের ১১ নভেম্বর খাগড়াছড়িতে, ২০১২ সালের ৮ ডিসেম্বর রাঙামাটিতে সর্বশেষ সম্মেলন হয়।

রাজশাহী বিভাগ : সিরাজগঞ্জে ২০১৫ সালের ৮ জানুয়ারি, নওগাঁয় ২০১৪ সালের ২৪ ডিসেম্বর, নাটোরে ২০১৪ সালের ২ ডিসেম্বর, জয়পুরহাটে ২০১৪ সালের ৯ নভেম্বর, বগুড়ায় ২০১৪ সালের ১০ ডিসেম্বর।

খুলনা বিভাগ: খুলনায় ২০১৪ সালে, মেহেরপুরে ২০১৪ সালের ২৭ ফেব্রম্নয়ারি, নড়াইলে ২০১৫ সালের ১৫ ফেব্রম্নয়ারি, সাতক্ষীরায় ২০১৫ সালের ৭ ফেব্রম্নয়ারি, মাগুরায় ২০১৫ সালের ৮ মার্চ, কুষ্টিয়ায় ২০১৪ সালের ২৫ নভেম্বর, ঝিনাইদহে ২০১৫ সালের ১৫ মার্চ, যশোরে ২০১৫ সালের ১২ ফেব্রম্নয়ারি, বাগেরহাটে ২০১৫ সালের ১৪ ফেব্রম্নয়ারি, চুয়াডাঙ্গায় ২০১৫ সালের ২ ডিসেম্বর।

সিলেট বিভাগ : সিলেট জেলায় ২০১১ সালে সর্বেশেষ সম্মেলন হয়, মৌলভীবাজারে ২০১৭ সালের ২৮ অক্টোবর, হবিগঞ্জে ২০১৩ সালে ২৫ জুন, সুনামগঞ্জে ২০১৬ সালের ২৫ ফেব্রম্নয়ারি সম্মেলন হয়।

বরিশাল বিভাগ : বরগুনা জেলার সম্মেলন হয়েছিল ২০১৪ সালের ১৬ নভেম্বর, ভোলায় ২০১৬ সালের ২০ ফেব্রম্নয়ারি, পটুয়াখালীতে ২০১৪ সালের ১৪ নভেম্বর, বরিশালে ২০১২ সালের ২৭ ডিসেম্বর, একই দিনে বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন হয়, ঝালকাঠিতে ২০১৬ সালের ১৬ জানুয়ারি, পিরোজপুরে ২০১৫ সালের ১৫ ডিসেম্বরে।

রংপুর বিভাগ : পঞ্চগড়ে ২০১২ সালের ২৪ ডিসেম্বর, ঠাকুরগাঁওয়ে ২০১৪ সালের ১৬ অক্টোবর, দিনাজপুরে ২০১২ সালের ডিসেম্বরে, রংপুরে ২০০৮ সালে, কুড়িগ্রামে ২০১৩ সালের ৬ ফেব্রম্নয়ারি, গাইবান্ধায় জেলা সম্মেলন ২০১৬ সালের ১২ মার্চ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

ময়মনসিংহ বিভাগ : জামালপুর সম্মেলন হয়েছিল ২০১৫ সালের ১৬ মে, নেত্রকোনায় ২০১৪ সালে, শেরপুরে ২০১৫ সালের ১৫ মে, ময়মনসিংহে ২০১৬ সালের ১০ অক্টোবর।