শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে, জানেন না ট্রাম্প

যাযাদি ডেস্ক
  ২০ জুলাই ২০১৯, ০০:০০
ডোনাল্ড ট্রাম্প

রোহিঙ্গা গণহত্যার ঘটনায় কয়েক দফায় মিয়ানমারের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন কংগ্রেসেও এ নিয়ে আলাপ-আলোচনা হয়েছে। তবে নিপীড়িত রোহিঙ্গারা মিয়ানমার থেকে পালিয়ে কোথায় আশ্রয় নিয়েছেন, তা ঠিকঠাক জানেন না মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

\হসম্প্রতি বাংলাদেশের রোহিঙ্গা শিবির থেকে হোয়াইট হাউসে তার সঙ্গে দেখা করতে যাওয়া এক প্রতিনিধির কাছে তিনি জানতে চেয়েছেন, ওই শিবিরের অবস্থান ঠিক কোথায়। এ ঘটনায় বিস্ময় সৃষ্টি হয়েছে এবং এ-সংক্রান্ত একটি ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।

উলেস্নখ্য, যুক্তরাষ্ট্র রোহিঙ্গা নিপীড়নকে জাতিগত নিধন বললেও গণহত্যার স্বীকৃতি দেয়নি। তবে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সহিংসতা জোরালো হওয়ার পর মিয়ানমারের সেনা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করে যুক্তরাষ্ট্র। একই বছর পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও রোহিঙ্গা নিপীড়নকে ঘৃণ্য জাতিগত নিধনযজ্ঞ আখ্যা দেন। কাছাকাছি সময়ে রাখাইনে নিধনযজ্ঞের হোতা আখ্যা দিয়ে মং মং সো নামের এক সেনাকর্মকর্তার বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। ২০১৮ সালের অক্টোবরে মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয় মিয়ানমারের তিনজন সামরিক কর্মকর্তা ও দুইটি সেনা ব্রিগেডের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়। সবশেষ গত মঙ্গলবার দেশটির সেনাবহিনীর শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ওয়াশিংটন। মার্কিন কংগ্রেসেও একাধিকবার মিয়ানমারের সেনাবাহিনী কর্তৃক রোহিঙ্গা নিপীড়নের প্রসঙ্গ আলোচিত হয়েছে। তবে সেই দেশের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জানেন না, নিপীড়নের শিকার রোহিঙ্গারা পালিয়ে কোথায় আশ্রয় নিয়েছে।

সম্প্রতি চীন, তুরস্ক, উত্তর কোরিয়া, মিয়ানমারসহ ১৬টি দেশে সাম্প্রদায়িক নিপীড়নের শিকার হওয়া কয়েকজন ব্যক্তিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল হোয়াইট হাউসে। গত ১৬ জুলাই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করেন ২৭ জন প্রতিনিধি। ওই প্রতিনিধি দলে ছিলেন এক রোহিঙ্গাও। ওই ব্যক্তি ট্রাম্পকে জানান, তিনি বাংলাদেশের রোহিঙ্গা শিবির থেকে গেছেন। শিবিরের বেশিরভাগ রোহিঙ্গাই নিজেদের দেশ মিয়ানমারে ফিরতে চায় উলেস্নখ করে ওই ব্যক্তি মার্কিন প্রেসিডেন্টের কাছে জানতে চান, তার প্রশাসন রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে কী ধরনের সহায়তার পরিকল্পনা করেছে? ট্রাম্প তখন ওই রোহিঙ্গাকে প্রশ্ন করেন, 'এটি ঠিক কোথায়?' জবাবে ওই রোহিঙ্গা বলেন, 'বাংলাদেশ রোহিঙ্গা ক্যাম্প'। পাশ থেকে মার্কিন প্রেসিডেন্টের এক সহযোগী ট্রাম্পকে বলেন, 'বাংলাদেশ বার্মার (মিয়ানমার) পাশেই'।

বুধবার রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের ওই প্রতিনিধির সঙ্গে কথোপকথনের সময় ট্রাম্পের এমন অবস্থানে তৈরি হয়েছে বিস্ময়। ভিডিওটি এরইমধ্যে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

উলেস্নখ্য, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রাখাইনের কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার পর পূর্ব-পরিকল্পিত ও কাঠামোবদ্ধ সহিংসতা জোরালো করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। সন্ত্রাসবিরোধী শুদ্ধি অভিযানের নামে শুরু হয় নিধনযজ্ঞ। হত্যা-ধর্ষণসহ বিভিন্ন ধারার মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হতে থাকে ধারাবাহিকভাবে। জাতিগত নিধনযজ্ঞের ভয়াবহতায় জীবন বাঁচাতে রাখাইন ছেড়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয় প্রায় সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা। আগে থেকে উপস্থিত রোহিঙ্গাদের নিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের সংখ্যা দাঁড়ায় প্রায় ১০ লাখে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<59030 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1