বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ওসি মোয়াজ্জেমের বিচার শুরু

যাযাদি রিপোর্ট
  ১৮ জুলাই ২০১৯, ০০:০০
মোয়াজ্জেম হোসেন

মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির জবানবন্দির ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়ানোর ঘটনায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় সোনাগাজীর সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনের বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছে আদালত।

বাংলাদেশ সাইবার ট্রাইবু্যনালের বিচারক মোহাম্মদ আস সামছ জগলুল হোসেন বুধবার আসামি মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে এই মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরুর জন্য ৩১ জুলাই দিন ঠিক করে দেন।

ফেনীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত গত মার্চ মাসে তার অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ করলে ওসি মোয়াজ্জেম তাকে থানায় ডেকে জবানবন্দি নিয়েছিলেন।

এর কয়েক দিনের মাথায় নুসরাতের গায়ে আগুন দেয়া হলে সারাদেশে আলোচনা শুরুর হয়। তখন ওই জবানবন্দির ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নুসরাতের মৃতু্য হলে গত ১৫ এপ্রিল ওসি মোয়াজ্জেমকে আসামি করে ঢাকায় বাংলাদেশ সাইবার ট্রাইবু্যনালে মামলা করেন সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা ওই মামলায় অভিযোগ করা হয়, মোয়াজ্জেম বেআইনিভাবে মোবাইল ফোনে নুসরাতের জবানবন্দির ভিডিও করেছেন এবং তা ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দিয়েছেন।

পুলিশ বু্যরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ওই অভিযোগের সত্যতা পাওয়ার কথা জানালে বাংলাদেশ সাইবার ট্রাইবু্যনালের বিচারক মোহাম্মাদ আস সামছ জগলুল হোসেন গত ২৭ মে মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেন।

এদিকে নুসরাতের মৃতু্যর পর ওসি মোয়াজ্জেমকে প্রথমে সোনাগাজী থানা থেকে প্রত্যাহার করে রংপুর রেঞ্জে পাঠান হয়। পরে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয় পুলিশ বাহিনী থেকে।

কিন্তু আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা দিলে তা তামিল করা নিয়ে ফেনী ও রংপুর পুলিশের মধ্যে বেশ কয়েক দিন ঠেলাঠেলি চলে।

এই পরিস্থিতিতে সংবাদমাধ্যমে পরিদর্শক মোয়াজ্জেমের লাপাত্তা হয়ে যাওয়ার খবর আসে। পরে গত ১৬ জুন ঢাকার হাইকোর্ট এলাকা থেকে মোয়াজ্জেমকে গ্রেপ্তার করা হয়।

অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য পুলিশ পরিদর্শক মোয়াজ্জেম হোসেনকে এদিন কারাগার থেকে ট্রাইবু্যনালে হাজির করা হয়।

মামলা থেকে তার অব্যাহতি চেয়ে আদালতে শুনানি করেন তার আইনজীবী আবু সাঈদ সাগর ও ফারুক আহম্মেদ।

ফারুক বলেন, 'মানহানির মামলা করতে হয় যার হয়েছে, তার বা তার পরিবারের। কিন্তু এ ক্ষেত্রে যিনি মামলা করেছেন, তিনি নুসরাতের কেউ নন। তার সম্মানহানীর কিছু নেই। সুতরাং এই মামলা চলতে পারে না, আসামিকে অব্যাহতি দেয়া হোক।'

এই আইনজীবী বলেন, নুসরাতের মা, ভাই ও সোনাগাজীর পৌর মেয়রের উপস্থিতিতে তার জবানবন্দির ভিডিও ধারণ করা হয়েছিল থানায়। এর পেছনে খারাপ কোনো উদ্দেশ্য ছিল না।

'ওসি মোয়াজ্জেম ওই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগের মধ্যমে ছড়াননি। ওই ভিডিওর ক্লিপ থানা থেকে চুরি যায়। এ বিষয়ে একটি জিডিও করা হয়।'

অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে এই আদালতের পিপি নজরুল ইসলাম শামীম শুনানিতে বলেন, ওই ভিডিও ছড়িয়ে দেয়ায় 'গোটা জাতির' সম্মানহানী হয়েছে। ব্যারিস্টার সুমন তার বিবেকবোধ থেকে এই মামলা করেছেন।

ভিডিও ধারণ করা তো দূরের কথা, অপ্রাপ্তবয়স্ক ভিকটিমের নাম প্রকাশ করাও আইনে নিষিদ্ধ। সেখানে এই ভিডিও ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে অসৎ উদ্দেশ্যে, ভিকটিমকে হুমকি দেয়ার জন্য। আসামি মোয়াজ্জেমই এটা করেছেন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হোক।'

দুই পক্ষের বক্তব্য শুনে বিচারক আসামির অব্যাহতির আবেদন খারিজ করে তার বিচার শুরুর আদেশ দেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<58727 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1