শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

কারাবন্দিদের খাবারের বরাদ্দ বাড়ছে ১০ গুণ

নূর মোহাম্মদ
  ১৬ জুলাই ২০১৯, ০০:০০

কারাগারে বন্দিদের খাবারের মানসহ নানা সুযোগসুবিধা বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ইতোমধ্যে বেশ কিছু উদ্যোগ বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। ফলে এর সুবিধা ভোগ করছেন কয়েদিরা। এবার কারাগার থেকে আদালতে আসা-যাওয়ার মাঝখানে দুপুরের খাবারের বরাদ্দ বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে কারা অধিদপ্তর। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে দপ্তরটি বর্তমান বরাদ্দ ৩ টাকা ৩০ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৩০ টাকার প্রস্তাব করেছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের সায় মিললেই দ্রম্নত এটি কার্যকর করা যাবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

কারা অধিদপ্তরের প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, কারাগারে বন্দিদের মামলার হাজিরার দিনে আদালতে পাঠাতে হয়। ওই সময়ে দুপুরের খাবার হিসেবে ৩ টাকা ৬০ পয়সার মধ্যে শুকনা খাবার হিসেবে চিড়া ও গুড় দেয়া হয়। এসব বন্দিকে অনেক সময় আদালত থেকে কারাগারে ফেরত পাঠাতে রাত ৯ থেকে ১০টা বেজে যায়। কারাগারের রাতের খাবার সাধারণত বিকেল ৪টা থেকে ৫টার মধ্যেই সরবরাহ করা হয়। ফলে এসব বন্দি আদালত থেকে কারাগারে ফেরার পর আর রাতের খাবার পান না। যার কারণে আদালতে যাওয়া বন্দিদের স্বজনেরা খাবার দেয়ার চেষ্টা করেন এবং অনেক সময় বন্দিরা তা নিয়েও থাকেন। আত্মীয়স্বজনের মাধ্যমে খাবার সংগ্রহের চেষ্টা আদালতে গমনকারী বন্দিদের শৃঙ্খলা রক্ষার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। এছাড়া স্বজনদের সরবরাহকৃত খাবার নিয়ে আসার সময় মাদকসহ অবৈধ দ্রব্য কারাগারে ঢোকানোর চেষ্টা করা হয়। যা সুষ্ঠু কারা প্রশাসনের অন্তরায়।

প্রস্তাবনায় আরও বলা হয়েছে, বন্দিদের আদালতে হাজির করানোর দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যদের দুপুরের খাবার বাবদ ৩০ টাকা দেয়া হয়। ওই টাকায় আদালত ভবনের নিকস্থ কোনো হোটেল থেকে দুপুরে রান্না করা খাবার সরবরাহ করা হয়ে থাকে। অথচ বন্দিরা পেয়ে থাকেন ৩ টাকা ৬০ পয়সা। এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে হাজিরার দিন দুপুরের খাবারের জন্য হাজতি প্রতি ৩০ টাকা অর্থ বরাদ্দের অনুমোদনের জন্য প্রস্তাবটি অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, সারাদেশের কারাগারের মান উন্নয়নে সব ক্ষেত্রে অর্থ বরাদ্দের পরিমাণ বেড়েছে। বন্দিদের দুপুরের খাবারের জন্য ৩০ টাকা করার প্রস্তাবনাটিও অনুমোদন পাবে, তবে অর্থের পরিমাণ কিছুটা কমতে পারে।

কারাগারের মান উন্নয়নের বেশ কিছু উদ্যোগ অনুমোদন হয়েছে এবং এর অধিকাংশ বাস্তবায়ন চলছে। এরই অংশ হিসেবে কারাবন্দিদের বিভিন্ন সময়কার খাবারের বরাদ্দ বাড়াতে অর্থ মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সেবা সুরক্ষা বিভাগের যুগ্ম সচিব (কারা অনুবিভাগ) সৈয়দ বেলাল হোসেন যায়যায়দিনকে বলেন, 'বর্তমান বরাদ্দ দিয়ে একজন কয়েদির দুপুরে খাবার তো দূরের কথা নাশতাও হয় না। কারাগার থেকে আদালত, আদালত থেকে কারাগারে আসতে একজন কয়েদিকে সারাদিন, কখনো রাত পর্যন্ত হয়। এ সময়ের মধ্যে বরাদ্দ মাত্র ৩ টাকা ৩০ পয়সা। তা দিয়ে ওনাকে কলা- রুটিও খাওয়ানো যায় না। এজন্য আদালতে পাঠানো বন্দিদের দুপুরের খাবারের জন্য ৩০ টাকা করার প্রস্তাবনা অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। অর্থমন্ত্রণালয় এখনো কোনো সিদ্ধান্ত পাঠায়নি। অর্থ মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের পর পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।

কারা অধিদপ্তরের তথ্যমতে, ইতোমধ্যে কারাবন্দিদের সকালের নাশতায় রুটি-গুড়ের পরিবর্তে সপ্তাহে দুই দিন খিচুড়ি, এক দিন হালুয়া-রুটি, চার দিন সবজি-রুটি অর্থমন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের পর সরবরাহ করা হচ্ছে। রমজানে বন্দিদের ইফতার বাবদ জনপ্রতি ১৫ টাকা বাড়িয়ে ৩০ টাকা করা হয়েছে। বন্দিদের এক কারাগার হতে অন্য কারাগারে স্থানান্তরের সময় খোরাকি ভাতা ১৬ টাকা হতে বাড়িয়ে ১০০ টাকা করা হয়েছে। বাংলা নববর্ষে উন্নত খাবার পরিবেশনের জন্য বন্দি প্রতি ৩০ টাকা হারে বরাদ্দ প্রদান করা হয়। এছাড়া বিশেষ দিবসে কয়েদি ও হাজতিদের উন্নতমানের খাবার সরবরাহ করা হয়। এজন্য জনপ্রতি ৩০ টাকা করে বরাদ্দ ছিল। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে তা বাড়িয়ে ২৫০ টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে জনপ্রতি ১৫০ টাকা করে বরাদ্দের সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানা গেছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<58476 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1