শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
শিক্ষককে লাঞ্ছনা

ইউএসটিসির চার শিক্ষার্থী বহিষ্কার

যাযাদি ডেস্ক
  ১২ জুলাই ২০১৯, ০০:০০

শিক্ষকের গায়ে কেরোসিন ঢালার ঘটনায় চার শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে চট্টগ্রামে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইউএসটিসি কর্তৃপক্ষ।

এর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী মাহমুদুল হাসানকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার এবং ওই ঘটনায় তার সহযোগী শেখ রাসেল শাহেন শাহ, মো. আলী হোসেন ও ময়নুল আলমকে এক বছরমেয়াদে বহিষ্কার করা হয়েছে।

এদের মধ্যে মাহমুদুলকে ঘটনার দিনই পুলিশ গ্রেপ্তার করে। পরে তাকে জিঞ্জাসাবাদের জন্য দুই দফায় রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে শিক্ষক লাঞ্ছনাকারী শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানান ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি চিটাগং- ইউএসটিসির ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার দিলীপ কুমার বড়ুয়া।

গত ২ জুলাই দুপুরে চট্টগ্রামের ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজিতে (ইউএসটিসি) একদল শিক্ষার্থীর হাতে লাঞ্ছিত হন ইংরেজির অধ্যাপক মাসুদ মাহমুদ।

কয়েক বছর আগে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অবসর নেয়ার পর ইউএসটিতে ইংরেজি বিভাগের উপদেষ্টা হিসেবে যোগ দেন তিনি।

ওই দিন ক্যাম্পাসের ভেতরে এই শিক্ষককে লাঞ্ছিত করে তার গায়ে কেরোসিন ঢেলে দেয়া হয়। পরে ওই শিক্ষার্থীরাই এই অধ্যাপকের পদত্যাগের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায়।

লিখিত দিলীপ কুমার বলেন, অধ্যাপক মাসুদ মাহমুদকে লাঞ্ছিত করা ও গায়ে কেরোসিন ঢালার ঘটনা তদন্তে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি করা হয়েছিল। কমিটির দেয়া প্রতিবেদনের ভিত্তিতে গত ৮ জুলাই শৃঙ্খলা কমিটির জরুরি সভায় চারজনকে চিহ্নিত করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

সংবাদ সম্মেলনে ইউএসটিসির প্রক্টর কাজী নূর-ই আলম সিদ্দিকী বলেন, 'শৃঙ্খলা কমিটি মাহমুদুলের ছাত্রত্ব বাতিল এবং চিরতরে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। তবে তাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য সাতদিনের সময় দেয়া হয়েছে।'

'অপর তিনজনকে এক একাডেমিক শিক্ষাবর্ষ বহিষ্কার এবং বিধি মোতাবেক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়।'

নূর-ই আলম সিদ্দিকী বলেন, ভবিষ্যতে কেউ এ ধরনের ঘৃণ্য কাজ করলে তা কঠোর হাতে দমন করা হবে। ইউএসটিসি কর্তৃপক্ষের বাইরে পুলিশ প্রশাসন একটি পৃথক তদন্ত কমিটি করেছে, আমরা সে প্রতিবেদনটিও বিবেচনা করব।'

শিক্ষকদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিতের ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষা কার্যক্রমে ইউএসটিসির চলমান ও ভবিষ্যৎ বিভিন্ন কর্মসূচির বিষয়টিও তুলে ধরা হয়।

ইউএসটিসিতে অধ্যাপক মাসুদ মাহমুদের বিরুদ্ধে আন্দোলনের সূত্রপাত দুই মাস আগে। সে সময় বিশ্ববিদ্যালয়টির ইংরেজি বিভাগের একদল শিক্ষার্থী তার পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন শুরু করে।

তাদের অভিযোগ ছিল, ইংরেজি সাহিত্য পড়াতে গিয়ে তিনি নারী-পুরুষের সম্পর্ক, পোশাক ও জীবনাচরণসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন, যা 'যৌন হয়রানিমূলক'।

বিভিন্ন সময় ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে করা তার মন্তব্য 'অসম্মানজনক' বলেও ছাত্রদের অভিযোগ। তখন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ও সাবেক একদল শিক্ষার্থী মাসুদ মাহমুদের পক্ষে চট্টগ্রাম নগরীতে কর্মসূচিও পালন করেছিল।

ইউএসটিসি কর্তৃপক্ষ তখন দাবি করেছিল, ক্লাসে উপস্থিতির হার কম থাকায় ২০ শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়ার অনুমতি না পেয়ে অধ্যাপক মাসুদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনে।

বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা জানান, ওই আন্দোলনের নেপথ্যে ছিল মূলত মাসুদ মাহমুদ দায়িত্ব নেয়ার পর ইংরেজি বিভাগের কয়েকজন শিক্ষকের চাকরিচু্যতি এবং কয়েকজন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিতে না পারা।

শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুরোধে অধ্যাপক মাসুদকে লাঞ্ছিত করার নেপথ্যে জড়িতদের শনাক্তে পুলিশও কাজ করছে বলে এর আগে জানিয়েছিলেন চট্টগ্রামের পুলিশ কমিশনার।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<57804 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1