বুধবার, ০২ জুলাই ২০২৫, ১৮ আষাঢ় ১৪৩২

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালককে 'শোকজ'

যাযাদি রিপোর্ট
  ১২ জুন ২০১৯, ০০:০০
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালককে 'শোকজ'
সামীম মোহাম্মদ আফজাল

একজন পরিচালককে 'ক্ষমতার অপব্যবহার' করে সাময়িক বরখাস্ত করার অভিযোগে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক সামীম মোহাম্মদ আফজালকে কারণ দর্শাতে বলেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।

দুর্নীতির অভিযোগে কেন সাময়িক বরখাস্ত করা হবে না এবং তার নিয়োগ কেন বাতিল করা হবে না- সাত কার্যদিবসের মধ্যে তার জবাব দিতে বলা হয়েছে মহাপরিচালককে। পাশাপাশি ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মসজিদ ও মার্কেট বিভাগের পরিচালক মুহাম্মদ মহীউদ্দিন মজুমদারকে সাময়িক বরখাস্ত করার আদেশও বাতিল করা হয়েছে।

গত ৩০ মে মহীউদ্দিন মজুমদারকে সাময়িক বরখাস্ত করেছিলেন মহাপরিচালক সামীম মোহাম্মদ আফজাল।

গত রোববার ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক বরাবর পাঠানো এক চিঠিতে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সহকারী সচিব (সংস্থা) মো. জিয়া উদ্দিন ভূঞা বলেন, 'ক্ষমতা বহির্ভূত, বেআইনি, অসৎ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, স্বেচ্ছাচারিতা ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে করা সাময়িক বরখাস্তের আদেশটি বাতিল করা হলো।'

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক সামীম মোহাম্মদ আফজালের বিরুদ্ধে ইতোপূর্বে নিয়োগ, পদোন্নতি, ক্রয় কার্যক্রমসহ নানা কাজে দুর্নীতির অভিযোগ গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে বলে চিঠিতে উলেস্নখ করা হয়।

এছাড়া তার বিরুদ্ধে কিছু 'সুর্নিদিষ্ট' অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে দুদক গত ৭ মে ধর্ম মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠায়।

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মসজিদ ও মার্কেট শাখার পরিচালক মুহাম্মদ মহীউদ্দিন মজুমদারের বিরুদ্ধে কয়েকটি গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে মন্ত্রণালয়ের একজন যুগ্ম সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি করা হয়েছিল। সেসব অভিযোগের গুরুত্ব বিবেচনায় তাকে সাময়িক বরখাস্ত করার যৌক্তিকতা নেই বলে উলেস্নখ করা হয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে।

ওই বরখাস্তের আদেশ বাতিল করতে গত ৩ জুন ধর্ম প্রতিমন্ত্রীর কাছে আবেদন করেন মহীউদ্দিন। সেই আবেদনের পর সাময়িক বরখাস্তের আদেশ পর্যালোচনা করে কিছু 'অনিয়ম' এবং 'বেআইনি' বিষয় নজরে আসে বলে চিঠিতে জানানো হয়েছে।

সেখানে বলা হয়, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বোর্ড অব গভর্নরস ধর্ম প্রতিমন্ত্রী। মহীউদ্দিন মজুমদারকে সাময়িক বরখাস্তের আদেশের ব্যাপারে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বোর্ড অব গভর্নরসের অনুমোদন নেয়া হয়নি। এছাড়া ওই কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করার আগে ধর্ম প্রতিমন্ত্রীর মৌখিক সম্মতিও নেয়া হয়নি। আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগও মহীউদ্দিন মজুমদার পাননি।

এ কারণে মহাপরিচালকের দেয়া সাময়িক বরখাস্তের আদেশটি 'বেআইনি, অসৎ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও অকার্যকর' বলে চিঠিতে জানিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।

২০০৯ সালের জানুয়ারিতে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক হিসেবে যোগ দেন জুডিসিয়াল সার্ভিসের সাবেক কর্মকর্তা সামীম মোহাম্মদ আফজাল।

মন্ত্রণালয়ের চিঠি ও অভিযোগের বিষয়ে কথা বলতে বেশ কয়েকবার তাকে ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি।

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পরিচালক মুহাম্মদ মহীউদ্দিন মজুমদার বলেন, মহাপরিচালক 'নিজের দোষ ঢাকতেই' তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছিলেন।

'গত বছর অক্টোবরে বায়তুল মোকাররমের একটি পিলার ভেঙে একটি দোকান বড় করা হয়। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ায় মহাপরিচালক ক্ষুব্ধ হন। ওই ঘটনায় আমি থানায় জিডি করি, ওই দোকান বন্ধ করে দিই। ওই দোকানদার দুদিন পর তালা খুলে ফেলে। পরে আবার আমি পুলিশ আনাই। সেই দোকানদার আমাকে দেখে নেয়ার হুমকি দেয়।'

মহীউদ্দিন মজুমদার বলেন, ওই ঘটনার পর তিনি চারটি ফাইল তৈরি করে মহাপরিচালকের কাছে দেন। কিন্তু তিনি কোনো ব্যবস্থা নেননি। পরে মে মাসে এ বিষয়ে পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে বিষয়টি ধর্ম প্রতিমন্ত্রীর নজরে আসে।

'ডিজি মহোদয় তখন বলেন, তার কাছে এ বিষয়ে কোনো ফাইল যায়নি। তখন আমি বলি চারটি ফাইল তৈরি করে দেয়া হয়েছে। এরপর থেকে তিনি আমার ওপর ক্ষুব্ধ। আমি দুর্নীতি করে থাকলে সেটার জন্য যথাযথ নিয়ম আছে। বিচারের আগে তো আমাকে মৃতু্যদন্ড দিতে পারেন না।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে