শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
বলছে বুথফেরত জরিপ

দিল্লির মসনদে ফের মোদি

যাযাদি ডেস্ক
  ২০ মে ২০১৯, ০০:০০
ভারতীয় পার্লামেন্ট ভবনের প্রতিকৃতি হাতে নরেন্দ্র মোদি

ভারতের লোকসভা নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নেতৃত্বাধীন জোটের নিরঙ্কুশ বিজয়ের আভাস দিচ্ছে বুথফেরত জরিপগুলো।

ভোটারের হিসাবে বিশ্বের সবচেয়ে বড় এই নির্বাচন হয়েছে সাত পর্বে, যা শেষ হলো রোববার। ভোট গণনা হবে বৃহস্পতিবার, ওই দিনই স্পষ্ট হবে আগামী পাঁচ বছরের জন্য দিল্লির সিংহাসন কার দখলে থাকছে। তবে তার আগেই রোববার ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার পরপরই বুথফেরত জরিপের ফলাফল প্রকাশ হতে শুরু করেছে, যাতে মোদির পাল্লায়ই ভারী দেখা যাচ্ছে।

হিন্দুস্তান টাইমসে প্রকাশিত সাতটি জরিপের ফলেই মোদির দল বিজেপি নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স-এনডিএ’র একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার আভাস দেয়া হয়েছে।

রিপাবলিক টিভি-সি ভোটার এক্সিট পোলের হিসাবে, ভোট হওয়া লোকসভার ৫৪২ আসনের মধ্যে ২৮৭টি পাচ্ছে বিজেপি জোট, তাদের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী কংগ্রেস জোট পাচ্ছে ১২৮ এবং অন্যরা ১২৭টি আসন পাচ্ছে।

ভারতে সরকার গঠনের জন্য লোকসভার মোট ৫৪৫টি আসনের মধ্যে ২৭২টিতে জয় পেতে হয়।

পাঁচ বছর আগের নির্বাচনে মোদি জোয়ারে ৩৩৬টি আসনে জয়ী হয়ে কংগ্রেসকে হটিয়ে সরকার গঠন করে বিজেপি। ২০১৪ সালের ওই নির্বাচনে মাত্র ৬০টি আসনে জয় পেয়েছিল কংগ্রেসের জোট ইউপিএ।

প্রিয়াঙ্কা গান্ধী এবার কংগ্রেসের পদ নিয়ে ভোটে নামার পর প্রতিটি বুথফেরত জরিপে তাদের আসন সংখ্যা বাড়ার আভাস মিলেছে। তবে কারও হিসাবেই সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় আসন পাওয়ার কথা বলা হয়নি।

রিপাবলিক-জান কি বাত-এর বুথফেরত জরিপে বিজেপি জোটের ৩০৫টি আসন পাওয়ার আভাস দেয়া হয়েছে। আর কংগ্রেস জোট ১২৪ এবং অন্যরা ১১৩টি আসন পেতে পারে।

নিউজ নেশনের জরিপে বিজেপি জোটের ২৮২ থেকে ২৯০, কংগ্রেস জোটের ১১৮ থেকে ১২৬ এবং অন্যদের ১৩০ থেকে ১৩৮টি আসন পাওয়ার আভাস দেয়া হয়েছে।

আর টাইমস নাও-ভিএমআর-এর এক্সিট পোল অনুযায়ী, বিজেপি জোট ৩০৬টি, কংগ্রেস ১৩২টি এবং অন্যরা ১০৪টি আসন পেতে পারে বলে বলা হয়েছে।

সিএনএন-নিউজ১৮-ইপসোস-এর জরিপে বিজেপি জোটের ৩৩৬, কংগ্রেসের ৮২ ও অন্যদের ১২৪টি আসন পাওয়ার আভাস দেয়া হয়েছে।

এপিবি-এসি নিয়েলসেনের বুথফেরত জরিপ বলছে, বিজেপি জোট ২৬৭, কংগ্রেস জোট ১২৭ এবং অন্যরা ১৪৮টি আসন পেতে পারে।

ইন্ডিয়া টুড-এক্সিসের জরিপে বিজেপি জোটের ৩৩৯ থেকে ৩৬৫, কংগ্রেস জোটের ৭৭ থেকে ১০৮ এবং অন্যদের ৭৯ থেকে ১১১টি আসন পাওয়ার আভাস দেয়া হয়েছে।

প্রতিটি পর্বের নির্বাচন চলাকালে ভোট দিয়ে আসা লোকজনের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে এসব জরিপ করা হয়েছে। তবে ভারতের অতীত নির্বাচনগুলোতে সব সময় বুথফেরত জরিপের ফলাফল ভোটের ফলের সঙ্গে মেলেনি।

১৯৯৮ সাল থেকে প্রতিটি নির্বাচনের পর বুথফেরত জরিপগুলোতে হয় বিজেপি জোটকে এগিয়ে রাখা হয়েছে বা হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস দেয়া হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে এর মধ্যে দুই দফায় ভোটে জিতে সরকার গঠন করেছে কংগ্রেস।

বুথফেরত জরিপ থেকে ভোটের ফল পুরো উল্টে গেছে ২০০৪ সালে, ওই নির্বাচনে অটল বিহারি বাজপাই সরকারকে হটিয়ে সরকার গঠন করেছিল কংগ্রেস। মনমোহন সিং নেতৃত্বাধীন ওই সরকার মেয়াদ পূর্তির পর পরের ভোটেও জয়ী হয়ে আরও পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকে।

২০০৪ সালের ভোটের পর বুথফেরত জরিপের প্রতিটিতে বিজেপি এগিয়ে রাখা হয়েছিল, আউটলুক-এমডিআরএ’র হিসাবে তাদের ২৯০টি আসন পাওয়ার আভাস দেয়া হয়েছিল। তবে নির্বাচনে মাত্র ১৮৯টি আসন পায় তারা। অপরদিকে ২২২ আসনে জয়ী হয়ে সরকার গঠন করে কংগ্রেস। এরপর ২০০৯ সালের নির্বাচনের পরেও এক্সিট পোলগুলোতে কংগ্রেস-বিজেপির হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস দেয়া হয়েছিল। তবে ২৬২ আসনে জয় পেয়ে ক্ষমতা ধরে রাখে কংগ্রেস জোট।

সর্বশেষ ২০১৪ সালের নির্বাচনের পর বুথফেরত জরিপগুলোতে বিজেপি জোটের জয়ের আভাস দেয়া হলেও অধিকাংশের হিসাবেই তাদের ২৭০ থেকে ২৮০টি আসন পাওয়ার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু ভোটের ফলে ৩৩৬টি আসন যায় তাদের ঘরে।

এবার পশ্চিমবঙ্গেও বিজেপির ভালো করার আভাস দিচ্ছে বুথফেরত জরিপগুলো। সব জরিপেই সেখানে ক্ষমতাসীন তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষে পাল্লা ভারী থাকলেও বিজেপির আসন বেড়ে ২২টিতেও যেতে পারে বলে আভাস দেয়া হয়েছে।

এপিবি-নিয়েলসনের জরিপে এই রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল কংগ্রেস ২৪টি, বিজেপি ১৬টি এবং কংগ্রেস দুটি আসনে জয়ী হতে পারে বলে বলা হয়েছে।

গত নির্বাচনে এই রাজ্য থেকে বামফ্রন্টের দুজন লোকসভায় গিয়েছিল, এবার তাদের ভাগে একটিও না জুটতে পারে বলেই অধিকাংশ বুথফেরত জরিপের আভাস।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে