আজকের যায়যায়দিন

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য জমির উদ্দিন সরকার বলেছেন, কারাগারের দূষণযুক্ত পরিবেশে খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য, সুস্থতা ও জীবন সবই অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। খালেদা জিয়া এখন জীবন-মৃতু্যর সন্ধিক্ষণে। তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার কোনো সাজাই চূড়ান্তভাবে নিষ্পত্তি হয়নি। এমতাবস্থায় জামিন না দিয়ে তাকে কারাগারে রাখা সম্পূণরূপে সংবিধান ও মানবাধিকার পরিপন্থি। শনিবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যদের এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন। শারীরিক ও মানসিকভাবে 'নির্যাতন' করে খালেদা জিয়াকে শোচনীয় পরিণতির দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন জমির উদ্দিন। তিনি বলেন, মারাত্মক জীবন-বিনাশী জীবাণু দ্বারা ফুসফুসের সংক্রমণ বা নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশ প্রবল হয়ে উঠেছে। এ ছাড়াও ধারণা করা হয় যে, কারাগারে থাকার সময় সেখানকার পরিবেশের জন্য ভয়ঙ্কর মাত্রার ভিটামিন-ডি ও ক্যালসিয়ামের শূন্যতা দেখা দিয়েছে, যা তার হাড়ের জন্য মারাত্মক পরিণতি ডেকে আনতে পারে। এমনিতেই অনেক আগে থেকেই তিনি বাম কাঁধ ও হাতের ব্যথায় ভুগছিলেন। এখন সেই ব্যথা ডান কাঁধ ও হাতে সম্প্রসারিত হয়ে মারাত্মক রূপ ধারণ করেছে। তিনি এখন দুই হাতেই যন্ত্রণা ভোগ করছেন। জমির উদ্দিন সরকার বলেন, খালেদা জিয়ার অসুস্থতা যেন চরম অবনতি না ঘটে, সে জন্য তাকে অবশ্যই বিশেষায়িত হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা করানো অত্যন্ত জরুরি। তারা অবিলম্বে খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি এবং তার পছন্দনীয় হাসপাতালে সুচিকিৎসার জোর দাবি জানাচ্ছেন। সাবেক এই স্পিকার অভিযোগ করেন, দেশ কর্তৃত্ববাদী শাসনের মহাশৃঙ্খলের মধ্যে আবদ্ধ হয়েছে বলে ন্যায়বিচার নিরুদ্দেশ হয়েছে। সে কারণে অন্যায় এবং অবিচারের এক চরম বহিঃপ্রকাশের ফলশ্রম্নতি হচ্ছে খালেদা জিয়াকে মুক্তি না দেয়া। অশুভ উদ্দেশে কারাগারে আদালত বসানো হচ্ছে। বিএনপির এই নেতা অভিযোগ করেন, 'প্রধানমন্ত্রী লন্ডনে বলেছেন, খালেদা জিয়া কোনো দিনই কারাগার থেকে বের হবেন না। তিনি দেশে এসে সেটি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বাস্তবায়ন করছেন। ইতোমধ্যে কেরানীগঞ্জে আদালত স্থানান্তরের এসআরও জারি করা হয়েছে। এই নির্দেশ কিসের জন্য এবং কার জন্য করা হচ্ছে, তা জনগণের বুঝতে বাকি নেই।' খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা করা হয়েছে অভিযোগ করে জমির উদ্দিন সরকার বলেন, খালেদা জিয়ার নামে বেশ কয়েকটি বানোয়াট মামলা করা হয়েছে। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে খালেদা জিয়াকে হয়রানি ও বিপর্যস্ত করার জন্য এসব মামলা করা হয়েছে। খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা ও সাজা প্রদানে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়নি। এর পেছনে প্রতিহিংসা কাজ করেছে। এখন দেশে-বিদেশে বিভিন্ন অধিকার গ্রম্নপ, মানবাধিকার সংস্থা এমনকি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের সরকারগুলোর পক্ষ থেকেও খালেদা জিয়ার মামলাকে সাক্ষ্য প্রমাণহীন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে অভিহিত করা হয়েছে। এ সময় খালেদা জিয়ার প্যারোলে মুক্তির বিষয়ে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, প্যারোলের কোনো চিন্তা-ভাবনা নেই। অপর এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপির অপর স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ বলেন, সরকারের একটি অংশ ষড়যন্ত্র করছে। তাই চিকিৎসাধীন অবস্থায় খালেদা জিয়াকে কেরানীগঞ্জে নেয়া হচ্ছে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, ভাইস চেয়ারম্যান এ জেড এম জাহিদ হোসেন, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।