রাজধানীর পুরান ঢাকার হাজারীবাগ গজমহল এলাকার আহসানুল হক ও সুরভী দম্পতি স্বাধীনতা দিবসের ছুটিতে তাদের ছোট্ট মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ঘুরে দেখতে যান। মোটরসাইকেলে ঘণ্টাখানেক ঘোরাঘুরি করতে না করতেই গরম ও পানি পিপাসায় তাদের মেয়েটি ছটফট করতে থাকে। উপায় না দেখে আহসানুল হক মেয়েকে ডাব কিনে খাওয়ান।
দুপুর দেড়টায় এই প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে আহসানুল হক বলেন, 'মৌসুম শুরু হতে না হতেই গরমে অস্থির হয়ে গেলাম। হেলমেট মাথা থেকে সরাতেই দেখা গেল, তার মাথা ঘামে ভিজে গেছে।'
ডাবওয়ালাকে পাওনা মিটিয়ে তিনি বলেন, 'ভেবেছিলাম স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত ঘুরে বেড়াব। কিন্তু গরমে অস্থির হয়ে বাসা ফিরছি- এই বলে তিনি মোটরসাইকেল স্ট্যার্ট দেন।'
আবহাওয়া অধিদপ্তরও বলছে, রাজধানীতে মঙ্গলবার বেশ গরম আবহাওয়া ছিল। দুপুর ২টা পর্যন্ত ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৬ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল। সোমবার ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৫ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল। আগামী ৭২ ঘণ্টায় তাপমাত্রা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
সরেজমিন রাজধানীর ধানমন্ডি, লালবাগ, কলাবাগান, এলিফ্যান্ট রোড, শাহবাগ ও রমনা এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, হঠাৎ করে গরম পড়ার কারণে ছুটির দিন হওয়া সত্ত্বেও রাস্তাঘাটে লোকজনের উপস্থিতি অপেক্ষাকৃত কম। গরমের কারণে দিনমজুর ও রিকশাচালকসহ শ্রমজীবী মানুষ বেশি বিপাকে পড়েছেন। তাদের অনেককেই তেষ্টা মেটাতে ফুটপাতে আইসক্রিম, কুলফি, আনারস, আখের রস ও খাবার পানীয় কিনে খেতে দেখা যায়।
নীলক্ষেত মোড়ে যাত্রী নামিয়ে কোমরে বাঁধা গামছাটি খুলে ঘাম মুছছিলেন মধ্যবয়সী রিকশাচালক আবু আলী। তিনি বলেন, দুপুর ১টা পর্যন্ত চারটি ট্রিপ চালিয়ে ২০০ টাকা রোজগার হয়েছে। গরমের কারণে আর রিকশা চালাতে ইচ্ছা করছে না বলে জানান তিনি।
গরমের কারণে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত লোকজন ঘরের বাইরে বের না হলেও বিকালে ঢাবি এলাকাসহ রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে মানুষের ঢল নামার সম্ভাবনা রয়েছে।