বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
গাজীপুরে বাসচাপায় ২ কলেজছাত্র নিহত

উল্টোপথে গিয়ে শিক্ষার্থীকে পিষে দিল বাস

যাযাদি ডেস্ক
  ২৪ মার্চ ২০১৯, ০০:০০
আপডেট  : ২৪ মার্চ ২০১৯, ১০:৩৪
শনিবার ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কের মেদিনীমন্ডল এলাকায় উল্টো পথে গিয়ে বনফুল পরিবহনের একটি বাস মেদিনীমন্ডল আনোয়ার চৌধুরী উচ্চবিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র অনন্তকে পিষে দিলে ঘটনাস্থলেই সে মারা যায়। এতে ক্ষুদ্ধ জনতা ও শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন -যাযাদি

ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কের মেদিনীমন্ডল এলাকায় উল্টো পথে গিয়ে এক শিক্ষার্থীকে পিষে দিল বনফুল পরিবহনের একটি বাস। এতে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারায় ওই শিক্ষার্থী। শনিবার বেলা ২টার দিকে ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কের মেদিনীমন্ডল এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত শিক্ষার্থীর নাম অনন্ত (১২)। সে মেদিনীমন্ডল আনোয়ার চৌধুরী উচ্চবিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র ও উত্তর মেদিনীমন্ডল এলাকার মালয়েশিয়া প্রবাসী রাজা মিয়ার ছেলে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শনিবার বেলা ২টার দিকে ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কের মেদিনীমন্ডল এলাকা দিয়ে রাস্তা পার হচ্ছিল অনন্ত। এ সময় বেপরোয়া ঢাকা-খুলনা রোডের বনফুল পরিবহন (ঢাকা মেট্রো-ব-১৫-২১৮০) নামে একটি যাত্রীবাহী বাস উল্টো পথে গিয়ে শিক্ষার্থী অনন্তকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারায় অনন্ত। এরপর বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করে রাখে। প্রায় এক ঘণ্টা পর যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। লৌহজং উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কাবিরুল ইসলাম খান বলেন, এ ধরনের সড়ক দুর্ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। যাত্রীবাহী বাসটি উল্টো পথে গিয়ে শিক্ষার্থী অনন্তকে চাপা দেয়। পুলিশ বাসটি আটক করতে সক্ষম হয়েছে। কিন্তু চালক ও হেলপার পালিয়ে যায়। তাই তাদের আটক করা সম্ভব হয়নি। ইতোমধ্যে তিনি জেলা প্রশাসকের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। ওই বাসের চালক-হেলপার ও মালিককে খোঁজে বের করে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ইউএনও মো. কাবিরুল ইসলাম খান আরও বলেন, মহাসড়কের পাশে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। তাই সেতু প্রকল্পের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে রাস্তা পারাপারের জন্য এই এলাকায় আন্ডারপাস কিংবা ওভার ব্রিজ করার ব্যবস্থা নেয়া হবে। বাসচাপায় ২ বন্ধু নিহত এদিকে গাজীপুরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী দুই কলেজছাত্র নিহত হয়েছে। এ সময় তাদের এক সহপাঠীসহ আরও দুজন আহত হয়েছেন। শনিবার দুপুরে মহানগরের সালনা এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলো- গাজীপুর মহানগরের মাস্টারবাড়ি এলাকার জুম্মান হোসেন নাছির (১৮) ও ভীমবাজার এলাকার রবিন (২২)। আহত হলো- দক্ষিণ বাউপাড়া এলাকার আলামিন (১৮) সবাই স্থানীয় লিঙ্কন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র। এ ছাড়া আহত অপরজন হলো অটোরিকশার যাত্রী আসোয়াত (১১)। গাজীপুর সদর থানার এসআই শহিদুল ইসলাম জানান, মহানগরের ইটাহাটা এলাকার লিঙ্কন কলেজ থেকে মোটরসাইকেলে চড়ে তিন বন্ধু বাড়িতে যাওয়ার পথে দুপুর পৌনে ১টার দিকে দক্ষিণ সালনা এলাকায় কনকর্ড গার্মেন্টের সামনে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে বিপরীতগামী একটি অটোরিকশার সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এতে মোটরসাইকেলের তিন আরোহী ছিটকে মহাসড়কের ওপর পড়ে যায়। এ সময় ময়মনসিংহগামী সৌখিন পরিবহনের একটি বাস কলেজছাত্র নাছিরকে চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই সে নিহত হয়। অপরদিকে আহত রবিনকে ঢাকা মেডিকেলে নেয়ার পথে সে মারা যায়। তাদের সঙ্গে থাকা অপর একজন আহত হয়। তাদের উদ্ধার করে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে জানান এসআই। শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক প্রণয় ভূষণ জানান, আহত আলামিন ও আসোয়াতকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

হেলপারের ধাক্কায় বাসের নিচে সিকৃবি শিক্ষার্থী

এদিকে বাগবিত-ার জেরে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিকৃবি) ওয়াসিম আব্বাস (২১) নামে এক ছাত্রকে বাসচাপা দিয়ে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে।

শনিবার বিকালে সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের শেরপুরে উদার পরিবহনের ওই বাসের চাপায় তার মৃত্যু হয়। ওয়াসিম বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী।

প্রত্যক্ষদর্শী বাসযাত্রীরা জানান, সিলেট-ময়মনসিংহ রুটে চলাচলকারী উদার পরিবহনের বাসটির চালক ও হেলপারের সঙ্গে সিকৃবির কয়েকজন ছাত্রের বাগবিত-া হয়। শিক্ষার্থীরা সিলেট-ঢাকা মহাসড়কে নামতে চাইলে বাস থেকে কয়েকজনকে নামিয়ে দিয়েই দ্রুত গতিতে চলতে থাকে। এ সময় ওয়াসিম বাসের দরজার হাতল ধরে ঝুলতে থাকলে হেলপার গাড়ির দরজা লাগিয়ে দেন এবং চালক বাস না থামিয়ে চালাতে থাকেন। এতে ওয়াসিম বাসের নিচে চাপা পড়েন। পরে দ্রুত ওয়াসিমকে উদ্ধার করে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

সিকৃবির ছাত্র শিপলু রায় বলেন, ওয়াসিমের গ্রামের বাড়ি হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলায়। তারা কয়েকজন বন্ধু মিলে একটি বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে ফেরার পথে নবীগঞ্জের টোলপ্লাজা থেকে উদার পরিবহনে ওঠেন।

শিপলুর অভিযোগ, তারা সিলেট-ময়মনসিংহ সড়কে নামার সময় হেলপার তাদের ধাক্কা দেন এবং জোর করে দরজা লাগিয়ে দেয়ায় ওয়াসিম বাসের নিচে চাপা পড়েন।

শেরপুর হাইওয়ে পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) কামরুল ইসলাম বলেন, উদার পরিবহনের বাসটি (ঢাকা গ ১৪-১২৮০) তারাকান্দি, মধুপুর হয়ে ময়মনসিংহ সড়কে চলাচল করে। ওয়াসিমসহ সিকৃবির কয়েকজন ছাত্র ঘটনাস্থলে নামার সময় হেলপার বাসের দরজা লাগিয়ে দেন। পরে চালক বাস দ্রুত গতিতে চালিয়ে যাওয়ার সময় ওয়াসিম বাসের নিচে পড়ে নিহত হন।

পরে বাসটিকে ওসমানী নগরের বেগমগঞ্জ থেকে ধাওয়া করে পুলিশ আটক করে। তবে চালক ও হেলপার পালিয়েছেন বলেও জানান এসআই কামরুল।

সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিকৃবি) রেজিস্ট্রার বদরুল ইসলাম জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিপলু ফোনে তাকে ঘটনাটি জানিয়েছেন। খবর পেয়ে তিনি হাসপাতালের উদ্দেশে রওনা করেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে