শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
গণকবর জরিপ

মুক্তিযুদ্ধে ২০ জেলায় গণহত্যা ৫১২১টি

একেকটি গণহত্যায় সর্বনিম্ন ৫ জন থেকে ১ হাজারেরও বেশি মানুষকে হত্যা করা হয়। ১৯৭১ গণহত্যা-নির্যাতন আর্কাইভ ও জাদুঘর ট্রাস্টের জরিপে উঠে এসেছে মুক্তিযুদ্ধের এমন চিত্র
যাযাদি রিপোর্ট
  ২৩ মার্চ ২০১৯, ০০:০০

১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের ২০ জেলায় ৫ হাজার ১২১টি গণহত্যার ঘটনা ঘটেছে। একেকটি গণহত্যায় সর্বনিম্ন ৫ জন থেকে ১ হাজারেরও বেশি মানুষকে হত্যা করা হয়। ১৯৭১ গণহত্যা-নির্যাতন আর্কাইভ ও জাদুঘর ট্রাস্টের জরিপে ওঠে এসেছে মুক্তিযুদ্ধের এমন চিত্র।

শুক্রবার বাংলা একাডেমির শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে আনুষ্ঠানিকভাবে এ জরিপের ফলাফল প্রকাশ করা হয় ট্রাস্টের পক্ষ থেকে। ?

'গণহত্যা-বধ্যভূমি ও গণকবর জরিপ' শীর্ষক সেমিনারে আরও জানানো হয়, মুক্তিযুদ্ধে এ ২০ জেলায় বধ্যভূমির সংখ্যা ৪০৪, গণকবর ৫০২ এবং নির্যাতন কেন্দ্র ছিল ৫৪৭টি।

জেলাগুলো হলো- নীলফামারী, নারায়ণগঞ্জ, বগুড়া, নাটোর, কুড়িগ্রাম, পাবনা, রাজশাহী, সাতক্ষীরা, ভোলা, খুলনা, গাইবান্ধা, জামালপুর, নড়াইল, পঞ্চগড়, মৌলভীবাজার, যশোর, লালমনিরহাট, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কক্সবাজার ও বরিশাল।

সেমিনারে জরিপ ফলাফলের সারসংক্ষেপ তুলে ধরেন আর্কাইভ ও জাদুঘর ট্রাস্টের সভাপতি অধ্যাপক ড. মুনতাসীর মামুন। এসময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. আবু হেনা মোস্তফা কামাল।

সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী বলেন, 'আমি গণহত্যা দেখেছি পরোক্ষভাবে। মুক্তিযুদ্ধের সময় স্কুলে পড়তাম। আমার দুই ভাই মুক্তিযোদ্ধা ছিল। সে সময়ের প্রেক্ষাপট যে কতোটা ভয়াবহ তা নিজে না দেখলে বোঝা যাবে না। গণকবর থেকে একজনের লাশ নিজের স্বজনের মনে করে মানুষরা নিয়ে যাচ্ছে। লাশ তো না, হাড়গোড় শুধু। ২০টি জেলা নিয়ে জরিপ করায় এসব সংখ্যা ওঠে এসেছে। ৬৪টি জেলা নিয়ে হিসাব করলে ভাবুন পরিস্থিতি আরও কত ভয়াবহ।'

এর আগে সেমিনারে সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. মুনতাসীর মামুন বলেন, 'আমাদের মুক্তিযুদ্ধের কথা ওঠলে আমরা শুধু বিজয় দেখি। কিন্তু এ বিজয়ের পেছনে কতো যে মানুষকে হত্যা করা হয়েছে তা আমরা দেখেও যেন দেখি না। গণহত্যার পেছনে একটা রাজনীতি থাকে। জিয়া, খালেদা, নিজামী গণহত্যা নিয়ে সেই রাজনীতি করেছেন। পাকিস্তানের এজেন্ডা বাস্তবায়নে রাজনীতি করেছেন। তারা বিজয়ের কথা বলে কিন্তু গণহত্যার কথা বলে না। এসব গণহত্যার বিচার করতে হবে। বাংলাদেশসহ অন্যান্য জায়গার গণহত্যার বিচার হলে আজ মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা হতো না।'

নিজেদের জরিপ সম্পর্কে মুনতাসীর মামুন বলেন, 'আমরা যে শুধু এসব গণহত্যা, গণকবর, বধ্যভূমি এবং নির্যাতন কেন্দ্র নিয়ে গতানুগতিক জরিপ করেছি তা নয় বরং জিপিএস সার্ভে করেছি। এটা বাংলাদেশে প্রথম এবং বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে হলোকাস্টের (জার্মানিতে ইহুদী গণহত্যা) পর দ্বিতীয়। আমরা এটিকে ম্যাপে অবস্থান করেছি। আপনারা যদি ম্যাপ দেখেন তাহলে পুরো বাংলাদেশে গণহত্যা, গণকবর, বধ্যভূমি আর নির্যাতন কেন্দ্র ছাড়া কিছু পাবেন না।'

সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় এ জিপিএস সার্ভে গুগলে অন্তর্ভুক্তি করানোর দাবি জানানো হয় ট্রাস্টের পক্ষ থেকে। একই সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধে গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জনে সরকারকে কাজ করারও আহ্বান জানানো হয়।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<42288 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1