শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

দেশে আসার আগে ফানর্বরো এয়ারশোতে ‘আকাশবীণা’

যাযাদি ডেস্ক
  ১৯ জুলাই ২০১৮, ০০:০০
আপডেট  : ১৯ জুলাই ২০১৮, ০৯:৩৫
বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের নতুন বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার ‘আকাশবীণা’

দেশে আসার আগে যুক্তরাজ্যের ফানর্বরো এয়ারশোতে দেখানো হলো বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের নতুন বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার ‘আকাশবীণা’। নিমার্তা প্রতিষ্ঠান বোয়িং এয়ারশোতে তাদের এই সিরিজের উড়োজাহাজ হিসেবে বিমানের আকাশবীণাকে বেছে নিয়েছে প্রদশর্নীর জন্য। বোয়িং ও বিমান কমর্কতার্রা বলছেন, আকাশবীণা এখন বাংলাদেশে আসার জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত। সব ঠিক থাকলে আগামী ২০ আগস্ট উড়োজাহাজটি ঢাকায় নামবে। তারপর আনুষ্ঠানিকভাবে আকাশবীণাকে যুক্ত করে নেয়া হবে বাংলাদেশ বিমানের বহরে। তার আগে ফানর্বরো এয়ারশোতে বোয়িংয়ের ডিসপ্লের অংশ হিসেবে আকাশবীণার প্রদশর্নীর ফলে আগাম প্রচারের সুযোগ হওয়ায় বিমান কমর্কতার্রা দারুণ খুশি। মঙ্গলবার হ্যাম্পশায়ারের ফানর্বরো বিমানবন্দরের আকাশে নিচু দিয়ে উড়ে গিয়ে দশর্কদের মাথার ওপর চক্কর দেয় ‘আকাশবীণা’। কয়েকটি চক্কর দিয়ে আবার নেমে আসে রানওয়েতে। এয়ারশোতে উপস্থিত বোয়িংয়ের প্রোডাক্ট মাকেির্টং (কমাশির্য়াল এয়ারলাইন্স) বিভাগের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জেমস ফ্রিটাস বলেন, ‘বিমানের সঙ্গে আমাদের চমৎকার একটা পাটর্নারশিপ আছে। বিমান এই এয়ারক্রাফট এখানে প্রদশের্নর অনুমতি দেয়ায় আমরা আনন্দিত।’ ফানর্বরোর দ্বিবাষির্ক এই এয়ারশো এভিয়েশন খাতের ক্রেতা ও বিক্রেতাদের কাছে খুবই গুরুত্বপূণর্। বোয়িং, এয়ারবাস, সাব, মিৎসুবিসিসহ বিভিন্ন নিমার্তা প্রতিষ্ঠান তাদের তৈরি উড়োজাহাজ, হেলিকপ্টার ও সামরিক আকাশযান এখানে প্রদশর্ন করছে। এয়ারশোর দ্বিতীয় দিন মঙ্গলবার বিভিন্ন কোম্পানি মোট ৫৩০টি এয়ারক্রাফট বিক্রির অডার্র পেয়েছে, যার মোট দাম ৯৫.৫ বিলিয়ন ডলার। নিমার্তা প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি ক্রেতা, বিনিয়োগকারী এবং বিমান পরিবহন সংস্থার কমর্কতার্রাও অংশ নেন এই প্রদশর্নীতে। এয়ারশোর প্রথম পঁাচ দিন অথার্ৎ ১৬ থেকে ২২ জুলাই বরাদ্দ কেবল ব্যবসার জন্য। শেষ দুই দিন থাকবে জনসাধারণের জন্য উন§ুক্ত। বিমানের লন্ডন অফিস মঙ্গলবার ব্রিটিশ বাংলাদেশি সাংবাদিকদের ফানর্বরো এয়ারশোতে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল আকাশবীণার মহড়া দেখার জন্য। পরে বোয়িং কমর্কতার্রা এই উড়োজাহাজের বিভিন্ন অংশ ঘুরিয়ে দেখান সাংবাদিকদের। তাদের জানান বিভিন্ন সুযোগ সুবিধার কথা। টানা ১৬ ঘণ্টা উড়তে সক্ষম এই উড়োজাহাজে রয়েছে যাত্রীদের জন্য নানা ধরনের বিনোদনের ব্যবস্থা। যাত্রীরা ৪৩ হাজার ফুট উঁচুতে নিরবচ্ছিন্ন ওয়াইফাই সুবিধা এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশে টেলিফোনে কথা বলার সুযোগ পাবেন। এছাড়া কয়েকটি টেলিভিশন চ্যানেল দেখা যাবে সরাসরি। জেমস ফ্রিটাস বলেন, এই উড়োজাহাজে ভ্রমণের অভিজ্ঞতা হবে অন্যরকম। দীঘর্ ভ্রমণের পরও যাত্রীরা সতেজ অনুভব করবেন। বিমানের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) শাকিল মেরাজ বলেন, বিমানবহরে ড্রিমলাইনার সংযোজন করে আমরা বাংলাদেশ বিমানকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে চাই। নতুন রুট চালু করতে চাই, ভ্রমণকারীদের নতুন অভিজ্ঞতা দিতে চাই। ঢাকা পৌঁছানোর পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিমানের এই নতুন এয়ারক্রাফটের উদ্বোধন করবেন বলে জানান তিনি। যুক্তরাজ্যে বিমানের কান্ট্রি ম্যানেজার শফিকুল ইসলাম জানান, বোয়িং ৭৭৭ এ যেখানে ৪১৯টি আসন থাকে, সেখানে ড্রিমলাইনারের বিজনেস ক্লাসে ২৪টি সম্পূণর্ ফ্ল্যাটবেড সিট এবং ইকোনমি ক্লাসে ২৪৭টি আসন রয়েছে। আসন কম হওয়ায় আপাতত লন্ডন-সিলেট-ঢাকা রুটে আকাশবীণা ব্যবহারের পরিকল্পনা নেই। তবে ভবিষ্যতে এই রুটে ফ্লাইট বাড়লে তখন ড্রিমলাইনারও চালানো হতে পারে। ফানর্বরো এয়ারশোতে প্রদশের্নর পর আকাশবীণা ফিরে যাবে যুক্তরাষ্ট্রের সিয়াটলে বোয়িং কারখানায়। আগস্টের দ্বিতীয় সপ্তাহে বিমান বাংলাদেশের একটি অগ্রবতীর্ দল সেখানে যাবে উড়োজাহাজটি বুঝে নেয়ার জন্য। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠান বোয়িংয়ের কাছ থেকে চারটি ড্রিমলাইনারসহ মোট ১০টি উড়োজাহাজ কেনার জন্য ২০০৮ সালে চুক্তি করে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। সে অনুযায়ী, চারটি বোয়িং ৭৭৭-৩০০ ইআর এবং দুটি ৭৩৭-৮০০ উড়োজাহাজ ইতোমধ্যে বিমানকে সরবরাহ করেছে বোয়িং। প্রথম ড্রিমলাইনারটি আগস্টে বিমান বহরে যুক্ত হওয়ার পর দ্বিতীয়টি আসবে নভেম্বরে। এরপর আগামী বছরের সেপ্টেম্বরে আরও দুটি ড্রিমলাইনার বাংলাদেশে পাঠাবে বোয়িং।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে