শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১
দÐিত হওয়ার শঙ্কা

বিকল্প প্রাথীর্র খেঁাজে বিএনপি

জ্ঞাত আয়বহিভ‚র্ত সম্পদ অজর্ন, বিদেশে অথর্পাচার এবং নাশকতাসহ বিভিন্ন ফৌজদারি মামলায় বিএনপির বেশ কয়েকজন শীষর্স্থানীয় নেতা দÐিত হয়ে একাদশ জাতীয় সংসদ নিবার্চনে প্রাথীর্ হওয়ার যোগ্যতা হারাতে পারেন বলে আশঙ্কা
সাখাওয়াত হোসেন
  ১৯ জুলাই ২০১৮, ০০:০০

জ্ঞাত আয়বহিভ‚র্ত সম্পদ অজর্ন, বিদেশে অথর্পাচার এবং নাশকতাসহ বিভিন্ন ফৌজদারি মামলায় বিএনপির বেশ কয়েকজন শীষর্স্থানীয় নেতা দÐিত হয়ে জাতীয় সংসদ নিবার্চনে প্রাথীর্ হওয়ার যোগ্যতা হারাতে পারেন। বতর্মান পরিস্থিতিতে এ আশঙ্কা অনেকটা জোরালো হওয়ায় ওই নেতাদের বিকল্প যোগ্য প্রাথীর্ আগেভাগেই খুঁজে রাখতে চাইছে বিএনপি। তাই দলের গুরুত্বপূণর্ নেতাদের মধ্যে কার কোন মামলা আগামী জাতীয় সংসদ নিবার্চনের আগে নিষ্পত্তি হতে পারে এবং এর সম্ভাব্য সাজা কী হবে তা গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখছে দলটি। একই সঙ্গে বিকল্প প্রাথীের্দর যাতে দ্রæততম সময়ের মধ্যে ভোটারদের কাছে পরিচিত ও গ্রহণযোগ্য করে তোলা যায় এ জন্য স্থানীয় নেতাদের আগাম প্রস্তুতি নেয়ার নিদের্শ দেয়া হয়েছে।

দলের দায়িত্বশীল একাধিক নেতা জানান, বিএনপির শীষর্স্থানীয় নেতাদের নিবার্চন থেকে দূরে রাখতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার সূদূরপ্রসারী পরিকল্পনা করে তাদের অনেকের বিরুদ্ধে মামলার জাল বিছিয়েছে। এখন নিবার্চনের দিনক্ষণ ঘনিয়ে আসায় দ্রæত এসব মামলা নিষ্পত্তির তোড়জোড় চলছে। এদের মধ্যে প্রায় দুডজন নেতার দুই বছরের বেশি সাজা হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

সংবিধান অনুযায়ী, নৈতিক স্খলনের জন্য যদি কারও ন্যূনতম দুই বছরের সাজা হয় তাহলে তিনি সংসদ নিবার্চন করতে পারবেন না।

যদিও এ নিয়ে আইনজ্ঞদের ভিন্ন মত রয়েছে। কেউ বলেছেন, নৈতিক স্খলনের কারণে দুই বছরের বেশি কারাদÐে নিবার্চনে অযোগ্য হলেও আপিল করে ভোটে অংশ নেয়ার সুযোগ রয়েছে। আবার কেউ বলছেন, দÐিত ব্যক্তি জাতীয় নিবার্চনে অংশ নিতে পারবেন কি পারবেন না, তা উচ্চ আদালত ও নিবার্চন কমিশনের ওপর নিভর্রশীল।

তবে সংবিধান বিশেষজ্ঞ ও সিনিয়র আইনজীবী ড. শাহ্দীন মালিকের ভাষ্য, ‘আমি যদ্দুর জানি, ফৌজদারি অপরাধে দÐপ্রাপ্ত ব্যক্তির নিবার্চনে অংশ নেয়ার বিষয়টি এখনো সেটেল হয়নি। কোনো রায়ে নেই, আবার আইনও হয়নি। অনেক আগে একটি রায়ে বিচারপতি জয়নাল আবেদীন বলেছিলেন, নিবার্চনে অংশ নিতে পারবেন। আর বিচারপতি খায়রুল হক বলেছেন পারবেন না। বিষয়টি সুরাহার জন্য তৃতীয় কোনো বেঞ্চে যায়নি।’

বিএনপির হাইকমান্ডের পযাের্লাচনা, এমনিতেই আগামী নিবার্চনে দলকে নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে। তাই এ ধরনের ভিন্নমতের কোনো ইস্যুতে ঝুঁকি নেয়া ঠিক হবে না। বিশেষ করে দÐিত প্রাথীর্র নিবার্চনে অংশগ্রহণের সুযোগ দেয়ার বিষয়টি নিবার্চন কমিশনের ওপর নিভর্রশীল হয়, সেক্ষেত্রে তা এড়িয়ে চলাই সমীচীন বলে মনে করেন বিএনপি নেতারা। তাদের শঙ্কা, দলের গুরুত্বপূণর্ নেতাদের মামলার রায় নিবার্চনের ঠিক আগ মুহ‚তের্ দেয়া হবে, যাতে তারা এ ব্যাপারে উচ্চ আদালতে আপিল করার সুযোগ না পান।

বিএনপির সম্ভাব্য দÐিত নেতাদের বিকল্প প্রাথীর্ খেঁাজার কথা স্বীকার করে দলের প্রথম সারির একাধিক নেতা জানান, কৌশলী আওয়ামী লীগকে ফঁাকা মাঠে গোল দেয়ার সুযোগ ঠেকাতেই এ ছক তৈরি করা হয়েছে। তবে সরকার যাতে দলের দায়িত্বশীল নেতাদের দÐ দিয়ে নিবার্চন থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে না পারে এজন্য আগে সবোর্চ্চ আইনি লড়াই চালিয়ে যাওয়া হবে। পাশাপাশি রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করে নিবার্চনে অংশ নেয়ারও প্রস্তুতি রাখা হচ্ছে বলেও দাবি করেন তারা।

এ প্রসঙ্গে বিএনপির মহাসচিব মিজার্ ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করে বলেন, আগামী নিবার্চনে জয়লাভের জন্য সরকার নীল নকশা নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে। তারা বিএনপির সিনিয়র নেতাদের নিবার্চন থেকে দূরে রাখতে চাচ্ছে। এজন্য আদালতকে ব্যবহার করছে। সরকার বিএনপির নেতাদের বিভিন্ন মামলায় দ্রæত সাজা দেয়ার চেষ্টা করছে।

ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, বিএনপির নেতাকমীের্দর বিরুদ্ধে দায়েরকৃত সব মামলাই ভিত্তিহীন এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। সরকারবিরোধী নেতাকমীের্দর হয়রানির জন্য মামলা দিয়ে কোটর্কাচারিতে দৌড়াদৌড়ির মধ্যে রেখেছে। মামলার কারণে বিএনপি নেতাদের আগামী জাতীয় নিবার্চনে কিছু সমস্যা হতে পারে।

দলের গুরুত্বপূণর্ নেতাদের মামলার আইনজীবী অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া ও অ্যাডভোকেট মাসুদ আহমেদ তালুকদার বলেন, সরকার যেভাবে আদালতকে ব্যবহার করছে তাতে আগামী নিবার্চনের আগে অনেকের মামলার রায় দেয়া হলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, বিএনপির শীষর্স্থানীয় চার নেতা ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মিজার্ আব্বাস, আবদুল্লাহ আল নোমান এবং এ কে এম মোশারফ হোসেনের দুনীির্তর মামলা শেষ পযাের্য়। এ ছাড়া ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, মিজার্ ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ আরও ১৮ নেতার বিরুদ্ধে মামলাগুলো দ্রæত নিষ্পত্তির জন্য সরকার ও দুদক উদ্যোগ নিয়েছে।

সরকারি সূত্রগুলো বলছে, নিবার্চনের আগে যত বেশি সম্ভব মামলা নিষ্পত্তির জন্য সংশ্লিষ্ট আইন কমর্কতাের্দর নিদের্শ দেয়া হয়েছে। এসব মামলায় দÐিত হলে বিএনপির অধিকাংশ শীষর্ নেতাই নিবার্চনের অযোগ্য হবেন।

আদালত সূত্র জানায়, দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য, সাবেক পূতর্মন্ত্রী মিজার্ আব্বাসের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয় বহিভূর্ত ৭ কোটি ৫৪ লাখ টাকার সম্পদ অজর্ন এবং ৫৭ লাখ ২৬ হাজার টাকার সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে ২০০৭ সালের ১৬ আগস্ট দুনীির্ত দমন কমিশনের দায়ের করা মামলা শেষ পযাের্য়। ২০০৮ সালের ১৪ মে এ মামলার অভিযোগপত্র দেয়া হয়। ইতোমধ্যে ২২ জনের সাক্ষ্য শেষ হয়েছে। দুদকের আইনজীবী মীর আহমেদ আলী বলেছেন, তদন্ত কমর্কতার্র সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হলেই সাক্ষ্য গ্রহণ কাযর্ক্রম সমাপ্ত হবে। মিজার্ আব্বাসের আইনজীবী আবদুর রেজাক খান বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করায় মামলাটি এখন দ্রæত নিষ্পত্তির দিকে এগোচ্ছে।

এ অবস্থায় ঢাকা-৮ (মতিঝিল) আসন থেকে বরাবর নিবার্চন করা বিএনপির এ গুরুত্বপূণর্ নেতার বিকল্প হিসেবে যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেলকে দলীয় প্রাথীর্ করার বিষয়টি অনেকটা চূড়ান্ত করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, কারাগারে থাকার কারণে মিজার্ আব্বাস গত নিবার্চনে অংশ নিতে না পারায় ওই সময়ও এ আসনে সোহেলকে বিএনপির মনোনয়ন দেয়া হয়েছিল। তবে কোনো কারণে তাকেও নিবার্চন থেকে সরে দঁাড়াতে হলেও এ আসনে যাতে বিকল্প শক্তিশালী প্রাথীর্ দেয়া যায় তা-ও গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় রেখেছে বিএনপি।

শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে বেশ কয়েক বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রে চিকিৎসাধীন বিএনপির আরেক ডাকসাইটে নেতা সাদেক হোসেন খোকা মামলা-সাজা মাথায় নিয়ে নিবার্চনের আগে দেশে না ফিরলে ঢাকা-৬ আসনে তার ছেলে প্রকৌশলী ইসরাক হোসেনকে মনোনয়ন দেয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে রাজনৈতিক কমর্কাÐে ততটা সক্রিয় না হওয়ায় তার ব্যাপারে এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। বরং তার পরিবতের্ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশারকে এ আসনে মনোনয়ন দেয়ার ব্যাপারে অধিক গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে ২০০৭ সালের ১০ সেপ্টেম্বর দুদকের করা ২ কোটি ৭৬ লাখ টাকা আত্মসাতের মামলাটি দ্রæত নিষ্পত্তির দিকে এগোচ্ছে। এ অবস্থায় তার বিকল্প হিসেবে যশোর-৩ থেকে তরিকুল ইসলামের স্ত্রী অধ্যাপিকা নাগির্স বেগম কিংবা ছেলে বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিতকে একাদশ সংসদ নিবার্চনে বিএনপির প্রাথীর্ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। যদিও তরিকুল ইসলামের বিকল্প হিসেবে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সাবেরুল হক সাবুর কথাও দলীয় হাইকমান্ড বিবেচনায় রেখেছে বলে জানা গেছে।

বিদেশে অথর্পাচারের অভিযোগে সাবেক মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনের বিরুদ্ধে ২০১৪ সালের ৬ ফেব্রæয়ারি দুদকের করা মামলার বিচার কাজ শেষ পযাের্য় রয়েছে। এ মামলার বিচার শুরু হয় ২০১৫ সালের ২৮ অক্টোবর। ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১-এ আটজন সাক্ষীর সাক্ষ্য এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। তদন্ত কমর্কতার্র সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হলে আত্মপক্ষ সমথের্নর শুনানি হবে। এরপর যুক্তিতকর্ শেষে রায়ের দিন ঠিক করবে আদালত। গত ৪ মাচর্ এ মামলার পুনঃতদন্ত চেয়ে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন আবেদন করলে তা খারিজ করে দিয়েছে আপিল বিভাগ। এর আগে ৯ জানুয়ারি বিচারপতি ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের হাইকোটর্ বেঞ্চ তার আবেদন খারিজ করেছিলেন।

এ অবস্থায় নিবার্চনের আগমুহ‚তের্ বিচারকাজ গুটিয়ে এনে খন্দকার মোশাররফ হোসেনকে দÐিত করা হলে তার নিবার্চনী আসন কুমিল্লা-১ (দাউদকান্দি ও মেঘনা) ছেলে নিবার্হী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মারুফ আহমেদকে বিএনপি থেকে মনোনয়ন দেয়া হোকÑএমনটাই প্রত্যাশা স্থায়ী কমিটির সিনিয়র এই নেতার। তবে মারুফ হোসেন রাজনীতিতে নবীন ও অনভিজ্ঞ হওয়ায় স্থানীয় নেতাকমীর্রা মোশাররফ হোসেনের পরিবতের্ কুমিল্লা (উত্তর) জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি ওবায়দুল হক ভঁূইয়াকে ধানের শীষের প্রাথীর্ হিসেবে দেখতে চান। এছাড়া বিকল্প হিসেবে সাবেক জ্বালানি উপদেষ্টা ও দৈনিক আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের নামও আলোচনায় রয়েছে।

সাবেক জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেনের দুুনীির্ত মামলার বিচারিক কাযর্ক্রমও শেষ পযাের্য়। কানাডার প্রতিষ্ঠান নাইকো রিসোসর্ লিমিটেড থেকে ৯৫ লাখ টাকা মূল্যের একটি গাড়ি এবং কানাডা-আমেরিকা ভ্রমণের জন্য ৫ হাজার ডলার নেয়ার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে ২০১২ সালে মামলা করে দুদক। এ মামলায় ২৩ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়েছে। এ অবস্থায় তার নিবার্চনী আসন ময়মনসিংহ-৫ (মুক্তাগাছা) তার সৎভাই উপজেলা বিএনপির সভাপতি জাকির হোসেন বাবলু, মুক্তাগাছা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক উপজেলা চেয়ারম্যান জাকারিয়া হারুন, মুক্তাগাছা পৌর মেয়র শহীদুল ইসলাম শহীদ ও সাবেক এমপি আবু রেজা ফজলুল হক বাবলু- এ চার নেতা তার বিকল্প প্রাথীর্ হিসেবে আলোচনায় আছেন।

সাবেক মৎস্য ও পশুসম্পদমন্ত্রী আবদুল্লাহ আল নোমানের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহিভূর্ত সম্পদ অজের্নর অভিযোগে ১৯৯৮ সালে দায়ের করা মামলায় ২০০০ সালের ৩০ মে আদালতে অভিযোগপত্র দেয়া হয়। এরই মধ্যে আটজন সাক্ষীর সাতজনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়েছে। এখন তদন্ত কমর্কতার্র সাক্ষ্য-জেরা চলছে। এরপর আত্মপক্ষ সমথর্ন ও যুক্তিতকর্ শেষে রায়ের জন্য দিন ঠিক করবে আদালত। আইনজীবীদের ধারণা, আগামী তিন থেকে চার মাসের মধ্যে এ মামলার বিচারকাজ শেষ হবে। তার নিবার্চনী আসনে বিকল্প কোনো প্রাথীর্র নাম এখনো শোনা না গেলেও স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী দলীয় হাইকমান্ডের বিবেচনায় রয়েছে বলে জানা গেছে। সংকটময় পরিস্থিতিতে তিনি দুটি আসনে নিবার্চন করতে পারেন।

এদিকে ওয়ান ইলেভেনের সময় দুদকের দায়ের করা মামলাটির অভিযোগ গঠন আদেশ বাতিল চেয়ে হাইকোটের্ আবেদন করেছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। হাইকোটের্র পর ৮ মাচর্ আপিল বিভাগও তার আবেদন খারিজ করে দেয়ায় নিম্ন আদালতে মামলার বিচার চলতে আর আইনগত বাধা নেই।

এ মামলায় গত বছরের ২১ জুন মওদুদ আহমদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬। অভিযোগ গঠন আদেশ বাতিল চেয়ে করা মওদুদের আবেদন গত বছরের ২৫ জুলাই খারিজ করে দেয় হাইকোটর্। একইসঙ্গে যৌক্তিক কারণ ছাড়া ছয় মাসের মধ্যে মামলাটির বিচার সম্পন্নের নিদের্শ দেয়া হয়। হাইকোটের্র এই আদেশের বিরুদ্ধে আবেদন করেন তিনি। ওই আবেদন খারিজ করে দেয় আপিল বিভাগ।

এ অবস্থায় ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ ওই মামলায় দÐিত হয়ে জাতীয় একাদশ নিবার্চন থেকে ছিটকে পড়তে পারেন এ আশঙ্কায় তার নিবার্চনী আসন নোয়াখালী-৫ এ ছাত্রদলের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি বজলুল করিম চৌধুরী আবেদকে বিকল্প প্রাথীর্ হিসেবে বিবেচনায় রাখা হয়েছে।

এছাড়াও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বরচন্দ্র রায়, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া, সালাহউদ্দিন আহমেদ, ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, বরকতউল্লাহ বুলু, শামসুজ্জামান দুদু, শওকত মাহমুদ, সেলিমা রহমান, শাহ মোয়াজ্জেম, মেজর (অব.) হাফিজউদ্দিন আহমেদ, মীর মো. নাছিরউদ্দিন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান, জয়নুল আবদিন ফারুক, মিজানুর রহমান মিনু, দলের যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, মজিবর রহমান সরোয়ার, সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু ও ফজলুল হক মিলনের একাধিক মামলায় বিচারিক প্রক্রিয়া এখন শেষধাপে।

এ অবস্থায় গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের বিকল্প প্রাথীর্ হিসেবে ঢাকা-৩ আসন থেকে তার মেয়ে অপণার্ রায় বিএনপির টিকিট পেতে পারেন বলে স্থানীয় নেতাকমীর্রা আশা করছেন। তবে দলীয় হাইকমান্ড এ আসনে আরও অন্তত দুজন নেতার নাম বিকল্প প্রাথীর্র তালিকায় রেখেছেন। সিরাজগঞ্জ-২ আসন থেকে ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু নিবার্চনে অংশগ্রহণ করতে না পারলে তার সহধমির্ণী ও জেলা বিএনপির সভাপতি রুমানা মাহমুদকে বিকল্প প্রাথীর্ হিসেবে এখনো বিবেচনায় রাখা হয়েছে বলে জানা গেছে। ঢাকা-১৬ আসনে ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়ার বিকল্প হিসেবে ঢাকা উত্তরের সাধারণ সম্পাদক আহসানউল্লাহ হাসানের নাম একরকম চূড়ান্ত পযাের্য় রয়েছে। কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসনে সালাহউদ্দিন আহম্মদের বিকল্প হিসেবে তার স্ত্রী সাবেক এমপি হাসিনা আহম্মদ ধানের শীষের টিকিট পেতে পারেন বলে জানা গেছে। দÐিত হওয়ার কারণে আসন্ন নিবার্চন থেকে দলের ভাইস চেয়ারম্যান বেগম সেলিমা রহমান ছিটকে পড়লে তার বিকল্প হিসেবে বরিশাল-৩ (মুলাদী-বাবুগঞ্জ) আসনে চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাড. জয়নুল আবেদীন মনোনয়ন পেতে পারেন। নোয়াখালী-৩ (বেগমগঞ্জ) থেকে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্যা বুলুর বিকল্প প্রাথীর্ হিসেবে সোস্যাল ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান শিল্পপতি মেজর (অব.) রেজাউল হক, জেলা বিএনপির সদস্য শামীমা বরকত ও ডা. মাজহারুর ইসলাম দোলন বিএনপি হাইকমান্ডের পযাের্লাচনায় রয়েছেন।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান  শাহ মোয়াজ্জেম হোসেনের মুন্সীগঞ্জ-১ আসনে (শ্রীনগর  ও সিরাজদিখান) এ বিকল্প প্রাথীর্ হিসেবে স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, সাবেক সহ প্রচার সম্পাদক মহিউদ্দিন খান মোহন এবং শ্রীনগর উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মমিন আলীর নাম আলোচনায় রয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<4151 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1