শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

ডাক্তারদের নৈতিকতার মান নিয়ে প্রশ্ন হাইকোটের্র

যাযাদি রিপোটর্
  ১৮ জুলাই ২০১৮, ০০:০০

দেশের চিকিৎসকদের নৈতিকতার নাম নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন হাইকোটর্। আদালত বলেন, চুয়াডাঙ্গা শহরের ইম্প্যাক্ট মাসুদুল হক মেমোরিয়াল কমিউনিটি হেলথ সেন্টারে চক্ষু শিবিরে চিকিৎসা নিতে এসে ২০ জনের চোখ হারানোর ঘটনায় তৈরি বিশেষজ্ঞ কমিটির রিপোটর্ প্রমাণ করে দেশে ডাক্তারদের নৈতিকতার মান কোথায়।

মঙ্গলবার এ সংক্রান্ত এক রুলের শুনানির সময় বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোটর্ বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট

অমিত দাস গুপ্ত। সঙ্গে ছিলেন শুভাষ চন্দ্র দাস। ইম্প্যাক্ট মাসুদুল হক মেমোরিয়াল কমিউনিটি হেলথ সেন্টারের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার এম আমীর-উল-ইসলাম। এ ছাড়া স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটনির্ জেনারেল আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক প্রফেসর ডা. আবুল কালাম আজাদ ও চুয়াডাঙ্গার সিভিল সাজর্ন ডা. মো. খাইরুল আলমের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম।

শুনানির শুরুতে ব্যারিস্টার আমির-উল-ইসলাম স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক ও চুয়াডাঙ্গার সিভিল সাজের্নর দাখিল করা পৃথক দুটি তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর শুনানি করেন। শুনানিতে তিনি বলেন, “রিপোটের্ অপারেশনকারী ডাক্তারদের ‘দক্ষ’ উল্লেখ করা হয়েছে।’’ তখন আদালত বলেন, ‘ডাক্তারদের দক্ষতা নিয়ে আমাদের কোনো প্রশ্ন নেই। আমরা জানতে চাই, এখানে কোনো অবহেলা ছিল কি না? চিকিৎসাজনিত কোনো অবহেলার কারণে এ ঘটনা ঘটেছে কিনা? যেহেতু অপারেশনের প্রথম ও তৃতীয় দিন কোনো ঘটনা ঘটেনি, চোখ হারানোর ঘটনা ঘটেছে অপারেশনের দ্বিতীয় দিন, সে ক্ষেত্রে সেদিন (দ্বিতীয় দিনে) যে সব চিকিৎসা যন্ত্রপাতি ব্যবহৃত হয়েছে, তার কোনো না কোনো কিছুতে জীবাণুর উপাদান ছিল, যা সংক্রমিত হয়ে দুঘর্টনাটি ঘটেছে? এ ক্ষেত্রে ডাক্তারদের কোনো চিকিৎসাজনিত অবহেলা ছিল কিনা, যা তাদের আগেই পরীক্ষা করা উচিত ছিল, কিন্তু তারা তা করেনি।’

জবাবে ব্যারিস্টার আমির-উল-ইসলাম বলেন, ‘অপারেশনকৃত চোখ নষ্ট হয়েছে কিন্তু অন্য চোখটি নষ্ট হয়নি।’ এ বাক্যটির প্রতি আদালত আপত্তি তুলে বলেন, ‘এটি আনওয়ান্টেড (অপ্রত্যাশিত) এবং বিশেষজ্ঞ কমিটির রিপোটর্ প্রমাণ করে আমাদের দেশে ডাক্তারদের নৈতিকতার মান কোথায়!’

শুনানির একপযাের্য় ব্যারিস্টার আমির-উল-ইসলাম ওষুধ সরবরাহকারীদের এ মামলায় পক্ষভুক্ত করার আবেদন করেন। এ সময় আদালত বলেন, ‘তাহলে আপনি তাদের পক্ষভুক্ত করুন।’ এরপর আদালত মামলাটির শুনানি আজ দুপুর পযর্ন্ত মুলতবি রাখার আদেশ দেন।

প্রসঙ্গত, এর আগে গত ২৯ মাচর্ একটি জাতীয় দৈনিকে ‘চক্ষু শিবিরে গিয়ে চোখ হারালেন ২০ জন!’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘চুয়াডাঙ্গার ইম্প্যাক্ট মাসুদুল হক মেমোরিয়াল কমুনিটি হেল্থ সেন্টারে তিন দিনের চক্ষু শিবিরের দ্বিতীয় দিন ৫ মাচর্ ২৪ জন নারী-পুরুষের চোখের ছানি অপারেশন করা হয়। অপারেশনের দায়িত্বে ছিলেন চিকিৎসক মোহাম্মদ শাহীন। এর মধ্যে চারজন রোগী নিজেদের উদ্যোগে উন্নত চিকিৎসার জন্য দ্রæত স্বজনদের নিয়ে ঢাকায় আসেন। পরে ইম্প্যাক্টের পক্ষ থেকে ১২ মাচর্ একসঙ্গে ১৬ জন রোগীকে ঢাকায় নেয়া হয়। ততদিনে অনেক দেরি হয়ে যায়। ৫ মাচের্র ওই অপারেশনের ফলে এদের চোখের এতো ভয়াবহ ক্ষতি হয়েছে যে, ১৯ জনের একটি করে চোখ তুলে ফেলতে হয়। আর বাকি একজন অন্য জায়গায় চিকিৎসা নিতে থাকেন।’

পরে আইনজীবী অমিত দাসগুপ্ত প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনটি সংযুক্ত করে হাইকোটের্র সংশ্লিষ্ট শাখায় গত ১ এপ্রিল রিট দায়ের করেন। রিটের শুনানি শেষে চুয়াডাঙ্গা শহরের ইম্প্যাক্ট মাসুদুল হক মেমোরিয়াল কমিউনিটি হেলথ সেন্টারে চক্ষু শিবিরে চিকিৎসা নিতে এসে চোখ হারানো ২০ জনের প্রত্যেককে ১ কোটি টাকা করে কেন ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোটর্।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<4035 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1