শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ড. কামালের গাড়িবহরে হামলা

এ ঘটনার জন্য আওয়ামী লীগকে দুষলেন কামাল
যাযাদি রিপোটর্
  ১৫ ডিসেম্বর ২০১৮, ০০:০০
আপডেট  : ১৫ ডিসেম্বর ২০১৮, ০০:৪৪
শুক্রবার সকালে মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বের হওয়ার পর জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহŸায়ক ও গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেনের গাড়িবহরে এভাবে হামলা করে দুবৃর্ত্তরা Ñযাযাদি

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহŸায়ক ও গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেনের গাড়িবহরে হামলা হয়েছে। শুক্রবার মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বের হওয়ার সময় এ ঘটনা ঘটে। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কামাল হোসেনের নেতৃত্বে ঐক্যফ্রন্টের নেতারা শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদনে যান। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন জাসদের আ স ম আবদুর রব, রেজা কিবরিয়া, বিএনপির নেতৃবৃন্দের মধ্যে ছিলেন আবদুস সালাম, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী প্রমুখ। গণফোরামের মিডিয়া উইং কমর্কতার্ লতিফুল বারী হামিম বলেন, ড. কামাল হোসেনসহ ফোরাম নেতারা শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বের হওয়ার সময় এ হামলা হয়। আওয়ামী লীগের প্রাথীর্ আসলামুল হকের সমথের্করা তাদের গাড়িবহরে এই হামলা চালান বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। কামাল হোসেনের গাড়ি আগে বের হয়। তার পেছনের গাড়িতেই ছিলেন আ স ম আবদুর রব। হামলার ঘটনায় আ স ম আবদুর রবের গাড়ির চালক আহত হয়েছেন। লতিফুল বারী অভিযোগ করেন, গণফোরামের নেতা জগলুল হায়দারের গাড়িসহ আরও কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। প্রত্যদশীর্রা জানান, বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধের প্রধান ফটকে ড. কামাল হোসেন গাড়ি রাখা ছিল। তিনি যখন গাড়িতে বসতে যাচ্ছেন, তখন অতকিের্ত ওই গাড়িতে গøাস ভাঙচুর করা হয়। আশপাশে যারা তার সঙ্গে হেঁটে আসছিলেন, তাদের মারধর করা হয়। এ ঘটনায় কয়েকজন টিভি সাংবাদিক আহত হন। পরে এই হামলার ঘটনায় স্থানীয় সংসদ সদস্য ও সামনের নিবার্চনে আওয়ামী লীগের প্রাথীের্ক দায়ী করেন ফ্রন্টের শীষর্ নেতা ড. কামাল হোসেন। শুক্রবার বিকালে রাজধানীর পুরানা পল্টনে ঐক্যফ্রন্টের কাযার্লয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এ দোষারোপ করেন তিনি। ড. কামাল বলেন, ‘শহীদদের শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে ফেরার পথে আসলামুল হক আসলামের ‘গুÐা বাহিনী’ ছাত্রলীগের ইব্রাহীম, জাকির ও কাউন্সিলর টিপুর নেতৃত্বে আমাদের গাড়িবহরে হামলা চালায়। হামলায় আমার গাড়িসহ ৭-৮টি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। এতে ঢাকা-১৪ আসনের ঐক্যফ্রন্ট মনোনীত এমপি প্রাথীর্ সাজু ও জেএসডি সভাপতি আ স ম আব্দুর রবের গাড়িচালকসহ ২৫-৩০ জন আহত হয়েছেন।’ হামলার সময় পুলিশের ‘নীরব ভ‚মিকার’ সমালোচনা করে ড. কামাল বলেন, ‘শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে আমাদের ওপর হামলা করা হয়েছে। এটা শহীদদের অবমাননা। এটা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। বুদ্ধিজীবী দিবসে জাতীয় নেতাদের ওপর আক্রমণ শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আক্রমণের শামিল। এই দুবৃর্ত্তায়নকারী আওয়ামী লীগের মুখে স্বাধীনতার কথা মানায় না।’ তিনি বলেন, ‘এ ধরনের ন্যক্কারজনক ঘটনা দেশপ্রেমিক কোনো মানুষের কাজ হতে পারে না। যে সব ছোকরা-টোকাই আমাদের ওপর হামলা করেছে, তারা দুই পয়সার ভাড়াটিয়া। তোমরা এ সব নোংরা কাজ করে কয় পয়সা পাও? দুই পয়সার কাজ করো! এটা বাদ দিয়ে আমার কাছে আসো, আমি তোমাদের চার পয়সা দেবো। এ ন্যক্কারজনক ঘটনায় আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।’ তিনি বলেন, ‘সেখানে পুলিশও আমাদের সঙ্গে ন্যক্কারজনক আচরণ করেছে। তাদের আচরণ বিজয়ের মাসে বঙ্গবন্ধুর কথাকে অমান্য করেছে। বিজয়ের মাসকে অমান্য করেছে। সংবিধানকেও অবমাননা করেছে। দেশে কোনো সংবিধান আছে? আমার মনে হয় না। তারা বঙ্গবন্ধুর স্বাক্ষরিত সংবিধানকে উপহাসের বস্তু বানিয়েছে। এটা একটি সভ্য দেশ। যারা দেশ শাসন করছে, স্বাধীনতার এতো বছর পরও এ ধরনের হামলা করে, লজ্জা পাওয়া উচিত।’ তিনি মহাপুলিশ পরিদশের্কর উদ্দেশে বলেন, ‘আইজিপিকে বলবো, আপনার সম্পকের্ আমার ভালো ধারণা আছে, আপনি বিষয়টির নিরপেক্ষ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবেন। তাদের বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করবো, আপনার পছন্দ যাকে হয়, সেই পুলিশ কমর্কতাের্ক দিয়ে তদন্ত করান। আমরা সাদরে গ্রহণ করবো।’ বেআইনি আদেশ মানবে না কেউ চিরদিন ক্ষমতায় থাকে না স্মরণ করিয়ে দিয়ে পুলিশ-প্রশাসনের উদ্দেশে ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘যে সব পুলিশ অন্যায়ভাবে প্রাথীর্ ও তার নেতাকমীের্ক গ্রেপ্তার করে চলেছে, তারা কেন এ সব করছে? জেনে রাখো, চিরদিন কেউ ক্ষমতায় থাকে না। আর কোনো সরকারও আইনের ঊধ্বের্ না। এই সরকার আর ১৬ দিন ক্ষমতায় আছে। সুতরাং বেআইনি আদেশ মানবে না। জেনে রাখো, একদিন জবাবদিহি করতে হবে।’ সংবাদ সম্মেলনে ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আসম আব্দুর রব, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, ভাইস-চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু, নাগরিক ঐক্যের আহŸায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, গণফোরামের কাযর্করী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসীন মন্টু ও প্রেসিডিয়াম সদস্য রেজা কিবরিয়া প্রমুখ।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে