মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

হেদায়েত হোসেন চৌধুরীর চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী আজ

যাযাদি রিপোটর্
  ১৪ ডিসেম্বর ২০১৮, ০০:০০
আপডেট  : ১৪ ডিসেম্বর ২০১৮, ১০:১৪
হেদায়েত হোসেন চৌধুরী

কণর্ফুলী গ্রপের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হেদায়েত হোসেন চৌধুরীর চতুথর্ মৃত্যুবাষির্কী আজ। ২০১৪ সালের এই দিনে অনন্য কীতির্মান এ শিল্পপতি আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব ও সহকমীর্সহ দেশ-বিদেশে অবস্থানরত লাখো অনুরাগী ও শুভানুধ্যায়ীদের কাঁদয়িে পরপারে পাড়ি জমান। তার মৃত্যুবাষির্কী উপলক্ষে আজ শুক্রবার বাদ আসর রাজধানীর পরীবাগের ‘সাদাত নূর’ বাসভবনে খতমে কোরআন, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। ধমীর্য় ভাবগাম্ভীযের্র মধ্য দিয়ে তার পরিবারবগর্ ও ঘনিষ্ঠজনরা আনুষ্ঠানিকভাবে হেদায়েত হোসেন চৌধুরীকে স্মরণ করবেন। প্রখ্যাত শিক্ষানুরাগী, ভাষাসৈনিক ও সমাজসেবক হেদায়েত হোসেন চৌধুরী ১৯৩১ সালের পহেলা জানুয়ারি ফেনী জেলার দাগনভূইয়া উপজেলার রামনগরের ঐতিহ্যবাহী চৌধুরী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা শাদাত হোসেন চৌধুরী ব্রিটিশ সরকারের জেলা প্রশাসক ছিলেন। মাতা নূর জাহান চৌধুরানী ছিলেন গৃহিণী। ৭ ভাই-বোনের মধ্যে হেদায়েত হোসেন চৌধুরী চতুথর্। বড় ভাই প্রবাদ প্রতীক সাংবাদিক, সম্পাদক ও কলামিষ্ট জহুর হোসেন চৌধুরী। তার দরবার-ই-জহুর কলাম সাংবাদিকতার ইতিহাসে এক অনন্য দলিল। বড় বোন ইয়াকুত ছিলেন চট্টগ্রাম কলেজের অধ্যক্ষ মেজাফফর আহমেদের স্ত্রী। দ্বিতীয় বোন চেমন আরা ইদ্রিস সাবেক সেনাপ্রধান মেজর জেনারেল (অব.) আবু সালেহ মোহাম্মদ নাসিম বীর বিক্রমের মা। আরেক ভাই কন্টিনেন্টাল গ্রæপের চেয়ারম্যান ইকবাল হোসেন চৌধুরী এবং সবর্কনিষ্ঠ ভাই মাহমুদ হোসেন চৌধুরী টিএন্ডটি বোডের্র্র সাবেক চেয়ারম্যান। আর ছোট বোন বেবী। মাহমুদ হোসেন চৌধুরী ছাড়া আর কোনো ভাইবোন জীবিত নেই। হেদায়েত হোসেন চৌধুরী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি এসএম হলের আবাসিক শিক্ষাথীর্ ছিলেন। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রæয়ারীর মিছিলে অংশ নিয়ে ভাষা আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। কমির্নষ্ঠ হেদায়েত হোসেন চৌধুরী কমর্জীবনেও অত্যন্ত সফল ছিলেন। তার প্রতিষ্ঠিত কণর্ফুলী গ্রæপে কণর্ফুলী ইন্ডাস্ট্রিজ ও কণর্ফুলী লিমিটেড ছাড়াও দেশের খ্যাতনামা শিপিং লাইনস হানজিন ও পিআইএলসহ প্রায় দেড় ডজন শিল্প ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। বিশিষ্ট এ শিল্পোদ্যোক্তা তৎকালীন পূবর্ পাকিস্তান চেম্বারের প্রতিষ্ঠাতা এবং চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমাসর্ অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। হেদায়েত হোসেন চৌধুরীর জ্যেষ্ঠ পুত্র সাঈদ হোসেন চৌধুরী এইচআরসি শিল্পপরিবার ও ওয়ান ব্যাংক লিমিটেডের চেয়ারম্যান এবং দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকার সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি। দ্বিতীয় পুত্র সাদেক হোসেন চৌধুরী মাল্টিড্রাইভ গ্রæপের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক। কনিষ্ঠ পুত্র সাবের হোসেন চৌধুরী ঢাকা-৯ আসনে আওয়ামী লীগের নিবাির্চত সংসদ সদস্য এবং ইন্টার পালাের্মন্টারি ইউনিয়ন (আইপিইউ’র) প্রেসিডেন্ট এবং দেশ টিভির চেয়ারম্যান ও কণর্ফুলী গ্রæপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। প্রসঙ্গত, সমাজসেবক হেদায়েত হোসেন চৌধুরী গত বছরের ১৪ ডিসেম্বর রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন। তার মৃত্যুতে রাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গনে শোকের কালো ছায়া নেমে আসে। মমর্স্পশীর্ আবেগঘন পরিবেশের মধ্যে রাজধানীর পরীবাগের ‘সাদাত নূর’ বাসভবনের বৃক্ষরাজির শীতল ছায়ায় মাটির ঘরে তাকে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়। এইচ আর ভবনে মিলাদ মাহফিল এদিকে হেদায়েত হোসেন চৌধুরীর মৃত্যুবাষির্কী উপলক্ষে বৃহম্পতিবার বাদ আসর কণর্ফুলী গ্রæপের কাকরাইলস্থ এইচআর ভবনে খতমে কোরআন, মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের মধ্য দিয়ে তার বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করা হয়। পবিত্র কুরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে মৃত্যুবাষির্কী কাযর্ক্রমের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। পযার্য়ক্রমে হেদায়েত হোসেন চৌধুরীর জীবন ও কমর্ সম্পকের্ গুণগ্রাহী ও পারিবারিক ব্যক্তিদের স্মৃতিচারণমূলক আলোচনা হয়। সবের্শষে মরহুমের রূহের মাগফিরাত ও বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। মোনাজাত পরিচালনা করেন গুলশান ভোলা মসজিদের খতিব মাওলানা হাফিজুর রহমান। তিনি মোনাজাতে হেদায়েত হোসেন চৌধুরী, তার পিতা মরহুম সাদাত হোসেন চৌধুরী, মাতা মরহুমা নূরজাহান বেগম চৌধুরী এবং স্ত্রী মরহুমা রাশিদা হোসেন চৌধুরী ও তার বাবা মরহুম আবদুল জব্বার চৌধুরী, মাতা মরহুমা ফাতেমা খাতুন চৌধুরী ছাড়াও তাদের ছেলে ও পুত্রবধূর পক্ষ থেকে মরহুম ও মরহুমার নিকট আত্মীয়স্বজন যারা কবরবাসী হয়েছেন এবং জীবিত আছেন তাদের সবার জন্য দোয়া ও মঙ্গল কামনা করেন। এ সময় হেদায়েত হোসেন চৌধুরীর কবরের আজাব মাফ করার জন্য দোয়া করা হয়। এছাড়া মরহুমের তিন সন্তানসহ তাদের পরিবারের সব সদস্যের সুন্দর জীবনযাত্রা পরিচালনার সুযোগদানের জন্য আল্লাহর দরবারে প্রাথর্না জানানো হয়। এ মিলাদ মাহফিলে কণর্ফুলী ও এইচআরসি গ্রæপের ঢাকাসহ বাইরের অসংখ্য কমর্কতার্-কমর্চারী এবং আওয়ামী লীগ, যুবলীগ এবং অঙ্গসংগঠনের নেতাকমীর্ অংশ নেন। মিলাদ ও দোয়া মাহফিল শেষে মরহুমের কনিষ্ঠ পুত্র ও জাতীয় সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী আগত অতিথিদের সঙ্গে কুশল বিনিময়ের পাশাপাশি তবারক বিতরণ করেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে