মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

মায়ের কোল থেকে ছিটকে পিকআপের চাকার নিচে শিশু

যাযাদি রিপোটর্
  ২৩ অক্টোবর ২০১৮, ০০:০০
আপডেট  : ২৩ অক্টোবর ২০১৮, ০০:৩১
চাচা আকরামের কোলে নাবিলা

সারাদেশে সোমবার পালিত হয়েছে নিরাপদ সড়ক দিবস। এর আগের রাতেই সড়কে ঝরল এক শিশুর প্রাণ। এক বছরের শিশু নাবিলাকে নিয়ে রিকশায় করে নিউমাকের্ট থেকে আদাবরে বাড়িতে ফিরছিলেন মা নাজমা বেগম। মোহাম্মদপুর থানার কাছে সিটি হাসপাতালের সামনে পৌঁছালে তাদের বহনকারী রিকশাটিকে পাশ কাটিয়ে যেতে গিয়ে ধাক্কা দেয় একটি পিকআপ। এতে মায়ের কোল থেকে ছিটকে রাস্তায় পড়ে যায় ছোট্ট শিশু নাবিলা। দ্রæতগতিতে পিকআপটি তাকে চাপা দিয়ে চলে যায়। আহত নাবিলাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে কতর্ব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। মমাির্ন্তক এ ঘটনাটি ঘটেছে রোববার রাত ১১টার দিকে। নাবিলার বাবার নাম ইমরান হোসেন। তিনি রাজধানীর মোহাম্মদপুরে ব্যবসা করেন এবং আদাবর এলাকায় পরিবার নিয়ে থাকেন। তাদের গ্রামের বাড়ি চঁাদপুরের রুস্তমপুর উপজেলায় ফরিদগঞ্জ গ্রামে। শিশু নাবিলার মামা রাসেল জানান, তার বোন নাজমা বেগম এক বছরের নাবিলাকে কোলে নিয়ে নিউমাকের্ট থেকে রিকশায় করে বাড়ি ফিরছিলেন। রাত ১০টায় তারা মোহাম্মদপুর থানার কাছে সিটি হাসপাতালের সামনে পৌঁছালে একটি দ্রæতগামী পিকআপ তাদের রিকশাকে ধাক্কা দেয়। এতে তার বোনের কোল থেকে নাবিলা রাস্তায় ছিটকে পড়ে এবং পিকআপটি তার ওপর দিয়ে চলে যায়। দ্রæত তাকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে গেলে কতর্ব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। কান্না জড়িত কণ্ঠে রাসেল আরও বলেন, ‘এই নিষ্পাপ শিশুর কী দোষ। পৃথিবীর আলো দেখতে পারল না ঠিকমতো, তার আগেই পৃথিবী ছেড়ে চলে গেল। আমার বোন সন্তানের মৃত্যুর পর স্তব্ধ হয়ে গেছেন। কারও সঙ্গে কথা বলছেন না। নাবিলার আরও দুই ভাই ও এক বোন আছে। লাশ গ্রামে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সেখানেই নাবিলাকে দাফন করা হবে। এ ঘটনায় রাসেল বাদী হয়ে মোহাম্মদপুর থানায় মামলা করেছেন।’ ঢাকা মেডিকেল কলেজ পুলিশ ফঁাড়ির উপপরিদশর্ক (এসআই) বাচ্চু মিয়া এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কমর্কতার্ (ওসি) জামাল উদ্দিন মীর বলেন, ঘটনার পর পিকআপের চালক ও পিকআপটি আটক করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। দুই বাসের মাঝে চাপা পড়ে নিহত ২ এদিকে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে রাস্তা পার হওয়ার সময় দুই বাসের মাঝে চাপা পড়ে দুজন নিহত হয়েছেন। সোমবার বেলা একটার দিকে এ দুঘর্টনা ঘটে। এ ঘটনায় দুটি বাস জব্দ করেছে পুলিশ। একজন চালককে আটক করা হয়েছে। নিহত দুই ব্যক্তি হলেন, মো. সেলিম (২২) ও জুয়েল (৩০)। সেলিমের বাবার নাম সাইদুল হক। তার গ্রামের বাড়ি মাদারীপুর জেলার শিবচর থানার আলেপুরে। রাজধানীর ডেমরায় পরিবার নিয়ে থাকতেন তিনি। সেলিমের মা মনোয়ারা বেগম জানান, যাত্রাবাড়ীতে একটি খেলনার কারখানায় কাজ করতেন সেলিম। আরেক নিহত ব্যক্তি জুয়েলের জুয়েল বাবা মতলব হাওলাদার। জুয়েলের চাচাতো ভাই মহিউদ্দিন তুষার বলেন জুয়েলের বাড়ি বরিশালে। তিনি বতর্মানে দয়াগঞ্জ বটতলা মোড় হিজড়ার বাড়ির ২য় তলায় থাকতেন। তিনি দুই ছেলে এক মেয়ের জনক। তিনি তুরাগ পরিবহনের গাড়ি চালক, (তুরাগ পরিবহন)। সেলিমের মা ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বেলা ১টার দিকে ডেমরা থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে যাত্রাবাড়ী আসেন সেলিম। তার সঙ্গে একই অটোরিকশায় ভাগাভাগি করে আসেন জুয়েল। সিএনজি থেকে নেমে রাস্তা পার হওয়ার সময় দুই বাসের মাঝে চাপা পড়ে গুরুতর আহত হন তারা। স্থানীয় লোকজন তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কতর্ব্যরত চিকিৎসক সেলিমকে মৃত ঘোষণা করেন। ওই সময় জুয়েলকে গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে ভতির্ করা হয়। পরে বিকেল পঁাচটার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফঁাড়ির উপপরিদশর্ক (এসআই) বাচ্চু মিয়া বলেন, লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মগের্ রাখা হয়েছে। যাত্রাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কমর্কতার্ (ওসি) কাজী ওয়াজেদ আলী, দুটি বাসই ট্রান্স সিলভা কোম্পানির ছিল। ওই দুটি বাস জব্দ করা হয়েছে। একজন চালককে আটক করা হয়েছে। ওই চালকের কাছে বাস চালানোর লাইসেন্স ছিল না।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে