বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
চিন্তিত নয় বিএনপি

২০ দল থেকে বেরিয়ে গেল ন্যাপ, এনডিপি

এ ব্যাপারে বিএনপি নেতা নজরুল ইসলাম খান বলেন, এ নিয়ে তারা চিন্তিত নয়। আর যেসব কারণ দেখিয়ে দুই দল জোট ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছে তাও সঠিক নয়।
যাযাদি রিপোটর্
  ১৭ অক্টোবর ২০১৮, ০০:০০
বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট ছাড়ার ঘোষণা দিয়ে মঙ্গলবার যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ন্যাপের চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি। পাশে এনডিপির চেয়ারম্যান খোন্দকার গোলাম মোত্তর্জা Ñযাযাদি

নিবার্চনকে সামনে রেখে বিএনপি যখন সমমনা দল ও ব্যক্তিদের নিয়ে জোটের আকার বাড়াতে ব্যস্ত, তখন ভেঙে গেল দলটির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট। জোট থেকে বেরিয়ে যাওয়ার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ ন্যাপ ও এনডিপি।

মঙ্গলবার বিকালে গুলশানের ইমানুয়েল’স ব্যাংকুয়েট হলে বিকাল ৩টায় সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তারা ২০ দলীয় জোট থেকে বেরিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয়। এ সময় দল দুটির পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ন্যাপ চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি।

সংবাদ সম্মেলনে তারা জানান, বিএনপির নেতৃত্বে চার দলীয় জোটকে সম্প্রসারণ করে ১৮ দলীয় জোটে রূপান্তর হওয়ার পর থেকে বাংলাদেশে ন্যাশনাল আওয়ামী পাটির্ (ন্যাপ) ও ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পাটির্ (এনডিপি) এ জোটের অংশীদার।

তারা জানায়, বিএনপি জোটের শরিক হিসেবে তারা সাধ্যমতো অবদান রাখার চেষ্টা করেছেন। নিজেদের মতবিরোধী ও মতাপাথর্ক্য থাকলেও জোটের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে সবসময় আন্তরিক ছিলেন।

গাণি বলেন, ২০১৪ সালের নিবার্চনে নানা ধরনের লোভনীয় প্রস্তাব থাকার পরেও জোটের নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলো কেউ

তৎকালীন ১৮ দলীয় জোট ছাড়েনি। কিন্তু এই ত্যাগকে বিএনপি প্রধান রাজনৈতিক দল হিসেবে কোনো মূল্যায়ন করেছে বলে তাদের কাছে কখনো প্রতীয়মান হয়নি। বরং তাদের ভাবখানা ছিল এমন যে তারা যাবে কোথায়?’

তিনি বলেন, সোমবার ২০ দলীয় জোটের বৈঠকেও বিএনপির উপস্থিত নেতৃত্ব বলেছেন, তাদের ওপর এই ঝড় কেবল ২০ দলীয় জোটের কারণেই হয়েছে। এই জোটে না থাকলে তারা জাতীয় কিংবা আন্তজাির্তক চাপের মুখে থাকত না।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, তারা স্পষ্টভাবে বলতে চান, তাদের কারণে কেউ চাপে থাকুক, তা তারা প্রত্যাশা করেন না। বিএনপিকে মনে রাখতে হবে যে এই দলগুলো তাদের পাশে ছিল বলেই অনেক ব্যথর্তার ভাগ তারা শেয়ার করতে পেরেছে। না থাকলে তাও পারত না।

জেবেল গাণি বলেন, ন্যাপ ও এনডিপি সাংবিধানিক ও নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতির পক্ষে। শুধু ক্ষমতার পালা বদলের নামে কোনো অশুভ শক্তির ক্ষমতা গ্রহণ করে ফের দেশকে রাজনীতিশূন্য করার কোনো অপচেষ্টায় অংশগ্রহণ করুক, একটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল হিসেবে তারা তা প্রত্যাশা করেন না।

তিনি বলেন, বিএনপি সবসময় তার শরিকদের অন্ধকারে রাখার অপচেষ্টা করে গেছে। জাতীয় নিবার্চন কাছাকাছি হলেও সে বিষয়ে বিএনপি তার অবস্থা শরিকদের কাছে পরিষ্কারভাবে ব্যাখ্যা করছে না।

গাণি বলেন, এমনকি বিভিন্ন বৈঠকে জোট শরিকদের মনোনয়নের বিষয়টি সামনে আনতে চাইলেও বিএনপি কৌশলে তা এড়িয়ে যায়। আর ১/১১ কুশীলব, মাইনাস টু ফমূর্লা বাস্তবায়নকারীরা যখন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নামে ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে, তখন তারা মনে করেন, বিএনপি তার সব নৈতিক অবস্থা থেকে বিচ্যুত হয়েছে।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ২০ দলীয় জোটের শরিক হিসেবে বাংলাদেশ ন্যাপ আওয়ামী পাটির্-বাংলাদেশ ন্যাপ ও ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পাটির্-এনডিপি সাংবিধানিক, নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতির স্বাথের্ এই মুহূতর্ থেকে জোটের সঙ্গে সব সম্পকর্ ছিন্ন করেছে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, এনডিপির চেয়ারম্যান খোন্দকার গোলাম মোত্তর্জা, মহাসচিব মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা ও বাংলাদেশ ন্যাপের মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া।

চিন্তিত নয় বিএনপি

অবশ্য জোটের দুই শরিক ন্যাপ ও এনডিপির জোট ছাড়ার ঘোষণায় চিন্তিত নয় বলে যায়যায়দিনকে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও জোটের সমন্বয়ক নজরুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, তারা যেসব কারণ দেখিয়ে জোট ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছে তা সঠিক নয়। সবসময় ২০ দলীয় জোটের সঙ্গে আলোচনা করেই সব সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এখানে কাউকে অবমূল্যায়ন করা হয়নি। আসন ভাগাভাগি নিয়ে তারা এখনও কোনো আলোচনাই করেননি। তাদের ঐক্য বিনষ্ট করতে নানা ধরনের চক্রান্ত চলছে বলেও অভিযোগ করেন নজরুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, আশা করেন ন্যাপ ও এনডিপি তাদের সিদ্ধান্ত পুনবিের্বচনা করবে।

উল্লেখ্য জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠনের পর সোমবার রাতে প্রথমবারের মতো গুলশানে বিএনপি চেয়ারপাসের্নর রাজনৈতিক কাযার্লয়ে ২০ দলীয় জোটের শীষর্ নেতাদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে ২০ দলীয় জোটের পক্ষ থেকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে স্বাগত জানানো হয়। একইসঙ্গে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ৭ দফা দাবি ও ১১ দফা লক্ষ্যর সঙ্গেও একমত পোষণ করেন ২০ দলীয় জোটের শীষর্ নেতারা। ওই বৈঠকে বাংলাদেশ ন্যাপ ও এনডিপির প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন।

জানা গেছে, ২০ দলীয় জোটের বৈঠকে ন্যাপের মহাসচিব গোলাম মোস্তফা ভুইয়া সাবেক তত্ত¦াবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেনের ওয়ান ইলেভেনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, ওয়ান ইলেভেনের সময় ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেন বিতকির্ত ভূমিকা পালন করেছিলেন। এখন কিভাবে তিনি জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠনের সঙ্গে যুক্ত থাকেন। এই নিয়ে বিএনপি মহাসচিব মিজার্ ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে তার বাদানুবাদ হয়। মিজার্ ফখরুল ন্যাপের মহাসচিবকে তার বক্তব্য শেষ করতে দেননি। তাকে থামিয়ে দিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এখন এসব প্রশ্ন তোলার, দোষত্রæটি খেঁাজার সময় নয়।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<17956 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1