মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১
সরকারকে আল্টিমেটাম

বৃহত্তর ঐক্যের যাত্রা শুরু

৩০ অক্টোবরের মধ্যে নিবার্চনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠন সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ নিবার্চনের পরিবেশ সৃষ্টি ও তফসিলের আগে সংসদ ভেঙে দিতে হবে কারারুদ্ধ সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার আইনগত ও ন্যায়সঙ্গত অধিকার নিশ্চিত করতে হবে দাবি না মানলে ১ অক্টোবর থেকে সারাদেশে সভা-সমাবেশ শুরু
যাযাদি রিপোটর্
  ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০০:০০
শনিবার রাজধানীর মহানগর নাট্যমঞ্চে জাতীয় ঐক্যপ্রক্রিয়ার মঞ্চের প্রথম সারিতে (ডান থেকে) ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আ স ম আবদুর রব, মিজার্ ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ড. কামাল হোসেন, অধ্যাপক বদরুদ্দৌজা চৌধুরী, ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেন ও ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ Ñযাযাদি

বিএনপি ও ২০ দলীয় জোটের নেতাদের একমঞ্চে উঠিয়ে ঘোষিত পঁাচ দফা দাবি আদায়ে আগামী ১ অক্টোবর থেকে সারাদেশে সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া। শনিবার মহানগর নাট্যমঞ্চে জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার নাগরিক সমাবেশ থেকে এ ঘোষণা দেন প্রকৌশলী শেখ মো. শহীদুল্লাহ।

সমাবেশের ঘোষণাপত্রে বলা হয়, সন্ত্রাস, গুম, খুন, বিচারবহিভূর্ত হত্যা; হয়রানিমূলক গায়েবি মামলা ও গণগ্রেপ্তার; শান্তিপূণর্ সমাবেশে হামলা এবং নিবির্চারে জেল-জুলুম-নিযার্তনের মাধ্যমে জনগণকে ভোটাধিকারসহ মৌলিক অধিকার, মানবাধিকার ও সাংবিধানিক অধিকারসমূহ থেকে বঞ্চিত করে রাখা হয়েছে।

এতে অভিযোগ করা হয়, এখন দেশে মত প্রকাশের স্বাধীনতা নেই, নিবিের্ঘœ সভা-সমাবেশ করার অধিকার নেই। বাংলাদেশে এ গণতন্ত্রহীনতা ও স্বেচ্ছাচারিতা কাযর্ত বঙ্গবন্ধুর ত্যাগ ও ৩০ লাখ শহীদের রক্তের সঙ্গে প্রতারণার শামিল।

সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে সমাবেশে বলা হয়, আগামী ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে নিবার্চনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠন এবং নিরপেক্ষ নিবার্চন কমিশন পুনগর্ঠন করে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নিবার্চনের পরিবেশ সৃষ্টি করার কাযর্কর উদ্যোগ গ্রহণ করবেন এবং তফসিলের আগে বতর্মান সংসদ ভেঙে দেবেন।

সমাবেশ থেকে দাবি করা হয়, ন্যায়বিচারের স্বাভাবিক প্রক্রিয়াকে অগ্রাহ্য, ব্যাহত ও অকাযর্কর করে অন্যায়ভাবে কারারুদ্ধ সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার আইনগত ও ন্যায়সঙ্গত অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। ‘কোটা সংস্কার’ এবং ‘নিরাপদ সড়ক’ আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী ছাত্রছাত্রীসহ সকল রাজনৈতিক দলের নেতাকমীের্দর বিরুদ্ধে আনীত মিথ্যা মামলাসমূহ প্রত্যাহার করতে হবে।

গ্রেপ্তারকৃতদের মুক্তির দাবি জানিয়ে সমাবেশ থেকে বলা হয়, এখন থেকে নিবার্চন শেষ না হওয়া পযর্ন্ত কোনো রাজনৈতিক দলের নেতাকমীের্দর গ্রেপ্তার করা যাবে না।

জনগণকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে ঘোষণাপত্রে বলা হয়, জনগণ ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল বলেই ’৭১ সালে দেশ স্বাধীন হয়েছে, ’৯০ সালে স্বৈরাচারের পতন হয়েছে। আজও জনগণের সাবির্ক মুক্তির লক্ষ্যে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে এবং ‘বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য’ গড়ে তুলতে হবে।

এর আগে বিকাল ৩টায় মহানগর নাট্যমঞ্চে জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার এই নাগরিক সমাবেশ শুরু হয়। জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেনের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন যুক্তফ্রন্টের চেয়ারম্যান সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক ডা. একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী।

জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার সদস্য সচিব আ ব ম মোস্তফা আমিনের পরিচালনায় এতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব, বিএনপি মহাসচিব মিজার্ ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ ও ড. আবদুল মঈন খান, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, বিশিষ্ট নাগরিক ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেন প্রমুখ।

এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, গণফোরামের কাযর্করী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী, মুক্তিযোদ্ধা মোস্তফা মহসিন মন্টু, আওয়ামী লীগের সাবেক সংগঠনিক সম্পাদক সুলতান মোহাম্মদ মনসুর, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের আমির আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয় জোনায়েদ সাকি, সুপ্রিম কোটর্ আইনজীবী সমিতির সভাপতি জয়নুল আবেদিন, বিজেপি চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পাথর্, জাতীয় পাটির (জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, লেবার পাটির্র মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, জাতীয় পাটির্র (জাফর) আহসান হাবীব লিংকন প্রমুখ।

অধিকার পুনরুদ্ধারে ঐক্যবদ্ধ

হোন: ড. কামাল

সমাবেশে অধিকার পুনরুদ্ধার করতে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন।

তিনি বলেন, দেশের স্বাধীনতায় বলা হয়েছে জনগণ সব ক্ষমতার মালিক। কিন্তু আজ দেশের মানুষ ভোটাধিকার, মানবাধিকার, সাংবিধানিক অধিকার থেকে বঞ্চিত। এসব পুনরুদ্ধার করতে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

ড. কামাল হোসেন বলেন, দেশের জনগণের চলাফেরার স্বাধীনতা নেই। তাই তারা দিশেহারা। দেশের জনগণ একটি নিরাপদ ও স্থিতিশীল সমাজ নিশ্চিত করতে চায়। কাযর্কর গণতন্ত্র ও আইনের নিরপেক্ষ প্রয়োগের মাধ্যমে সুশাসন দেখতে চায়।

তিনি বলেন, ‘দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতেই আমাদের এই ঐক্য প্রক্রিয়া। দেশে ভোটাধিকার ও গণতান্ত্রিক পরিবেশ নেই। তাই একটি গ্রহণযোগ্য নিবার্চনের দাবিতে ঐক্য প্রক্রিয়ার ডাক দেয়া হয়েছে। আমি আশা করব- আজকে যারা এই নাগরিক সমাজে এসেছেন তারা জনগণের অধিকার নিয়ে কথা বলবেন এবং কাজ করবেন।’

ড. কামাল বলেন, মানুষ পরিশ্রম করে উৎপাদন বাড়ায়, কিন্তু ন্যায্য দাম পায় না। এদিকে দেশের হাজার কোটি টাকা পাচার হয়ে যাচ্ছে।

রাষ্ট্রের দায়িত্বে থাকতে হবে

বুদ্ধিমানদের: বি চৌধুরী

বিকল্পধারার বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেন, ‘নিবোর্ধ ব্যক্তিরা কেন দেশের গুরুত্বপূণর্ দায়িত্বে থাকবে? দায়িত্বে থাকতে হবে মেধাবীদের, বুদ্ধিমানদের। রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব (প্রশাসনে) মেধাবীদেরই গুরুত্ব দিতে হবে।’

সাবেক এ রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘আজকের মেধাবী তরুণ কালকের ভবিষ্যৎ। তিনি কোটা আন্দোলন নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, তাদের ওপর ছুরি দিয়ে আঘাত করবেন, চাপাতি দিয়ে আঘাত করবেন। গুন্ডা লেলিয়ে দেবেন। আপনি করেন নাই, আপনার লোকজন করেছে। এটা লজ্জার বিষয়।’

বি. চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ প্রতিবাদী জাতি, বাংলাদেশ স্বাধীনতা যুদ্ধ করেছে, বাংলাদেশ পাকিস্তানি স্বৈরাচার বরদাশত করে নাই, প্রতিবাদ করেছে। এখনো করবে।

এ সময় তিনি দুনীির্ত ও ঘুষ নিয়ে মন্তব্য করে বলেন, স্পিড মানি বলে সেটা বৈধ করা হয়েছে। সরকারের প্রতিটা মন্ত্রণালয়ে চ্যানেল করেছে একটা মন্ত্রণালয়ও ঘুষ ছাড়া চলে না। এর আগে শনিবার বিকাল পৌনে ৫টার দিকে তিনি গুলিস্তানে ঢাকা মহানগর নাট্যমঞ্চে সমাবেশে যোগ দেন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন ছেলে মাহী বি চৌধুরী ও মেজর (অব.) মান্নান।

আসুন আন্দোলনে

নামি: ফখরুল

গণতন্ত্রকামী সব দলকে ‘ন্যূনতম দাবি’ আদায়ে আন্দোলনে নামার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মিজার্ ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রধান দাবি ‘এক’। আসুন রাজপথে নেমে ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করি।’

মিজার্ ফখরুল বলেন, মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত (বিএনপি প্রধান) খালেদা জিয়া কারাগার থেকে খবর পাঠিয়েছেন, যে কোনো মূল্যে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

তিনি বলেন, গত ১৮ দিনে বিএনপি নেতাকমীের্দর নামে ৩ হাজার ৭৭৬টি মামলা দেয়া হয়েছে। মামলার আসামি করা হয়েছে ৬৯ হাজার ব্যক্তিকে। প্রতিদিন রাতে বাড়িতে বাড়িতে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ। এই সরকারকে সরিয়ে দিতে না পারলে দেশের স্বাধীনতা থাকবে না।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই ঐক্যের প্রধান দাবি সরকারের পতন, নিবার্চনের আগে সংসদ ভেঙে দিয়ে নতুন নিবার্চন গঠন করতে হবে। ইভিএম দিয়ে নিবার্চন করা যাবে না।

ঐক্যে চলে আসুন

শেখ হাসিনাকে রব

জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেন, ‘আপনি সংসদ ভেঙে দিন, নিরপেক্ষ সরকার গঠন করে আমাদের ঐক্যে চলে আসুন। আপনি জিতলে আমরা মেনে নেব।’

আ স ম আবদুর রব বলেন, ‘আমরা মাঠে নামব দেশ থেকে স্বৈরাচার হঠাতে। এর জন্য জাতীয় ঐক্যের বিকল্প নেই। রাজনৈতিক নেতাদের কারাগারে বন্দি করে রাখা হচ্ছে। আমরা রাজপথে নামলে কাউতে বন্দি রাখতে পারবেন না। নিবার্চন কমিশন বাতিল করতে হবে। উই ওয়ান্ট জাস্টিস। জাতীয় ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই।’

দেশের মানচিত্র লুট হয়ে যাওয়ার শঙ্কার কথা জানিয়েছেন তিনি বলেন, ‘দেশ আজ গুম, খুন, অপহরণ, বেওয়ারিশ লাশে পরিণত হয়েছে। দেশে উন্নয়ন হয়েছে, আবার লুটও হয়েছে। ব্যাংকের টাকা লুট হচ্ছে। কবে যে দেশের মানচিত্র লুট হয়ে যায়, সেই আতঙ্কে রয়েছি। সরকার দেশ রক্ষায় নয়, অন্য কাজে ব্যস্ত।’

খালেদা জিয়াসহ বন্দিদের

মুক্তি চাইলেন মান্না

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ দেশের সকল বিরোধী রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি দাবি করেছেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক, যুক্তফ্রন্ট নেতা মাহমুদুর রহমান মান্না।

তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়াসহ সকল রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি দিতে হবে। সবার মুক্তি দাবি করছি। এ মুক্তি দিতে হবে। যদি কেউ মনে করেন জোর করে লাঠি দিয়ে, পুলিশ দিয়ে বন্ধ করবেন, তাহলে এত জোরে কথা বলব কেউ টিকবে না।’

এ সময় মান্না সরকারের কঠোর সমালোচনা করে বলেন, ‘দেশ গভীর সংকটে। গতকাল সারাদেশে সাড়ে তিন হাজার নেতাকমীের্ক গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’

সবাই যাতে নিবার্চন করতে পারেন এমন নিবার্চন ব্যবস্থার আহ্বান জানান মান্না।

ভোটাধিকারের জন্য সংগ্রাম

লজ্জার : মইনুল

সাবেক তত্ত¡াবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন বলেছেন, মানুষকে অসহায় করে রাখা হয়েছে। একটি স্বাধীন দেশে ভোটাধিকারের জন্য সংগ্রাম করতে হচ্ছে, এটা আমাদের জন্য লজ্জার।

ব্যারিস্টার মইনুল বলেন, এ ঐক্য প্রক্রিয়া থেকে যেসব দাবি করা হচ্ছে, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নিবার্চনের জন্য এগুলোর কোনো বিকল্প নেই।

তিনি বলেন, একজন প্রধান বিচারপতিকে গৃহবন্দি করে রেখে পরে দেশত্যাগ ও পদত্যাগে বাধ্য করার দৃষ্টান্ত বিশ্বে আর পাওয়া যাবে না। এর মাধ্যমে বিচার ব্যবস্থাকে নতজানু করে রাখা হয়েছে।

তিনি বলেন, এ নিবার্চন কমিশন দিয়ে সুষ্ঠু নিবার্চন সম্ভব নয়। সংসদ বহাল আরেক সংসদের জন্য নিবার্চন গ্রহণযোগ্য নয় বলে তিনি মনে করেন।

মুক্তির একই পথ

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, মুক্তির একটাই পথ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নিবার্চন নিবার্চন। সংসদ ভেঙে দিয়ে নিবার্চন দিয়ে দেখুন কী হয়। এ ঐক্য প্রক্রিয়া কারো প্রতি বিদ্বেষমূলক নয় বলেও তিনি দাবি করেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<13809 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1