বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

নিবার্চনে ‘গুজবকে’ শক্ত প্রতিপক্ষ ভাবছে আ’লীগ

নিয়ন্ত্রণহীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার নিয়ে ইতোমধ্যে নড়েচড়ে বসছে সব মহল। সাংবাদিক, সাহিত্যিক, রাজনীতিবিদসহ সবার ভাবনায় এটি। সরকারি দলের কাছে তো রীতিমতো বড় বিরোধী দলে পরিণত হয়েছে ‘গুজব’।
যাযাদি রিপোটর্
  ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০০:০০

আগামী জাতীয় সংসদ নিবার্চনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের শক্ত প্রতিপক্ষ কারা- বিএনপি, জাতীয় পাটির্ নাকি বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য? এনিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে বিতকর্ থাকতে পারে। তবে আওয়ামী লীগ নেতারা ভিন্ন এক প্রতিপক্ষ নিয়ে চিন্তিত। সেটা হলো- সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিশেষ করে ফেসবুকে ছড়ানো ‘গুজব’।

ক্ষমতাসীন ও ক্ষমতার বাইরের সব রাজনৈতিক শক্তি গুজবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়ে একমত। কিন্তু কেউ সুস্পষ্ট সমাধান দিতে পারছে না। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এ বিষয়ে গ্রহণযোগ্য সমাধান বের করতে কাজ করছে।

ফেসবুকের ?উসকানিতে কক্সবাজারের রামু ও উখিয়ায় বৌদ্ধদের উপাসনালয়ে হামলার ঘটনা ঘটেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়াও হিন্দুদের ঘরবাড়িতে আক্রমণের ঘটনা ঘটেছে। এরপর সময়ের পরিক্রমায় এটি বিবতির্ত হয়ে গুজবে রূপ নেয়। কোটা সংস্কার আন্দোলনের ছাত্রীর রগকাটা হয়েছে এমন বিভ্রান্তি ছড়িয়ে আন্দোলনে জ্বালানি দেয়া হয়।

নিরাপদ সড়কের দাবিতে করা আন্দোলনেও গুজব ছড়ানো হয়। চারজন ছাত্রীকে ধষর্ণ ও একজনের চোখ উপড়ে ফেলার গুজব ছড়িয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কাযার্লয়ে হামলার অভিযোগ ওঠে।

এ বিষয়ে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য-প্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ব্যবহার করে ইতিবাচক ও নেতিবাচক অনেক কাজই হয়। তবে ফেসবুক বন্ধ করাই সমাধান নয়।

জানা গেছে, নিয়ন্ত্রণহীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার নিয়ে ইতোমধ্যে নড়েচড়ে বসছে সব মহল। সাংবাদিক, সাহিত্যিক, রাজনীতিবিদসহ সবার ভাবনায় এটি। সরকারি দলের কাছে তো রীতিমতো বড় বিরোধী দলে পরিণত হয়েছে ‘গুজব’।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আগামী নিবার্চনে রাজনৈতিক দলগুলো শক্ত প্রতিপক্ষ হবে ‘গুজব’। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যেকোনো সময় যে কারও বিরুদ্ধে ‘বিভ্রান্তি বা গুজব’ ছড়ানো হতে পারে। আর এতেই যে কারও সবর্নাশও হয়ে যেতে পারে।

এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর ছেলে ও তার তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, ‘ফেসবুকে অপপ্রচার যুক্তরাষ্ট্রসহ সারা দুনিয়াতেই হচ্ছে। এরপরও ফেসবুক নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়। তবে আমরা পদক্ষেপ নিচ্ছি, যেসব কনটেন্টের মাধ্যমে অপ্রপ্রচার চালানো হয় বা কালো কনটেন্টগুলো কীভাবে বøক করা যায়। এ বিষয়ে প্রশিক্ষণেরও পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।’

এ নিয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারে আমাদের আরও সচেতন হতে হবে। নিজের নাম ও পরিচয় প্রকাশ করে কেউ সোশ্যাল মিডিয়ায় মতপ্রকাশ করতেই পারে। সেটা বাস্তব হলে যেমন তার ক্রেডিট, ঠিক তেমনি অবাস্তব বা বিভ্রান্তিকর হলে তাকে আইনের আওতায় আসতে হবে। আর নাম-পরিচয় ছাড়া ভুয়া আইডি করে কেউ কোনো বিভ্রান্তি ছড়ালে ব্যবস্থা নিতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা বাক্স্বাধীনতায় বিশ্বাসী, কিন্তু বাক্স্বাধীনতার নামে অসত্য তথ্য প্রচার করে সমাজে কেউ হানাহানির পরিবেশ তৈরি করুক তা চাই না।’

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, ফেসবুক-ইউটিউবসহ নানা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারের বিষয়ে চিন্তাভাবনা করছেন। তারা তথ্যপ্রযুক্তি সেল গঠন করেছেন। নিবার্চন পরিচালনা কমিটির সঙ্গে তারা কাজ করছেন। নিবার্চন কমিশনে সুনিদির্ষ্ট প্রস্তাবনা দিতে ইতোমধ্যে কাজ শুরু করে দিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘নেট নিউট্রালিটি’ নিয়ে আমরা বেশ চিন্তিত। ‘নেট নিউট্রালিটি’ আইন নিয়ে আমাদের তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় ইতোমধ্যে চিন্তাভাবনা করছেন।

নওফেল বলেন, ‘দেশীয় ওয়েবসাইটগুলো বৈষম্যের শিকার। আবার আমাদের দেশীয় কোনো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নেই, যেটা ভারত-চীনে আছে। আমরা ‘নেট নিউট্রালিটি’র পাশাপাশি দেশীয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম গড়ে তোলা নিয়ে চিন্তাভাবনা করছি। আমরা নিয়ন্ত্রণের চেয়ে প্রতিযোগিতায় বিশ্বাসী।’

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<13607 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1