শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

নিম্ন আদালতের স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু আজ

যাযাদি ডেস্ক
  ০৫ আগস্ট ২০২০, ০০:০০

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব রোধে দীর্ঘদিন ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে বিচার কার্যক্রম চলার পর আজ বুধবার থেকে দেশের সব নিম্ন আদালতে শারীরিক উপস্থিতির মাধ্যমে বিচার কার্যক্রম শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন।

প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ বিচারপতিদের সঙ্গে আলোচনা করে নিয়মিত আদালতের বিচার কার্যক্রম শুরু করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেন। গত ৩০ জুলাই সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. আলী আকবর স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, নিম্ন আদালতে স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে সবাইকে হাইকোর্ট বিভাগের ৩০ জুলাইয়ের জারিকৃত বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী আদালত প্রাঙ্গণ ও এজলাস কক্ষে সুরক্ষামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ সংক্রান্ত নির্দেশনা মানতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে আদালতে উপস্থিত থাকতে হবে।

বিচারক-আইনজীবীদের পোশাক : দীর্ঘ চার মাস পর আজ বুধবার থেকে অধস্তন আদালতে শারীরিক উপস্থিতিতে বিচার কাজ শুরু হচ্ছে; কিন্তু করোনাকালে স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য মানতে হবে কিছু বিধি-নিষেধ। এ বিষয়ে সম্প্রতি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধকল্পে এবং বিচারক, আইনজীবী, আদালতের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও বিচারপ্রার্থীসহ সংশ্লিষ্ট সবার স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আদালত প্রাঙ্গণ ও এজলাস কক্ষে প্রয়োজনীয় প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা একান্ত আবশ্যক। কোভিড-১৯ এর বিস্তার রোধকল্পে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও দেশের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সুরক্ষামূলক নির্দেশনাগুলো সবার অবশ্য পালনীয়। আদালত প্রাঙ্গণে সবার সুরক্ষার জন্য ওই নির্দেশনার পাশাপাশি কয়েকটি নির্দেশনা সবাইকে অবশ্যই যথাযথভাবে প্রতিপালন করতে হবে। নির্দেশনাগুলো হলো :

আইনজীবী-বিচারকদের পোশাক : কোভিড-১৯ এর সংক্রমণ রোধকল্পে আদালত প্রাঙ্গণ এবং এজলাস কক্ষে প্রত্যেকে আবশ্যিকভাবে শারীরিক ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাসহ স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন করবেন। এজলাস, সাক্ষীর ডক এবং কাঠগড়ার প্রয়োজনীয় অংশে গস্নাস দিয়ে পৃথক পৃথক প্রতিরোধক প্রকোষ্ঠ প্রস্তুতের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সাময়িকভাবে বিচারক ও আইনজীবীরা সাদা শার্ট বা সাদা শাড়ি/সালোয়ার কামিজ ও সাদা নেক ব্যান্ড/কালো টাই পরিধান করবেন।

হাত ধোয়ার ব্যবস্থা : জেলা জজ/মহানগর দায়রা জজ/মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট/চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবনের প্রবেশ পথে এবং প্রকাশ্য স্থানে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা হিসেবে প্রয়োজনীয় সংখ্যক বেসিন স্থাপনসহ সাবান পানির ব্যবস্থা করবেন। আদালতে উপস্থিত প্রত্যেকে যথাসম্ভব নিজ নিজ নাক, মুখ এবং চোখ স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকবেন। আদালত প্রাঙ্গণের এজলাস কক্ষে প্রত্যেককে আবশ্যিকভাবে সার্বক্ষণিক মুখাবরণ এবং হাতমোজা পরতে হবে।

সর্বোচ্চ আদালতের বিষয়ে সিদ্ধান্ত কাল

এদিকে করোনাভাইরাস মহামারি পরিস্থিতির মধ্যে দেশের সর্বোচ্চ আদালত স্বাভাবিক বিচারকাজে ফিরবে কি না তা জানা যাবে আগামীকাল। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে ওইদিন ফুলকোর্ট সভা ডেকেছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন।

সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের বিচারপতিদের নিয়ে বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তিনি এ সভা করবেন। বৃহস্পতিবারের সভার বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন সোমবার একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, 'উপর্যুক্ত বিষয়ে নির্দেশিত হয়ে জানানো যাচ্ছে যে, ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের বিচারপতিদের অংশগ্রহণে আগামী ৬ জুলাই বিকাল ৩টায় ফুলকোর্ট সভা অনুষ্ঠিত হবে।'

সভার আলোচ্যসূচিতে প্রথমেই রাখা হয়েছে শারীরিক উপস্থিতিতে সুপ্রিম কোর্টের বিচারকাজ পরিচালনার বিষয়টি। এছাড়া সুপ্রিম কোর্টে বার্ষিক অবকাশকালীন ছুটির বিষয়েও আলোচনা হবে ওই সভায়। স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করে অবিলম্বে নিয়মিত আদালত চালু করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে প্রধান বিচারপতির কাছে গত ৮ জুলাই প্রস্তাব করে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি।

একই সঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের বার্ষিক ছুটিসহ সব আদালতের ডিসেম্বরের ছুটি বাতিলের দাবিও জানানো হয়। ২৬ জুলাই প্রধান বিচারপতির কাছে আবারও সে প্রস্তাব পাঠায় সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি। এর মধ্যে গত ৩০ জুলাই অধস্তন আদালতে শারীরিক উপস্থিতির মাধ্যমে স্বাভাবিক বিচারকাজ পরিচালনার সিদ্ধান্ত আসে প্রধান বিচারপতির কাছ থেকে। সেদিন সুপ্রিম কোর্ট এক বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানায়, বুধবার থেকে স্বাভাবিক বিচার প্রক্রিয়া চলবে দেশের অধস্তন আদালতে।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সরকার গত ২৬ মার্চ থেকে সারাদেশে ছুটি ঘোষণা করে। এরপর সর্বোচ্চ আদালতসহ দেশের সব আদালতে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট। সরকারের সাধারণ ছুটির সঙ্গে আদালতের সাধারণ ছুটিও কয়েক দফা বাড়ানো হয়। সর্বশেষ গত ১৬ মে দেওয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে সাধারণ ছুটির মেয়াদ ৩০ মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়।

এমন পরিস্থিতিতে ভার্চুয়াল আদালতে শুনানির জন্য গত ৯ মে সরকার 'আদালত কর্তৃক তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার' অধ্যাদেশ জারি করে। পরদিন সর্বোচ্চ আদালতের উভয় বিভাগের বিচারপতিদের নিয়ে ভিডিও কনফারেন্সে 'ফুলকোর্ট' সভা করেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন।

ফুলকোর্ট সভার পর ওইদিনই অধস্তন আদালতে ভার্চুয়াল জামিন শুনানির নির্দেশ আসে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন থেকে। তার জন্য তিনটি বিশেষ প্র্যাকটিস নির্দেশনাও জারি করে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন। তার মধ্যে আপিল বিভাগ পরিচালনার জন্য ১৩ দফা, হাইকোর্ট পরিচালনার জন্য ১৫ দফা ও অধস্তন আদালত পরিচালনার জন্য ২১ দফা নির্দেশনা দেওয়া হয়।

এই 'প্র্যাকটিস নির্দেশনা'র আলোকে ১১ মে থেকে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে দেশের অধস্তন ও ১২ মে থেকে উচ্চ আদালতে বিচারকাজ শুরু হয়। সরকার ৩০ মের পর সাধারণ ছুটি আর না বাড়ালেও ভার্চুয়াল উপস্থিতির মাধ্যমে চলছে দেশের অধস্তন আদালতের বিচারকাজ। সুপ্রিম কোর্টের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী চার মাসেরও বেশি সময় পর আজ বুধবার থেকে স্বাভাবিক বিচারকাজে ফিরছে অধস্তন আদালত। বিডি নিউজ, জাগো ও বাংলা নিউজ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<107757 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1