শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

এখনো ক্রেতাশূন্য পশুর হাট

রাজধানীর হাটগুলো কোরবানির পশুতে পূর্ণ হয়ে গেছে এবার ছোট ও মাঝারি সাইজের গরুর চাহিদা বেশি আজ থেকে বেচাকেনা জমবে বলে প্রত্যাশা বিক্রেতাদের
যাযাদি রিপোর্ট
  ২৯ জুলাই ২০২০, ০০:০০
রাজধানীর পশুর হাটগুলোতে এখনো আসছে গরু। ছবিটি মঙ্গলবার বনশ্রীর মেরাদিয়া হাট থেকে তোলা -যাযাদি

মুসলমানদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহার বাকি আর মাত্র দু'দিন। এরই মধ্যে কোরবানির পশু দিয়ে রাজধানীর অস্থায়ী হাটগুলো কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে গেছে। কিন্তু দেখা মিলছে না ক্রেতার। তিন/চারদিন অপেক্ষা করেও ক্রেতার দেখা পাচ্ছেন না কেউ কেউ। তবে বিক্রেতা ও ইজারাদারদের প্রত্যাশা আগামীকাল ও শুক্রবার পুরোদমে বেচাকেনা জমে উঠবে। কেননা প্রতি বছরই ঈদের আগের এই দুই দিনে সবচেয়ে বেশি পশু বেচাকেনা হয়ে থাকে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজধানীর কোরবানির পশুর হাটগুলোতে ছোট ও মাঝারি সাইজের গরুর চাহিদা বেশি। সে কারণে ছোট ও মাঝারি গরুর চাহিদা থাকায় বেশি দাম হাঁকাচ্ছেন বিক্রেতারা। ঢাকার ১৭টি পশুরহাটের মধ্যে প্রায় সবকটি হাটেই কোরবানির পশু দিয়ে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে গেছে। তবে বেচাকেনা জমে না উঠায় অনেকটাই হতাশ বিক্রেতারা।

মঙ্গলবার রাজধানীর আফতাব নগর পশুরহাটে গিয়ে দেখা গেছে, হাটের পুরো জায়গা গরু দিয়ে পূর্ণ হয়ে গেছে। বাঁশের খুঁটিতে সারি সারি গরু নিয়ে ক্রেতার অপেক্ষা করছেন খামারি ও ব্যবসায়ীরা। অপেক্ষাকৃত বড় ও বেশি দামের গরুর ক্রেতা নেই বললেই চলে। ছোট ও মাঝারি সাইজের গরুর কিছুটা চাহিদা থাকলেও বিক্রেতারা বেশি দাম হাঁকাচ্ছেন। কুষ্টিয়া থেকে ৭টি গরু নিয়ে এসেছেন আনোয়ার। তিনি জানান, তার সব গরুই বড় সাইজের। সবচেয়ে ছোট গরুটির দাম চাইবেন আড়াই লাখ টাকা। কিন্তু গত তিনদিনে একজন ক্রেতাও পাননি তিনি। একই কথা জানিয়েছেন পাবনার ব্যবসায়ী হারিস উদ্দিন। তার ৮টি গরুর মধ্যে এখনো একটি গরুরও দামদর করেনি কেউ।

তবে এই হাটে গতকাল থেকে কোরবানির পশু বেচাকেনা বেড়েছে বলে দাবি করেছেন ইজারাদার মোহাম্মদ রায়হান। যায়যায়দিনকে তিনি জানান, মঙ্গলবার বিকাল পর্যন্ত দুই শতাধিক গরু বিক্রি হয়েছে। আজ থেকে পুরোদমে বেচাকেনা জমে উঠবে বলে প্রত্যাশা তার।

আমুলিয়া মডেল টাউনের খালি জায়গায় অস্থায়ী পশুরহাটেও কেনাবেচা জমে উঠেনি। তবে আজ থেকে বেচাকেনা বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন হাটের ইজারাদার মো. আহসান উলস্নাহ। তিনি জানান, গত দুই/তিনদিন তেমন বেচাকেনা হয়নি। মঙ্গলবারও পশু বিক্রিতে তেমন সাড়া পাওয়া যায়নি।

এদিকে, রাজধানীর হাজারীবাগ কোরাবানির পশুর অস্থায়ী হাটের সীমানা ছাড়িয়ে বেড়িবাঁধের দু'পাশে বৌবাজার থেকে কোম্পানিঘাট পর্যন্ত পশু দিয়ে ভরে গেছে। এ হাটে এবার অন্তত ২৫ হাজার গরু উঠেছে বলে জানান হাট পরিচালনা কমিটির সদস্য ও বিক্রেতারা। হাজারীবাগ বাজার সড়ক, লেদার টেকনোলজি কলেজের আশপাশের সড়ক, হাজারীবাগ বাজার সড়কেও কোরবানি পশু রাখতে দেখা গেছে।

হাজারীবাগ বেড়িবাঁধ সংলগ্ন খালি জায়গায় ১০টি ষাঁড় বেঁধে রেখেছেন ফরিদপুর থেকে আসা ব্যবসায়ী সফিকুল ইসলাম। তিনি জানান, সবচেয়ে বড়টির দাম দেড় লাখ টাকা এবং ছোটটির দাম ৬৫ হাজার টাকা। আর অন্যগুলো ৭০ হাজার থেকে ১ লাখ ১০ হাজারের মধ্যে। সোমবার দিবাগত রাতে হাটে গরু উঠানো হলেও গতকাল পর্যন্ত একটি গরুও বিক্রি হয়নি।

পাবনার সাঁথিয়া থেকে সাতটি দেশি প্রজাতির গরু নিয়ে এসেছেন সিরাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, ক্রেতারা গরুর দাম খুবই কম বলছে। ঢাকায় আনাসহ সব মিলিয়ে আমার খরচ হয়েছে ৭২ হাজার টাকা, ক্রেতারা তার দাম বলছ ৬০ হাজার টাকা। এত কম দামে গরু বিক্রি করা কীভাবে সম্ভব? তাছাড়া অন্যবারের তুলনায় এবার ক্রেতার সংখ্যা অনেক কম বলে মনে হচ্ছে।

হাজারীবাগ কোম্পানী ঘাটের বাসিন্দা শাফায়াত হোসেন পেশায় একজন মাংস ব্যবসায়ী। গতকাল তিনি ঘুরতে এসেছিলেন হাজারীবাগ হাট। তিনি বলেন, এখন পশুর দাম স্বাভাবিক আছে। অন্য বছরের তুলনায় এবার রাজধানীতে কোরবানির পশু অনেক কম উঠেছে। সে কারণে বৃহস্পতিবার এবং শুক্রবার কোরবানির পশুর দাম বাড়তে পারে।

কামরাঙ্গীরচরের বাসিন্দা ইয়াকুব আলী বলেন, কামরাঙ্গীরচরে এবার কোনো হাট বসছে না, সেজন্য এবার হাজারীবাগ হাট থেকে কোরবানির পশু কিনব। দুই ঘণ্টা ধরে হাজারীবাগ হাট ঘুরে দেখলাম। হাটে অনেক পশু উঠেছে এবং এখন পর্যন্ত দাম সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<107448 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1