শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
বন্যা পরিস্থিতির অবনতি

বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে প্লাবিত নিম্নাঞ্চল

নীলফামারী, লালমনিরহাট, রংপুর কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, জামালপুর, নাটোর সিলেট, সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোনা জেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতির শঙ্কা
যাযাদি ডেস্ক
  ১৩ জুলাই ২০২০, ০০:০০
গাইবান্ধায় বন্যায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছে হাজার হাজার মানুষ। পানিতে ডুবে গেছে অসংখ্য বসতবাড়ি। ছবিটি ফুলছড়ি উপজেলার কঞ্চিপাড়া এলাকা থেকে তোলা -ফোকাস বাংলা

ভারীবর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে নদ-নদীর পানি বাড়তে শুরু করায় দেশের বিভিন্ন এলাকার নিম্নাঞ্চল নতুন করে পস্নাবিত হয়েছে। বন্যা সতর্কীকরণ ও পূর্বাভাস কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, আগামী ২৪ ঘণ্টায় নীলফামারী, লালমনিরহাট, রংপুর, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, জামালপুর, নাটোর, সিলেট, সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোনা জেলার বন্যাপস্থিতির অবনতির শঙ্কা রয়েছে। আমাদের প্রতিনিধিরা জানান, গেল সপ্তাহে বন্যাপরিস্থিতির উন্নতির মধ্যে দুর্গতদের অনেকে আশ্রয়কেন্দ্র থেকে বাড়িঘরে ফিরেছিল। হঠাৎ দুদিনের ঢলে ফের নিম্নাঞ্চল পস্নাবিত হতে শুরু করায় ফের দুর্ভোগে পড়েছেন তারা। পানিবন্দি এসব মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে নিতে প্রস্তুতি অব্যাহত রেখেছে স্থানীয় প্রশাসন। বন্যা সতর্কীকরণ ও পূর্বাভাস কেন্দ্র বলছে, নদ-নদীর ১০১টি পর্যবেক্ষণ পয়েন্টের মধ্যে ৭৬টি পয়েন্টেই পানি বেড়েছে। এর মধ্যে বিপদসীমার উপরে বয়ে যাচ্ছে ১৬টি পয়েন্টে। ২৩টি স্টেশনে পানি কমেছে; ২টি পয়েন্টে অপরিবর্তিত রয়েছে। কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুজ্জামান ভূঁইয়া রোববার বলেন, বহ্মপুত্র-যমুনা, গঙ্গা-পদ্মা ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের আপার মেঘনা অববাহিককার নদ-নদীর পানি বাড়ছে। আগামী ৭২ ঘণ্টা তা অব্যাহত থাকবে। উজানের ভারীবর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে নীলফামারীতে তিস্তার পানি শনিবার বিপদসীমার ৩৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। ডিমলা উপজেলার পূর্ব খড়িবাড়ি গ্রামে কোমড় সমান পানি। তিনি আরও জানান, 'তিস্তা, যমুনা, সুরমা, সারিগোয়াইন, যদুকাটা ও গুড় নদীর সাতটি পয়েন্টে পানি বিপদসীমার উপরে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় বিরাজমান বন্যাপরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কা রয়েছে।' গত ২৪ ঘণ্টায় ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সিকিম, আসাম, মেঘালয় ও ত্রিপুরা অঞ্চলে কোথাও কোথাও ভারীবর্ষণ হয়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের ন্যাশাল ডিজাস্টার রেসপন্স কো-অর্ডিনেশন সেন্টার-এনডিআরসিসি জানায়, রোববার পর্যন্ত এবারের বন্যায় ১৫ জেলার ৭২টি উপজেলার ৩৯৩টি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল উপদ্রম্নত হয়েছে। এসব এলাকায় ২ লাখ ৭৩ হাজার লোক পানিবন্দি এবং ১৩ লাখেরও বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পর্যাপ্ত ত্রাণ-সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে এবং মজুদও আছে। ৭৩৮টি বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। ৮ হাজার নারী পুরুষ এবং আড়াই হাজার শিশু আশ্রয় কেন্দ্রে রয়েছে। বন্যাকবলিত এলাকায় ৩৮৮টি মেডিকেল টিম গঠন এবং ১৭৩টি মেডিকেল টিম চালু রয়েছে। এদিকে আবহাওয়াবিদ আফতাব উদ্দিন জানান, মৌসুমি বায়ু সক্রিয় রয়েছে। এর প্রভাবে উপকূলীয় এলাকা ও সমুদ্রবন্দরের ওপর দিয়ে ঝড়োহাওয়ার শঙ্কা রয়েছে। এ জন্য চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। খোঁজখবর নিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী এদিকে বন্যা মোকাবিলায় সরকারের সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে বলে জানিয়ে পানি সম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম বলেছেন, এবার বর্ষা মৌসুমের শুরু অর্থাৎ গত এপ্রিল মাস হতে বন্যাপরিস্থিতি নজরদারি করা হচ্ছে, প্রধানমন্ত্রীর সার্বক্ষণিক খোঁজখবর নিচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় বন্যাপরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আগাম প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। কোথাও বন্যা হলেও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ যাতে কমিয়ে আনা যায়, সে বিষয়ে সকলকে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। গতকাল দুপুরে সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে গণমাধ্যম কর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা জানান একেএম এনামুল হক শামীম। এর আগে মন্ত্রণালয়, পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক এবং টাস্কফোর্স প্রধানের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। পানি সম্পদ উপমন্ত্রী বলেন, বন্যাপরিস্থিতি নিয়ে সার্বক্ষণিক মনিটরিং করছি। আজও ২২ জেলার জেলা প্রশাসক ও নির্বাহী প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা বলেছি, প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আমাদের মন্ত্রণালয় এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের সার্বক্ষণিক মনিটরিং সেল চালু করা হয়েছে। জেলা পর্যায়ে কাজ হচ্ছে। অর্থাৎ মন্ত্রণালয়, পানি উন্নয়ন বোর্ড, স্থানীয় প্রশাসন সম্বনিতভাবে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় কাজ করছে। লালমনিরহাট প্রতিনিধি জানান, ভারী বর্ষণ ও উজানের ঢলে লালমনিরহাটে তিস্তার পানি ফের বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে তিস্তা তীরবর্তী প্রায় ৩০ হাজার মানুষ আবারও পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। পানি প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ রাখতে ও ব্যারাজ রক্ষার্থে তিস্তা নদীর মূলস্রোত ধারার সবগুলো জলকপাট খুলে দেয়া হয়েছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, তিস্তা নদীর ডালিয়া পয়েন্টে পানি প্রবাহ বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় জেলার পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম, আঙ্গরপোতা, হাতীবান্ধা উপজেলার সানিয়াজান, গড্ডিমারী, সিন্দুর্না, পাটিকাপাড়া, সিংগিমারী, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, কাকিনা, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, পলাশী ও সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ, রাজপুর, গোকুন্ডা ইউনিয়নের তিস্তা নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল পস্নাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় ৩০ হাজার মানুষ। ডিমলা (নীলফামারী) প্রতিনিধি জানান, নীলফামারীর ডিমলায় তিস্তার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় বন্যাপরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। দিন দিন বেড়েই চলছে পানিবন্দির সংখ্যা। রোববার তিস্তা অববাহিকায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ৩০ হাজার মানুষ। উজানের পাহাড়ি ঢল ও ভারীবর্ষণের ফলে তিস্তার পানি বিপদসীমার ২৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এবং পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। বন্যা ও ভাঙনের কারণে পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। জনপ্রতিনিধিদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী পানিবন্দি হয়ে পড়েছে উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের ৭ হাজার পরিবারের প্রায় ৩০ হাজার মানুষ। শনিবার সন্ধ্যা হতে রোববার সকাল পর্যন্ত তিস্তার পানি বিপদসীমার (৫২ দশমিক ৭৫ সেন্টিমিটার) ১৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও দুপুর থেকে বিকাল পর্যন্ত ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার (৫২ দশমিক ৮৫ সেন্টিমিটার) ২৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তিস্তা ব্যারাজের সবকটি জলকপাট খুলে দিয়েছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড ডালিয়া বিভাগের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র। গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি জানান, জেলার গৌরীপুর উপজেলার ডৌহাখলা ইউনিয়নের মামদিপুর ব্রিজের সামনে বাঁধ দিয়ে পুকুর নির্মাণ করায় এলাকার বাড়িঘরে পানি উঠেছে, তলিয়ে গেছে বীজতলা আর ফিশারির ভেসে গেছে লাখ লাখ টাকার পুকুরের মাছ। এ ঘটনার প্রতিবাদে শনিবার (১১ জুলাই) এলাকাবাসী বিক্ষোভ করেন। তাদের দাবি, পুকুর খনন করে শত বছরের পুরানো ব্রিজের সামনে বাঁধ দেয়ায় শতাধিক পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ক্ষেত্রে তারা ক্ষতিপূরণ দাবি করেছে। কাউনিয়া (রংপুর) প্রতিনিধি জানান, রংপুরের কাউনিয়ায় গত দুদিন আষাঢ়ের অবিরাম বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সার্বিক বন্যাপরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি বেড়ে বিপদসীমার ২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বাড়ছে উপজেলার তিস্তার শাখা নদীতেও। বন্যায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় আড়াই হাজার মানুষ। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার আহসান হাবীব সরকার জানান, গত দুদিন ধরে ভারী বৃষ্টি এবং উজান থেকে ব্যাপক পরিমাণে পাহাড়ি ঢল নামায় বন্যাপরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। উপজেলার টেমামধুপুর ও বালাপাড়া ইউনিয়নের নদীর তীরবর্তী ২০টি গ্রাম বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ৩০০ পরিবারের প্রায় আড়াই হাজার মানুষ। পানিবন্দি মানুষরা তারা সরকারি রাস্তা, উঁচুস্থানে আশ্রয় নিয়েছে। ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি জানান, দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে কয়েক দিনের টানা ভারীবর্ষণে নিম্নাঞ্চল পস্নাবিত হয়েছে। এছাড়া বিপদসীমা ছুঁই ছুঁই করছে শাখা যমুনা নদীর পানি। আবারও ভারী বর্ষণ হলেই বাড়ি-ঘরে পানি প্রবেশ করবে বলে জানান গ্রামবাসীরা। জানা গেছে গত কয়েক দিনের ভারীবর্ষণে উপজেলার খয়েরবাড়ী ইউনিয়নের মহদীপুর লালপুর, শিবনগর ইউনিয়নের পূর্ব রাজারামপুর, ঘাটপাড়া, মৎস্যপাড়া এলাকা পস্নাবিত হয়েছে। মাঠের বর্ষার পানিতে রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়া শুরু করেছে। এদিকে ভারীবর্ষণে নিম্নাঞ্চল পস্নাবিত হওয়ায় বিপাকে পড়েছে মাছ চাষিরা। তারা জানায়, চারদিকে পানি থৈ থৈ করছে যে কোনো সময় তাদের পুকুরের বাঁধ ভেঙে ভেসে যেতে পারে তাদের পুকুরের মাছ। সাঘাটা (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি জানান, টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসায় ব্রহ্মপুত্রের পানি আবারও বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় পাহাড়ি ঢলে গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলায় ব্রহ্মপুত্র ও যমুনা নদীর পানি দ্রম্নত বেড়েই চলেছে। ব্রহ্মপুত্র নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। পানি বৃদ্ধির ফলে উপজেলায় নতুন করে বন্যা দেখা দিয়েছে। এছাড়াও বাঙালি, আলাই, কাটাখালী ও যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। গেল সপ্তাহের বন্যার রেশ কাটতে না কাটতেই আবারও উপজেলার ৩টি ইউনিয়নে বন্যা দেখা দিয়েছে। যমুনা নদীবেষ্টিত সাঘাটা উপজেলার হলদিয়া, পালপাড়া, চিনিরপটল, চকপাড়া, পবনতাইড়, থৈকরপাড়া, বাঁশহাটা, মুন্সিরহাট, গোবিন্দি, নলছিয়াসহ বিভিন্ন গ্রামে বন্যার পানি ঢুকতে শুরু করেছে। উপজেলার বেশ কয়েকটি পয়েন্টে নদী ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। নদ-নদীর পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে স্রোতের তীব্রতাও। এতে ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে নদী ভাঙন। ফলে জনদুর্ভোগ বৃদ্ধি পেয়েছে। ছাতক (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি জানান, সুনামগঞ্জের ছাতকে ভারীবর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ফের সৃষ্টি হওয়া বন্যার চরম অবনতি ঘটেছে। প্রায় দু'সপ্তাহের ব্যবধানে আবারও ছাতক পৌর এলাকাসহ উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম ও হাট-বাজার বন্যায় পস্নাবিত হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় এখানে প্রায় ১৪০মি.মি. বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের দেওয়া তথ্যানুযায়ী সুরমা, চেলা ও পিয়াইন নদীর পানি ছাতক পয়েন্টে বিপদসীমার ১৮০ সে.মি ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন উপজেলার প্রায় ৩ লক্ষাধিক মানুষ। ভারীবর্ষণে সুরমা নদীসহ সব নদ-নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় বন্যাপরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। ইসলামপুর (জামালপুর) সংবাদদাতা জানান, জামালপুর ইসলামপুরে দ্বিতীয় দফায় আবারও বন্যার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। রোববার বিকালে যমুনার পানি বিপদসীমা অতিক্রম করছে। জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের পরিমাপক আব্দুল মান্নান জানান, বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্টে গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনায় পানি বেড়ে বিপদসীমার ৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গত তিন দিন ধরে অব্যাহত বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে পানি বেড়ে বিপদসীমায় চলে এসেছে। অন্যদিকে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি এখনো বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বৃদ্ধির ফলে ১ম দফা বন্যার ধকল সামলে উঠতে না উঠতেই আবারও দ্বিতীয় দফা বন্যা আতঙ্কে রয়েছে বন্যাকবলিত মানুষ। ধর্মপাশা (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি জানান, ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে কারণে সুরমা, ধনু রড়ইয়া, কংস ও বোলাই নদীর পানি বিপদসীমা ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর ফলে অবনতি হয়েছে পরিস্থিতির। সুনামগঞ্জের ধর্মপাশায় আবারও বন্যা দেখা দিয়েছে। পস্নাবিত হয়েছে নতুন নতুন এলাকা। এদিকে নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় উপজেলা সদরের সঙ্গে সবকটি ইউনিয়নের সড়ক যোগাযোগ সম্পূর্ণভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এছাড়াও টানা বর্ষণে উপজেলার প্রায় সবকয়টি হাট-বাজারেও ভিটে সমান পানি উঠে যাওয়ায় ব্যবসা বাণিজ্য বন্ধ হয়ে পড়েছে। লাগামহীন বৃষ্টির কারণে হাওড় এলাকার শ্রমজীবী মানুষ কাজে বেরুতে না পারায় মানবেতর জীবন-যাপন করতে হচ্ছে। গো-খাদ্যসহ নানামুখি সমস্যায় পড়ে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে হাওড়বাসীকে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে