শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

দর্শক খরা থেকে মুক্ত হতে পারছে না দেশের প্রেক্ষাগৃহ

বিনোদন রিপোর্ট
  ২১ জুলাই ২০১৯, ০০:০০
'আব্বাস' ছবির একটি দৃশ্য (বাংলাদেশি)

দর্শক খরা থেকে মুক্ত হতে পারছে না দেশের প্রেক্ষাগৃহ। একমাত্র শাকিব খান ছাড়া অন্য কোনো নায়কের ছবি দেখছে না দর্শক। এমনকি আমদানিকৃত বিদেশি সিনেমাগুলো থেকেও মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে তারা। সবমিলিয়ে আবারও হতাশা বিরাজ করছে সিনেমা হল মালিকদের মনে। ঈদের আগ পর্যন্ত প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির তালিকায় নেই নতুন কোনো দেশি ছবি। আছে কলকাতা থেকে আমদানি করা কয়েকটি ছবি।

গত ঈদে মুক্তি পাওয়া ৩ ছবির মধ্যে শাকিব খানের 'নোলক' ও 'পাসওয়ার্ড' প্রত্যাশা অনুযায়ী ব্যবসা করে। শাকিব খান-বুবলি অভিনীত 'পাসওয়ার্ড' প্রথমে ১৮০টি হলে মুক্তি পায়। এরপর হল সংখ্যা বেড়ে ২০৩টি হলে প্রদর্শিত হয়। নকলের অভিযোগে অভিযুক্ত হওয়ার পরও ছবিটি দেখতে দর্শকের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ করা যায়। অন্যদিকে শাকিববিহীন বাকি ছবি 'আবার বসন্ত' পড়ে যায় ফ্লপের কবলে।

এদিকে ঈদের পর যে ছবিটিই মুক্তি পেয়েছে সেই ছবিটিই দর্শক টানতে ব্যর্থ হয়েছে। দর্শক টানতে কলকাতার একাধিক ছবির সঙ্গে দেশের 'আব্বাস' ছবিটিও মুক্তি দেয়া হয়। নিরব ও সোহানা সাবা জুটির এ ছবিটি ৫ জুলাই ৩৭টি সিনেমা হলে মুক্তি পায়। প্রচারের আগে ছবিটি ব্যাপক আলোচনায় এলেও মুক্তির পর তেমন সাড়া ফেলেনি। কলকাতার একাধিক ছবি মুক্তি পেলেও দর্শক শূন্যতায় ভোগে ছবিগুলো। জুনের শেষ সপ্তাহে মুক্তি পায় 'ভোকাট্টা'। ১২ জুলাই দেশের ৬৫টি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় কলকাতা থেকে আমদানি করা ছবি 'কিডন্যাপ'। ১৯ জুলাই মুক্তি পেয়েছে জিৎ, কোয়েল মলিস্নক ও ঋত্বিকা অভিনীত কলকাতার ছবি 'শেষ থেকে শুরু'।

কলকাতার 'কিডন্যাপ' ও 'শেষ থেকে শুরু' ছবি দুটি আমদানি করেছে শাপলা মিডিয়া। আমদানিকারক মোটামুটি বললেও সিনেমা দুটি নিয়ে বিভিন্ন হলের কর্মকর্তারা খুশি নন। সব মিলিয়ে খরা যাচ্ছে না বলে তারা। মুক্তির আগে ছবি দুটি নিয়ে দর্শকের কিছুটা আগ্রহ দেখা গেলেও শেষ পর্যন্ত গ্রহণ করেননি তারা। রাজধানী ও রাজধানীর বাইরের হলগুলোতেও দর্শক খরা তীব্র।

আমদানি করা ছবি দর্শক না দেখলেও শুধু হল সচল রাখতেই বাধ্য হয়ে ভারতীয় ছবি চালাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন দেশের অধিকাংশ হলমালিকরা। রাজধানীর সবচেয়ে অভিজাত সিনে-থিয়েটার 'স্টার সিনেপেস্নক্স'-এ 'কিডন্যাপ'-এর রীতিমতো ভরাডুবি হয়েছে। সিনেপেস্নক্সের বিপণন বিভাগের জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক মেজবাহ উদ্দিন জানান, কলকাতার ছবির অবস্থা খুব খারাপ। দর্শকশূন্যতায় ভুগতে হয়।

জানা গেছে, ঈদের আগ পর্যন্ত প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির তালিকায় নেই নতুন কোনো দেশি ছবি। আছে কলকাতা থেকে আমদানি করা কয়েটি ছবি।

২৬ জুলাই অঙ্কুশ ও নুসরাত ফারিয়া অভিনীত 'বিবাহ অভিযান', আগামী ২ আগস্ট মুক্তি পাবে সোহম, ওম ও শ্রাবন্তী অভিনীত 'ভূতচক্র'। আমদানি ছবির এমন করুণদশার পরও ছবি আমদানি বন্ধ নেই। শুরুতে মুনাফার আশায় ছবি আমদানি শুরু হলেও এখন দেশীয় ছবি সংকটের কারণে ছবি আমদানি করছেন প্রদর্শকরা। কিন্তু তাতে সিনেমা হলে ছবি সংকট কাটলেও ব্যবসার মান বাড়ছে না। দেশীয় ছবি কালেভদ্রে ব্যবসা করলেও আমদানি ছবি একেবারেই ব্যবসা করতে পারছে না। এই পরিস্থিতিতে প্রদর্শকরা উদ্বিগ্ন। কোনোভাবেই বাজারকে চাঙ্গা করা যাচ্ছে না। দর্শকদের সিনেমা হলে নিয়মিত উপস্থিতি নিশ্চিত করতে চাই তাদের মনের মতো ছবি। কিন্তু জনপ্রিয় হোক আর স্বল্প-পরিচিত হোক, কারো ছবিই চলছে না।

কলকাতার ছবি হলেই মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে দর্শকরা। অথচ এই আমদানি ছবির জন্য প্রদর্শকরা কয়েক বছর ধরেই সমালোচনার শিকার হচ্ছেন। ধর্মঘটের মতো সিদ্ধান্তও মাঝখানে নিয়েছিলেন প্রদর্শকরা। সেই আন্দোলনের ফলেই ভারত থেকে ছবি আমদানির পথ শিথিল হয়েছে- যা আগে ছিল পিচ্ছিল। সবকিছুরই লক্ষ্য ব্যবসা। সেই ব্যবসার মুখ দেখতে না পারায় আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো হতাশ। হতাশ প্রদর্শকরাও। এ পর্যন্ত আমদানিকৃত ছবিগুলোর মধ্যে একটি দুটি ছাড়া কোনো ছবিই ব্যবসা করতে পারেনি। আমদানি ছবিগুলোর মধ্যে এ যাবৎ 'ভাইজান এলো রে' ও 'চালবাজ' অনেকটা ব্যবসা করেছে। সেগুলো ছিল যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত, নানা জটিলতায় পরে আমদানি ছবি হিসেবে মুক্তি পেয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<59077 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1