ছোটবোন ঝুমুর এবং ছোটভাই তমাল দীর্ঘদিন ধরেই অস্ট্রেলিয়ায় বসবাস করার দরুন প্রায় এক যুগেরও বেশি সময় ধরে মাঝে মাঝেই অস্ট্রেলিয়ায় যান শাবনূর। কখনো তিন মাসের জন্য, কখনো বা একমাসের। তবে ২০১০ সালের দিকে ছবির সংখ্যা শূণ্যের কোঠায় গেলে অনেকদিনের জন্য অস্ট্রেলিয়ায় পাড়ি জমান তিনি। ২০১১ সালে মিডিয়াকে আড়াল করে একান্ত গোপনে অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী অনিক মাহমুদকে বিয়ে করে শাবনূর স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। ২০১৩ সালের ২৯ ডিসেম্বর তাদের ছেলের জন্ম হয়। আর তখনই মিডিয়াকে বিয়ে এবং সন্তানের খবর জানিয়ে আবার দেশে এসে চলচ্চিত্রে প্রত্যাবর্তন করেন তিনি। দুই-একটি ছবিও হাতে নেন। এমনকি পরিচালনায় নামারও ঘোষণা দেন। এ জন্য পরিচালক সমিতির তালিকাভুক্ত সদস্য হওয়ার পাশাপাশি পরিচালনার কোর্সও সম্পন্ন করেন এই তারকা। শুধু তাই নয়, শরীরের ওজন কমানোর জন্য নিয়মিত জিমেও যাওয়া-আসা শুরু করেন।
কিন্তু যে আশা নিয়ে দেশে এবং চলচ্চিত্রে ফেরেন, তা যে নিরাশায় পরিণত হয়। চলচ্চিত্রের মন্দা পরিবেশ এবং নিজের ওজন কমাতে না পারায় নতুন কোনো ছবির প্রস্তাব না পাওয়ায় অনেকটা হতাশ হয়ে পড়েন তিনি। অবশেষে আগের মতই কাউকে না জানিয়ে সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ায় চলে যান তিনি। চলচ্চিত্র-সংশ্লিষ্ট কয়েকটি সূত্র এবং শাবনূরের কাছের মানুষদের কাছে জানা গেল, ক্যারিয়ার গুটিয়ে এখন থেকে অস্ট্রেলিয়াতেই বাকি জীবন কাটিয়ে দেবেন।
যদিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শাবনূর জানান, ব্যক্তি ও পরিবারিক জীবনটাকে কীভাবে আরও সুন্দরভাবে গুছিয়ে নেয়া যায়, সেদিকেই এখন মনোযোগী তিনি। একমাত্র ছেলে আইজান নেহানের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে সম্প্রতি তিনি অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে গেছেন। সেখানে তার ছেলের স্কুলে ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন করে মাস-তিনেক পর দেশে ফিরবেন। বর্তমানে সেখানে স্বামী-সন্তান নিয়ে বেশ সুখেই আছেন বলে জানিয়েছেন এই নায়িকা।
কিন্তু শাবনূর ফিরলেও আদৌ চলচ্চিত্রে ফিরবেন কিনা- এ নিয়ে নিশ্চিত করে কেউ বলতে পারছেন না। শাবনূর সর্বশেষ মোস্তাফিজুর রহমান মানিকের 'এতো প্রেম এতো মায়া' নামে একটি চলচ্চিত্রে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন। যদিও এখনো ছবিটির শুটিং শেষ হয়নি। নব্বই দশকের নায়িকা শাবনূর সর্বশেষ ক্যামেরার সামনে এসেছিলেন ২০১৫ সালে। ছবির নাম 'পাগল মানুষ'। এতে তার বিপরীতে অভিনয় করেছেন নবাগত শাহেদ চৌধুরী।
প্রখ্যাত পরিচালক এহতেশামের 'চাঁদনী রাতে' চলচ্চিত্রের মধ্য দিয়ে বড়পর্দায় অভিষেক হয় শাবনূরের। ২০০৫ সালে মোস্তাফিজুর রহমান মানিকের 'দুই নয়নের আলো' চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান তিনি।