শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

কথিত 'স্বাস্থ্যবিধি'তে আপত্তি টিভি তারকাদের

বিনোদন রিপোর্ট
  ০৪ জুলাই ২০২০, ০০:০০

'মুখে মাস্ক, হাতে গস্নাভস তথা স্বাস্থ্যবিধি মেনে কখনোই স্বস্তির সঙ্গে শুটিং করা সম্ভব নয়'- শুরু থেকেই এমন মন্তব্য শোনা যাচ্ছে সবার মুখে। এ কারণে অনেক শীর্ষস্থানীয় তারকাই নিজেকে বিরত রেখেছেন শুটিং থেকে। আর যারা অনুরোধে কিংবা আর্থিক চাহিদা মেটাতে শুটিংয়ে অংশ নিচ্ছেন, তাদের মাঝে দেখা দিয়েছে নানা রকম বিপত্তি। অনেকে কথিত এই স্বাস্থ্যবিধির বিরুদ্ধে আপত্তিও জানিয়েছেন। বিরক্তিতে শুটিং স্পট থেকে বেরিয়ে এসেছেন অনেক তারকা এমন ঘটনাও ঘটছে। দেখা গেছে লাইটম্যানের হাতে গস্নাভস আছে, মুখে মাস্ক নেই। নিজেদের মধ্যে কথা হচ্ছে, তবে দূরত্ব বজায় থাকছে না। স্প্রে করার কথা ছিল, কিন্তু নিয়ম মেনে সেটাও হচ্ছে না। অভিনয় শিল্পীদের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মানার প্রবণতা থাকলেও তার ছিটেফোঁটাও নেই কলাকুশলীদের মধ্যে। ফলে কোনো কোনো তারকা শুটিং করতে গিয়ে ফিরে আসছেন। কেউ ক্ষোভ প্রকাশ করছেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।

দুই পর্দার দর্শকপ্রিয় অভিনেত্রী অপর্ণা ঘোষ। স্বাস্থ্যবিধি মেনে শুটিং শুরু করেছিলেন তিনি। কিন্তু একদিন শুটিং করার পর আপাতত আর শুটিং না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এই অভিনেত্রী। অপর্ণার মতে, 'আমি একদিন শুটিং করেছি। শুটিং করতে গিয়ে যা দেখেছি, তাতে আমার নিরাপদ মনে হয়নি। স্বাস্থ্য নিরাপত্তা দেওয়া হচ্ছে, তারপরও শিল্পীদের কিছুটা ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে। বারবার মেকআপ নেওয়া, নাটকের ঘটনা তুলে ধরতে এটা-ওটা হতে নেওয়া, সহশিল্পীদের কাছাকাছি যাওয়াসহ এমন অনেক কাজ করতে হচ্ছে, যার মাধ্যমে করোনাভাইরাস ছড়াতে পারে।'

এই পরিস্থিতিতে শুটিংয়ে অংশ নেওয়াটা অপর্ণার কাছ যথেষ্ট ভয়ের উলেস্নখ করে অপর্ণা বলেন, 'ভয় পাচ্ছি। কারণ করোনার আক্রমণ থেমে যায়নি। দিন দিন বাড়ছেই। আর আমার শ্বাসকষ্ট আছে, শুটিং করা ঝুঁঁকিপূর্ণ। তারপরও একদিন শুটিং করেছি। এখন মনে হয়েছে এভাবে কাজ করা ঠিক হবে না।'

শুটিং করতে গিয়ে নাখোশ হয়েছেন নির্মাতা অমিতাভ রেজা চৌধুরীও। তিনি বলেন, 'শুটিং না করার সুযোগ থাকলে আমি তাই করতাম। আরও ছয়মাস শুয়ে বসে খেতাম। কিন্তু গত দুই দশকের নির্মাণ ক্যারিয়ারে আমার চারপাশজুড়ে অসংখ্য ঘরবাড়ি-গাছপালা জন্মেছে। যাদের দায়-দায়িত্ব আমার প্রতিষ্ঠান হাফ স্টপ ডাউন-এর। তো এখন যদি শুটিং না করি, ওদের বেতন আর টানতে পারব না। জমানো টাকা শেষ। এখন সব ছাঁটাই করতে হবে। সেটা তো সম্ভব না। সমাধানও না। তাই মনের বিরুদ্ধে হলেও কাজ শুরু করেছি। কিন্তু এভাবে তো কাজ করা কঠিন। শুটিংয়ে গিয়ে করোনা আতঙ্কে থাকব, নাকি প্রাণখুলে দৃশ্যধারণ করব! তাও আবার ইনডোর শুটিংয়েই এই অভিজ্ঞতা। আউটডোরে কী করব, জানি না।'

শর্তসাপেক্ষ শুটিং শুরু হওয়ার পর একাধিক নাটকের কাজ সম্পন্ন করেছেন অভিনেতা সাজু খাদেম। তার মতে, 'স্বাস্থ্যবিধি মেনে পুরোপুরি কাজ করা অসম্ভব। সেটের সবাই চেষ্টা করছে কিন্তু আর কতদিন? আমরা অত্যন্ত ঝুঁকির মধ্যে কাজ করছি। সত্যি কথা বলতে কাজ না করেই এখন আর উপায় কী? তাছাড়া স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে মানুষ কতটা সতর্ক সেটা নিয়েও আমার প্রশ্ন আছে।'

স্বাস্থ্যবিধি মেনে কাজ করলেও শুটিং বাড়ি গুলোতে প্রাণ নেই বলে অস্বস্তির কথা জানিয়েছেন আলোচিত অভিনেত্রী অর্ষা রহমান। তিনি বলেন, 'মার্চ মাসের আটকে থাকা নাটকের কাজগুলোই এখন করছি। গল্পের কারণে অল্পসংখ্যক শিল্পী নিয়েও কাজ করা যাচ্ছে না। তাছাড়া শুটিং সেটগুলোতে কেমন জানি একটা পরিবেশ। কেউ মনখুলে কারও সঙ্গে কথা বলতে পারছে না। শট শেষে একেকজন একেক জায়গায় বসে থাকছে। কেউ আবার শট শেষ করেই নিজের গাড়িতে চলে যাচ্ছে। সত্যিই এভাবে কাজ করে কোনো আনন্দ নেই।'

তিনি আরও বলেন, 'আমি এখন বাসা থেকে খাবারসহ প্রয়োজনীয় সব কিছু নিয়ে যাচ্ছি। এমনটি পানির বোতল, পেস্নট ও মগও সঙ্গে করে নিয়ে যাচ্ছি। সত্যিকার অর্থেই অদ্ভুত একটি পরিবেশের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি।'

ছোট পর্দার আরেক অভিনেতা সিদ্দিকুর রহমান জানান, 'একটি টিভি চ্যানেলের সঙ্গে আগে থেকে চুক্তিবদ্ধ থাকায় একটি নাটকের কাজ করেছি। তাছাড়া করোনাকালে আমার কাজ করার কোনো ইচ্ছে ছিল না। আপতত আর কোনো কাজ করছি না। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ঈদের কাজ করব। তাছাড়া আমাদের শুটিং বাড়িগুলোর যা পরিবেশ, তাতে কাজ করার ভরসা পাচ্ছি না।'

এছাড়া খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, একই পরিস্থিতিতে রয়েছেন অভিনেত্রী নাদিয়া, ঊর্মিলা শ্রাবন্তী করসহ আরও অনেক অভিনয়শিল্পী।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<104687 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1