শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
সমাজবিজ্ঞান দ্বিতীয়পত্র

এইচএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতি

রোজিনা আক্তার, শিক্ষক, ক্যামব্রিয়ান স্কুল অ্যান্ড কলেজ, সিরাজগঞ্জ য়
  ০২ এপ্রিল ২০২০, ০০:০০
শিল্পায়ন

৪. গত বছর সাইফুলের বড় ভাই মারা যাওয়ায় বড় ভাইয়ের বিধবা স্ত্রীকে সাইফুল বিয়ে করে। বড় ভাই আগে তার স্ত্রীকে নিয়ে মা-বাবা ও ভাইবোনের সঙ্গে গ্রামের বাড়িতে একসঙ্গে থাকত। কিন্তু সাইফুল চট্টগ্রাম শহরে চাকরি করায় সে স্ত্রীকে চট্টগ্রাম শহরে নিয়ে আসে। স্বামী-স্ত্রী দুজনের পরিবারে তারা নতুন জীবন শুরু করেছে।

প্রশ্ন: ক. মাতৃসূত্রীয় পরিবার কী?

প্রশ্ন: খ. বিবাহ একটি গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক প্রতিষ্ঠান- ব্যাখ্যা কর।

প্রশ্ন: গ. উদ্দীপকে সাইফুলের বিবাহের ধরন নির্ণয় কর।

প্রশ্ন: ঘ. উদ্দীপকের আলোকে বাংলাদেশের পরিবারের ধরন কাঠামোতে কী ধরনের পরিবর্তন হচ্ছে বলে তুমি মনে কর?

উত্তর-ক: যে পরিবারের সন্তানরা মায়ের দিক থেকে সম্পত্তি ও বংশমর্যাদা উত্তরাধিকার সূত্রে লাভ করে তা-ই মাতৃসূত্রীয় পরিবার। বাংলাদেশে গারো সমাজে এ ধরনের পরিবার দেখা যায়।

উত্তর-খ: বিবাহ হলো নারী-পুরুষের মধ্যে সমাজস্বীকৃত বন্ধন। কতগুলো নিয়ম-নীতি ও আচার-অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এ বন্ধন তৈরি হয়, যার ভিত্তিতে পরিবার গড়ে ওঠে। এ বন্ধন ছাড়া পরিবার গঠন করা যায় না। বিবাহের মাধ্যমে সন্তানের বৈধতা দান, নতুন সম্পর্ক স্থাপন, সম্পত্তির উত্তরাধিকার নির্ণয়সহ নানা বিষয় নির্ধারিত হয়। এসব বিবেচনায় বিবাহ অবশ্যই একটি গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক প্রতিষ্ঠান।

উত্তর-গ: সাইফুলের বিবাহ হলো লেভিরেট বিবাহ। কোনো মহিলার স্বামী মারা গেলে মৃত স্বামীর ভাইয়ের সঙ্গে বিবাহকে লেভিরেট বিবাহ বলে। এ ধরনের বিবাহকে দেবর বিবাহও বলা হয়। বাংলাদেশসহ অনেক সমাজে এ ধরনের বিবাহ দেখা যায়। সাধারণত আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখা, সন্তানদের নিরাপত্তা, সম্পত্তি নিজেদের মধ্যে রাখা ইত্যাদি কারণে সমাজে এ ধরনের বিবাহ প্রচলিত। কেননা বিধবা মহিলার অন্য কোথাও বিয়ে হলে সন্তানরা যেমন অভিভাবকহীন হয়ে যাবে, তেমনি সম্পত্তিও হাতছাড়া হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। একই সঙ্গে মানবিক কারণেও এ ধরনের বিয়ে হয়ে থাকে। উদ্দীপকে সাইফুল তার মৃত ভাইয়ের বিধবা স্ত্রীকে বিয়ে করেছে বিধায় তার বিয়ে লেভিরেট বিবাহ।

উত্তর-ঘ: বাংলাদেশে যৌথ পরিবার ভেঙে অণু পরিবার গড়ে উঠছে। নানা আর্থ-সামাজিক কারণে পরিবারের ধরন কাঠামোতে এ ধরনের পরিবর্তন সূচিত হচ্ছে। স্থানান্তর গমন ছাড়াও আধুনিক শিক্ষার প্রসার, ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যবাদী দৃষ্টিভঙ্গি, পারিবারিক কলহ ও দ্বন্দ্ব-সংঘাত, আর্থিক অনটন প্রভৃতি কারণে পরিবারের ধরন-কাঠামোতে পরিবর্তন অর্থাৎ যৌথ পরিবার ভেঙে অণু পরিবার গড়ে উঠছে। একই কারণে নয়াবাস পরিবারের সংখ্যাও বৃদ্ধি পাচ্ছে।

যৌথ পরিবার ভেঙে যাওয়ার পেছনে আরেকটি বড় কারণ হলো মানুষের শ্রম বিভাজন। আগে গ্রামীণ সমাজে পরিবারের সবাই একসঙ্গে কৃষিকাজ কিংবা কুটিরশিল্পে কাজ করত। কিন্তু এর পরিবর্তে এখন মানুষ শহরের বড় বড় কল-কারখানায় কাজ করছে। তাই চাইলেও একসঙ্গে যৌথ পরিবারে থাকতে পারছে না। জীবন ও জীবিকার তাগিদে তাকে অণুপরিবার গড়ে তুলতে হচ্ছে। যৌথ পরিবার ভেঙে যাওয়ার পেছনে পারিবারিক কলহ ও আর্থিক অনটন কম দায়ী নয়। যৌথ পরিবারে মানুষ বেশি হওয়ায় অনেক সময় আর্থিক অনটন ও দ্বন্দ্ব-সংঘাত লেগে থাকে। ফলে এ থেকে বাঁচার জন্য অনেক সময় যৌথ পরিবার ভেঙে অণু পরিবার তৈরি হয়। উদ্দীপকে দেখা যাচ্ছে, আগে সাইফুলের বড় ভাই গ্রামে থাকত বিধায় তার স্ত্রীও গ্রামে সবার সঙ্গে যৌথ পরিবারে থাকত। সাইফুল শহরে চাকরি করার কারণে তার স্ত্রীকেও শহরে নিয়ে আসে। ফলে আগের যৌথ পরিবার ভেঙে অণু পরিবার গড়ে ওঠে।

৫. সামাদ মিয়া গ্রামের কৃষক। তিনি ভালো ফসল ফলানোর জন্য আগে গ্রাম থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে কৃষি অফিসে গিয়ে নানা পরামর্শ নিতেন। কিন্তু এখন তিনি অফিসে না গিয়েও মোবাইল ফোনের মাধ্যমেই পরামর্শ নিতে পারেন। একইভাবে তিনি ফসল রোপণ ও কাটার ক্ষেত্রেও আধুনিক উপাদান ব্যবহার করছেন। এতে তার উৎপাদন বেড়ে আর্থিক উন্নতি সাধিত হচ্ছে।

প্রশ্ন: ক. শিল্পায়ন কী?

প্রশ্ন: খ. 'নগরায়ণ ও শিল্পায়ন একে অপরের পরিপূরক', ব্যাখ্যা কর।

প্রশ্ন: গ. উদ্দীপকটি পড়ে বাংলাদেশের সামাজিক পরিবর্তনের ক্ষেত্রে কোন উপাদানের প্রভাবকে তুমি চিহ্নিত করবে?

প্রশ্ন: ঘ. বাংলাদেশের সামাজিক পরিবর্তনের ক্ষেত্রে অন্যান্য উপাদানের চেয়ে নির্দেশিত উপাদানটির প্রভাব বৃদ্ধি পাচ্ছে। তুমি কি এর সঙ্গে একমত?

উত্তর-ক: শিল্পায়ন বলতে এমন একটি প্রক্রিয়াকে বোঝানো হয়, যেখানে ক্ষুদ্র ও হস্তচালিত উৎপাদনের পরিবর্তে যন্ত্র ও শক্তিচালিত কলকারখানায় উৎপাদন হয়। এ প্রক্রিয়ার যান্ত্রিক পদ্ধতিতে অকৃষিজ পণ্য উৎপাদন হয়।

উত্তর-খ: নগরায়ণ ও শিল্পায়ন একটি অন্যটিকে গতিশীল করে। যেখানে নগরায়ণ হয়, সেখানে শিল্পায়নও হয়। আবার যেখানে শিল্পায়ন হয়, সেখানে নগরায়ণও হয়। বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও বিষয়টি প্রযোজ্য। নগরায়ণ ও শিল্পায়ন একে অন্যকে ত্বরান্বিত করে বিধায় বলা হয় এরা একে অন্যের পরিপূরক।

উত্তর-গ: উদ্দীপকটি পড়ে বাংলাদেশের সামাজিক পরিবর্তনের ক্ষেত্রে তথ্য ও প্রযুক্তির প্রভাবকে চিহ্নিত করা যায়। তথ্য ও প্রযুক্তি বলতে সাধারণত তথ্য সংরক্ষণ করা ও একে ব্যবহার করার কৌশলকে বোঝায়। প্রযুক্তি হচ্ছে বিজ্ঞানের ব্যবহারিক ও প্রায়োগিক দিক। বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার, ব্যবহার-সম্পর্কিত তথ্য, প্রয়োগবিধি প্রভৃতি সম্পর্কিত তথ্য পাওয়ার নামই তথ্যপ্রযুক্তি। সব সমাজে আজ তথ্য ও প্রযুক্তি নানা ধরনের পরিবর্তন সূচিত করছে। এই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশে সামাজিক পরিবর্তনে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এর প্রভাবে কৃষি উৎপাদনে এসেছে ব্যাপক পরিবর্তন। এর ফলে কৃষকরা যেমন চাষাবাদ-সম্পর্কিত সঠিক ও প্রয়োজনীয় তথ্য পাচ্ছেন, তেমনি উন্নত জাতের বীজ, সার ও কলাকৌশল ব্যবহার করছেন। ফলে বেড়েছে উৎপাদন।

উদ্দীপকে দেখা যাচ্ছে, মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সামাদ মিয়া চাষাবাদ-সম্পর্কিত নানা তথ্য পাচ্ছেন। এটি সম্ভব হয়েছে তথ্য ও প্রযুক্তির কল্যাণে। তাই উদ্দীপকে বাংলাদেশের সামাজিক পরিবর্তনের ক্ষেত্রে তথ্য ও প্রযুক্তির প্রভাব স্পষ্ট।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<94897 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1