বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

এসএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতি (বাংলা দ্বিতীয় পত্র)

মো. ইমরান হোসেন, সহকারী শিক্ষক ইস্টার্ন ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ, দনিয়া, ঢাকা য়
  ২৩ জানুয়ারি ২০২০, ০০:০০
অঙ্কটা বুঝিয়ে দাও

প্রিয় শিক্ষার্থী, আজ বাংলা দ্বিতীয় পত্র থেকে প্রশ্নোত্তর নিয়ে আলোচনা করা হলো

সাধারণ ভবিষ্যৎ কালের বিশিষ্ট প্রয়োগ

* আক্ষেপ প্রকাশে অতীতের স্থলে ভবিষ্যৎ কাল ব্যবহার হয়। যেমন : কে জানত, আমার ভাগ্য এমন হবে? সেদিন কে জানত যে ইউরোপে আবার মহাযুদ্ধের ভেরি বাজবে?

* অতীত কালের ঘটনা সম্পর্কিত যে ক্রিয়াপদে সন্দেহের ভাব বর্তমান থাকে, তার বর্ণনায় সাধারণ ভবিষ্যৎ কালের ব্যবহার হয়। যেমন : ভাবলাম, তিনি এখন বাড়ি গিয়ে থাকবেন। তোমরা হয়তো 'বিশ্বনবী' পড়ে থাকবে।

ঘটমান ভবিষ্যৎ ক্রিয়ার রূপ

* নাম পুরুষ সাধারণ : -ইতে থাকিবে/-তে থাকবে। (করিতে থাকিবে/করতে থাকবে)।

* নাম পুরুষ ও মধ্যম পুরুষ : -ইতে থাকিবেন/-তে থাকবেন। (করিতে থাকিবেন/করতে থাকবেন)। (সম্ভ্রমাত্মক)

* মধ্যম পুরুষ সাধারণ : -ইতে থাকিবে/-তে থাকবে। (করিতে থাকিবে/করতে থাকবে)।

* মধ্যম পুরুষ তুচ্ছার্থক : -ইতে থাকিবি/-তে থাকবি। (করিতে থাকিবি/করতে থাকবি)।

* উত্তম পুরুষ : -ইতে থাকিব/-তে থাকব। (করিতে থাকিব/করতে থাকব)।

যে কাজ ভবিষ্যৎ কালে চলতে থাকবে তার কালকে ঘটমান ভবিষ্যৎ কাল বলে।

লক্ষ্য করার বিষয়, এখানে মূল ক্রিয়ার সঙ্গে অসমাপিকা ক্রিয়ার -ইতে/-তে বিভক্তি যুক্ত হয় এবং সেই সঙ্গে থাক ধাতুর, সাধারণ ভবিষ্যৎ কালের ক্রিয়াবিভক্তি যুক্ত হয়।

বিশেষ দ্রষ্টব্য বা জ্ঞাতব্য : মূল ধাতুর সঙ্গে ইতে/বিভক্তি যোগে যে অসমাপিকা ক্রিয়া সৃষ্টি হয় তা অপরিবর্তনীয় এবং কোনো কালবাচক নয়। মূল ধাতুর সঙ্গে ভবিষ্যৎ কালের কোনোরূপ ক্রিয়াবিভক্তিই যুক্ত হয় না। অর্থের দিক থেকে ঘটমান ভবিষ্যতের ক্রিয়াপদ সৃষ্টি হয়েছে মনে করা যেতে পারে। রূপের দিক থেকে এগুলো সাধারণ ভবিষ্যতের ক্রিয়ার রূপ মাত্র। তাই অনেকে ঘটমান ভবিষ্যতের ক্রিয়াপদের রূপ আছে বলে স্বীকার করেন না।

পুরাঘটিত ভবিষ্যৎ ক্রিয়ার রূপ

যে ক্রিয়া সম্ভবত ঘটে গিয়েছে, সাধারণ ভবিষ্যৎ কালবোধক শব্দ ব্যবহার করে তা বোঝাতে পুরাঘটিত ভবিষ্যৎ কাল হয়।

পুরাঘটিত ভবিষ্যৎ কালের অর্থ প্রকাশের জন্য মূল ধাতুর সঙ্গে অসমাপিকা ক্রিয়াবিভক্তি ইয়া/এ যোগ করে এবং যাক্‌ ও গম্‌ ধাতুর সঙ্গে সাধারণ ভবিষ্যতের ক্রিয়াবিভক্তি যুক্ত করে যৌগিক ক্রিয়াপদ তৈরি হয়। যেমন : গিয়ে থাকব/যাইয়া থাকিব।

অনুজ্ঞা পদ

ক) কাল একবার এসো।

খ) তুই বাড়ি যা।

গ) ক্ষমা কর মোর অপরাধ।

ওপরের বাক্যগুলোর প্রথম বাক্যে অনুরোধ, দ্বিতীয় বাক্যে আদেশ এবং তৃতীয় বাক্যে প্রার্থনা বোঝাচ্ছে। আদেশ, অনুরোধ, অনুমতি, প্রার্থনা, অনুনয় প্রভৃতি অর্থে বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ কালে মধ্যম পুরুষে ক্রিয়াপদের যেরূপ হয় তাকে অনুজ্ঞা পদ বলে।

অনুজ্ঞা পদের গঠন

১. মধ্যম পুরুষের তুচ্ছার্থক বা ঘনিষ্ঠার্থক সর্বনামের অনুজ্ঞায় ক্রিয়াপদে কোনো বিভক্তি যোগ হয় না। মূল ধাতুটিই ক্রিয়াপদরূপে ব্যবহৃত হয়। যেমন : মধ্যম পুরুষ তুচ্ছার্থক বা ঘনিষ্ঠার্থক তুই (বই) পড়। তোরা (বই) পড়। কিন্তু অনুরোধ, আদেশ বা অনুরূপ অর্থে সম্ভ্রমাত্মক মধ্যম পুরুষের সর্বনাম 'আপনি' বা 'আপনারা' এবং সাধারণ মধ্যম পুরুষের সর্বনাম 'তুমি' বা 'তোমরা' পদের সঙ্গে যে অনুজ্ঞা পদের ব্যবহার হয় তাতে বিভক্তি যুক্ত থাকে। যেমন :

ক) সম্ভ্রমাত্মক মধ্যম পুরুষ- আপনি (আপনারা) আসুন (আস্‌+উন)

খ) সাধারণ মধ্যম পুরুষ- তুমি (তোমরা) আস (আস্‌+অ)

২. প্রাচীন বাংলা রীতিতে মধ্যম পুরুষের অনুজ্ঞায় ক্রিয়ার সঙ্গে 'হ' যোগ করার নিয়ম ছিল। এই 'হ' বর্তমানে অ, ও-তে রূপান্তরিত হয়েছে। যেমন :

ক) করহ [=কর] আপন কাজ, তাতে কিবা ভয় লাজ।

খ) অধম সন্তানের মাগো দেহ [দাও] পদচ্ছায়া।

৩. ক) উত্তম পুরুষের অনুজ্ঞা পদ হতে পারে না। কারণ কেউ নিজেকে আদেশ করতে পারে না।

খ) অপ্রত্যক্ষ বলে নাম পুরুষের অনুজ্ঞা হয় না। তবে এই মত সবাই সমর্থন করেন না।

জ্ঞাতব্য

ক) নির্দেশক ভাবের সাধারণ বর্তমান কালের সম্ভ্রমাত্মক মধ্যম পুরুষের বিভক্তি - এন। যেমন : আপনি দেখেন।

সম্ভ্রমাত্মক মধ্যম পুরুষের অনুজ্ঞা পদের বিভক্তি - 'উন'। যেমন : আপনারা দেখুন।

খ) চলতি ভাষায় ধাতুর মূল স্বর এ-কারান্ত বা ও-কারান্ত হলে উক্ত পার্থক্য লোপ পায়। যেমন : নাই, লন, নিন<লউন, লোন।

গ) মধ্যম ও নাম পুরুষে ভবিষ্যৎ কালের অনুজ্ঞার রূপ।

ধরন সর্বনাম বিভক্তি ক্রিয়াপদ

সম্ভ্রমাত্মক আপনি, আপনারা, -ইবেন - বেন করিবেন (সাধু), করবেন (চলিত)

\হতিনি, তারা

সাধারণ তুমি, তোমরা - ইও -ও করিও (সাধু), করো (চলিত)

তুচ্ছার্থক/ ঘনিষ্ঠার্থক তুই, তোরা -ইস -স করিস, খাইস, খাস

সাধারণ সে, তারা - ইবে -বে করিবে করবে

ঘটমান বর্তমান অনুজ্ঞা ও ঘটমান ভবিষ্যৎ অনুজ্ঞা

মূল ক্রিয়াপদের সঙ্গে -ইতে/-তে বিভক্তি যুক্ত হয়ে অসমাপিকা ক্রিয়াপদ গঠন করা যায়। এ অসমাপিকা ক্রিয়াপদ এবং থাক্‌ ধাতুর সঙ্গে (সাধারণ) বর্তমান অনুজ্ঞার বিভক্তি যুক্ত করে যে ক্রিয়াপদ হয়, উভয়ে মিলে যৌগিক ক্রিয়া উৎপন্ন করে। এ যৌগিক ক্রিয়া ঘটমান বর্তমান অনুজ্ঞার অর্থ প্রকাশ করে। যেমন :

(সে)-ইতে/ -তে+-উক : করিতে/করতে থাকুক

(তিনি/আপনি) -ইতে/-তে+উন : করিতে/ করতে থাকুন

(তুমি)-ইতে/-তে+-অ-ও : করিতে/ করতে থাক/থাকো

(তুই)-ইতে/-তে+-অ-ও : করিতে/করতে থাক্‌

মূল ধাতুর সঙ্গে অসমাপিকা ক্রিয়াবিভক্তি-ইতে/-তে যুক্ত হয়; এরূপ বিভক্তিযুক্ত অসমাপিকা ক্রিয়া সর্বদা অপরিবর্তিত অবস্থায় থাকে। এই অসমাপিকা ক্রিয়া এবং সাধারণ বর্তমানের অনুজ্ঞার ক্রিয়াবিভক্তিযুক্ত থাক্‌ ধাতু (ঘটমান বর্তমান অনুজ্ঞার) মিলে যৌগিক ক্রিয়া উৎপন্ন করে। এই যৌগিক ক্রিয়া ঘটমান বর্তমান অনুজ্ঞার অর্থ প্রকাশ করে।

থাক্‌ ধাতুর সঙ্গে যুক্ত ক্রিয়াবিভক্তিগুলোই অনুজ্ঞা অর্থ প্রকাশ করে। মূল ক্রিয়া থেকে উৎপন্ন অসমাপিকা ক্রিয়াটি ঘটমানতা প্রকাশে সাহায্য করে।

ক) বর্তমান কাল

আদেশ : কাজটি করে ফেল। তোমরা এখন যাও।

উপদেশ : সত্য গোপন করো না। কড়া রোদে ঘোরাফেরা করিস না। 'পাতিস নে শিলাতলে পদ্মপাতা'।

অনুরোধ : আমার কাজটি এখন কর। অঙ্কটা বুঝিয়ে দাও না।

প্রার্থনা : আমার দরখাস্তটা পড়ুন।

অভিশাপ : মর, পাপিষ্ঠ

খ) ভবিষ্যৎ কালের অনুজ্ঞা

আদেশে : সদা সত্য বলবে।

সম্ভাবনায় : চেষ্টা কর, সবই বুঝতে পারবে।

বিধান অর্থে : রোগ হলে ওষুধ খাবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<85507 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1