শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

এসএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতি (বাংলা দ্বিতীয় পত্র)

মো. ইমরান হোসেন, সহকারী শিক্ষক ইস্টার্ন ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ, দনিয়া, ঢাকা য়
  ১৬ জানুয়ারি ২০২০, ০০:০০
শীতকালে কুয়াশা পড়ে

প্রিয় শিক্ষার্থী, আজ বাংলা দ্বিতীয় পত্র থেকে প্রশ্নোত্তর নিয়ে আলোচনা করা হলো

একই পদের বিশেষ্য ও বিশেষণ রূপে প্রয়োগ

বাংলা ভাষায় একই পদ বিশেষ্য ও বিশেষণ রূপে ব্যবহৃত হতে পারে। যেমন :

৫. শীত

বিশেষণরূপে- শীতকালে কুয়াশা পড়ে।

বিশেষ্যরূপে- শীতের সকালে চারদিক কুয়াশায় অন্ধকার।

৬. সত্য

বিশেষণরূপে- সত্য পথে থেকে সত্য কথা বল।

বিশেষ্যরূপে- এ এক বিরাট সত্য।

অব্যয় পদের সংজ্ঞা ও প্রকরণ

ন ব্যয়=অব্যয়। যার ব্যয় বা পরিবর্তন হয় না অর্থাৎ যা অপরিবর্তনীয় শব্দ তাই অব্যয়। অব্যয় শব্দের সঙ্গে কোনো বিভক্তিচিহ্ন যুক্ত হয় না, সেগুলোর একবচন বা বহুবচন হয় না এবং সেগুলোর স্ত্রী ও পুরুষবাচকতা নির্ণয় করা যায় না। যে পদ সর্বদা অপরিবর্তনীয় থেকে কখনো বাক্যের শোভা বর্ধন করে, কখনো একাধিক পদের, বাক্যাংশের বা বাক্যের সংযোগ বা বিয়োগ সম্পর্ক ঘটায় তাকে অব্যয় পদ বলে। উৎস বা উৎপত্তি অনুসারে বাংলা ভাষায় তিন প্রকার অব্যয় শব্দ/পদ রয়েছে। যেমন :

১. বাংলা অব্যয় শব্দ : আর, আবার, ও, হঁ্যা, না ইত্যাদি।

২. তৎসম অব্যয় শব্দ : যদি, যথা, সদা, সহসা, হঠাৎ, অর্থাৎ, দৈবাৎ, বরং, পুনশ্চ, আপাতত, বস্তুত ইত্যাদি। 'এবং' ও 'সুতরাং' তৎসম শব্দ হলেও বাংলায় এগুলোর অর্থ পরিবর্তিত হয়েছে। সংস্কৃতে 'এবং' শব্দের অর্থ এমন, আর 'সুতরাং' অর্থ অত্যন্ত, অবশ্য। কিন্তু=ও (বাংলা), সুতরাং=অতএব (বাংলা)

৩. বিদেশি অব্যয় শব্দ : আলবত, বহুত, খুব, শাবান, খাসা, মাইরি, মারহাবা ইত্যাদি।

ব্যবহার অনুসারে অব্যয় প্রধানত চার প্রকার। যেমন :

১. সমুচ্চয়ী অব্যয় (সংযোজক, বিয়োজক, সংকোচক)

২. অনন্বয়ী অব্যয়

৩. অনুসর্গ (বিভক্তিসূচক, বিভক্তিসম)

৪. অনুকার বা ধ্বন্যাত্মক অব্যয়

বিবিধ উপায়ে গঠিত অব্যয় শব্দ

১. একাধিক অব্যয় শব্দযোগে : কদাপি, নতুবা, অতএব, অথবা ইত্যাদি।

২. আনন্দ বা দুঃখ প্রকাশক একই শব্দের দুবার প্রয়োগে : ছি ছি, ধিক্‌ ধিক্‌ বেশ ইত্যাদি।

৩. দুটি ভিন্ন শব্দযোগে : মোটকথা, হয়তো, যেহেতু, নইলে

৪. অনুকার শব্দযোগে : কুহু কুহু, গুন গুন, ঘেউ ঘেউ, শন শন, ছল ছল, কন কন ইত্যাদি।

সমুচ্চয়ী অব্যয়

যে অব্যয় পদ একটি বাক্যের সঙ্গে অন্য একটি বাক্যের অথবা বাক্যস্থিত একটি পদের সঙ্গে অন্য একটি পদের সংযোজন, বিয়োজন বা সংকোচন ঘটায় তাকে সমুচ্চয়ী অব্যয় বা সম্বন্ধবাচক অব্যয় বলে।

ক) সংযোজক অব্যয়

১. উচ্চপদ ও সামাজিক মর্যাদা সকলেই চায়। এখানে 'ও' অব্যয়টি বাক্যস্থিত দুটি পদের সংযোজন করছে।

২. তিনি সৎ, তাই সকলেই তাকে শ্রদ্ধা করে। এখানে 'তাই' অব্যয়টি দুটি বাক্যের সংযোজন ঘটাচ্ছে।

আর, অধিকন্তু, সুতরাং শব্দগুলোও সংযোজক অব্যয়।

খ) বিয়োজক অব্যয়

১. হাসেম কিংবা কাসেম এর জন্য দায়ী। এখানে 'কিংবা' অব্যয়টি দুটি পদের (হাসেম এবং কাসেমের) বিয়োগ সম্বন্ধ ঘটাচ্ছে।

২. 'মন্ত্রের সাধন কিংবা শরীর পাতন'। এখানে 'কিংবা' অব্যয়টি দুটি বাক্যাংশের বিয়োজক। আমরা চেষ্টা করেছি বটে কিন্তু কৃতকার্য হতে পারিনি। এখানে 'কিন্তু' অব্যয় দুটি বাক্যের বিয়োজক। বা, অথবা, নতুবা, না হয়, নয় তো শব্দগুলো বিয়োজক অব্যয়।

গ) সংকোচক অব্যয়

তিনি বিদ্বান অথচ সৎ ব্যক্তি নন। এখানে 'অথচ' অব্যয়টি দুটি বাক্যের মধ্যে ভাবের সংকোচ সাধন করেছে। কিন্তু, বরং শব্দগুলোও সংকোচক অব্যয়।

অনুগামী সমুচ্চয়ী অব্যয় : যে, যদি, যদিও, যেন প্রভৃতি কয়েকটি শব্দ সংযোজক অব্যয়ের কাজ করে। তাই তাদের অনুগামী সমুচ্চয়ী অব্যয় বলে। যেমন :

১. তিনি এত পরিশ্রম করেন যে তার স্বাস্থ্যভঙ্গ হওয়ার আশঙ্কা আছে।

২. আজ যদি (শর্তবাচক) পারি, একবার সেখানে যাব।

৩. এভাবে চেষ্টা করবে যেন কৃতকার্য হতে পার।

অনন্বয়ী অব্যয়

যেসব অব্যয় বাক্যের অন্য পদের সঙ্গে কোনো সম্বন্ধ না রেখে স্বাধীনভাবে নানাবিধ ভাব প্রকাশে ব্যবহৃত হয় তাদের অনন্বয়ী অব্যয় বলে। যেমন :

ক) উচ্ছ্বাস প্রকাশে : মরি মরি! কী সুন্দর প্রভাতের রূপ।

খ) স্বীকৃতি বা অস্বীকৃতি জ্ঞাপনে: হঁ্যা, আমি যাব। না, আমি যাব না।

গ) সম্মতি প্রকাশে : আমি আজ আলবত যাব। নিশ্চয়ই পারব।

ঘ) অনুমোদনবাচকতায় : আপনি যখন বলছেন, বেশ তো আমি যাব।

ঙ) সমর্থনসূচক জবাবে : আপনি যা জানেন তা তো ঠিকই বটে।

চ) যন্ত্রণা প্রকাশে : উঃ! পায়ে বড্ড লেগেছে। নাঃ! এ কী অসহ্য।

ছ) ঘৃণা বা বিরক্তি প্রকাশে: ছি ছি! তুমি এত নীচ। কী আপদ! লোকটা যে পিছু ছাড়ে না।

জ) সম্বোধনে : ওগো, আজ তোরা যাস নে ঘরের বাহিরে।

ঝ) সম্ভাবনায়: সংশয়ে সংকল্প সদা টলে, পাছে লোকে কিছু বলে।

ঞ) বাক্যালঙ্কার অব্যয় : কয়েকটি অব্যয় শব্দ নিরর্থকভাবে ব্যবহৃত হয়ে বাক্যের শোভাবর্ধন করে, এদের বাক্যালঙ্কার অব্যয় বলে। যেমন :

১. কত না হারানো স্মৃতি জাগে আজও মনে।

২. হায়রে ভাগ্য, হায়রে লজ্জা, কোথায় সভা, কোথায় সজ্জা।

অনুসর্গ অব্যয়

যেসব অব্যয় শব্দ বিশেষ্য ও সর্বনাম পদের বিভক্তির মতো বসে কারকবাচকতা প্রকাশ করে তাদের অনুসর্গ অব্যয় বলে। যেমন : ওকে দিয়ে এ কাজ হবে না। (দিয়ে অনুসর্গ অব্যয়)। অনুসর্গ অব্যয় 'পদান্বয়ী অব্যয়' নামেও পরিচিত।

অনুসর্গ অব্যয় দুই প্রকার। যেমন : বিভক্তিসূচক অনুসর্গ অব্যয় ও বিভক্তিসম অনুসর্গ অব্যয়

অনুকার অব্যয়

যেসব অব্যয় অব্যক্ত রব, শব্দ বা ধ্বনির অনুকরণে গঠিত হয় তাদের অনুকার বা ধ্বন্যাত্মক অব্যয় বলে। যেমন :

বজ্রের ধ্বনি : কড় কড় মেঘের গর্জন : গুড় গুড় বৃষ্টির তুমুল শব্দ : ঝম ঝম সিংহের গর্জন : গর গর

স্রোতের ধ্বনি : কল কল ঘোড়ার ডাক : চিঁহি চিঁহি বাতাসের গতি : শন শন কাকের ডাক : কা কা

শুষ্ক পাতার শব্দ : মর মর কোকিলের ডাক : কুহু কুহু নুপূরের আওয়াজ: রুম ঝুমচুড়ির শব্দ : টুং টাং

অনুভূতিমূলক অব্যয়ও অনুকার অব্যয়ের শ্রেণিভুক্ত। যেমন : ঝা ঝা (প্রখরতাবাচক), খাখা (শূন্যতাবাচক), কচ কচ, কট কট, টল মল, ঝল মল, চক চক, ছম ছম, টন টন, খট খট ইত্যাদি।

অব্যয় বিশেষণ

কতগুলো অব্যয় বাক্যে ব্যবহৃত হলে নামবিশেষণ, ক্রিয়াবিশেষণ ও বিশেষণীয় বিশেষণের অর্থবাচকতা প্রকাশ করে। এদের অব্যয় বিশেষণ বলা হয়। যেমন :

নামবিশেষণ : অতিভক্তি চোরের লক্ষণ

ভাববিশেষণ : আবার যেতে হবে

ক্রিয়াবিশেষণ : অন্যত্র চলে যায়

নিত্য সম্বন্ধীয় অব্যয়

কতগুলো যুগ্মশব্দ পরস্পরের ওপর নির্ভরশীল সেগুলো নিত্য সম্বন্ধীয় অব্যয়রূপে পরিচিত। যেমন : যেমন, তথা, যত-তত, যখন-তখন, যেমন-তেমন, যেরূপ-সেরূপ ইত্যাদি। যথা ধর্ম তথা জয়। যত গর্জে তত বর্ষে না।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<84520 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1